Monday 01 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিশ্বব্যাপী যুদ্ধের প্রভাবে বেড়েছে শীর্ষ অস্ত্র নির্মাতাদের আয়: সিপ্রি রিপোর্ট 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৩২ | আপডেট: ১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৯:৩৪

বিভিন্ন দেশের মধ্যে চলমান যুদ্ধ বাড়িয়েছে অস্ত্র নির্মাতাদের বার্ষিক আয়। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বব্যাপী চলমান যুদ্ধ ও ভূরাজনৈতিক উত্তেজনার মধ্যে ২০২৪ সালে অস্ত্র উৎপাদকদের আয় রেকর্ড পরিমাণে বেড়েছে বলে জানিয়েছে স্টকহোম ইন্টারন্যাশনাল পিস রিসার্চ ইনস্টিটিউট (সিপ্রি)।

সোমবার (১ ডিসেম্বর) প্রকাশিত নতুন প্রতিবেদনে সংস্থাটি জানায়, বিশ্বের শীর্ষ ১০০ অস্ত্র নির্মাতা প্রতিষ্ঠান গত বছর মোট ৬৭৯ বিলিয়ন ডলার মূল্যের অস্ত্র ও সামরিক সেবা বিক্রি করেছে, যা এখন পর্যন্ত সর্বোচ্চ।

গাজা ও ইউক্রেন যুদ্ধ, আঞ্চলিক উত্তেজনা এবং সামরিক ব্যয়ের ঊর্ধ্বগতির কারণে অস্ত্র বিক্রির আয় ২০২৩ সালের তুলনায় ৫ দশমিক ৯ শতাংশ বেড়েছে। ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক কোম্পানিগুলোই এই বৃদ্ধির বড় অংশের যোগান দিয়েছে। তবে এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলে, বিশেষ করে চীনের সামরিক শিল্পে সংকটের কারণে আয়ের পতন ঘটেছে।

বিজ্ঞাপন

যুক্তরাষ্ট্রের লকহিড মার্টিন, নর্থরপ গ্রুম্যান ও জেনারেল ডায়নামিকস শীর্ষ তালিকায়। ২০২৪ সালে মার্কিন কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত অস্ত্র বিক্রি ৩ দশমিক ৮ শতাংশ বেড়ে ৩৩৪ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়। ৩৯টির মধ্যে ৩০টি মার্কিন কোম্পানিই আয় বৃদ্ধি করেছে।


দক্ষিণ কোরিয়ার এফ-৩৫এ যুদ্ধবিমানের সঙ্গে উড়ছে মার্কিন বিমান বাহিনীর একটি বি-৫২এইচ বোমারু বিমান।

প্রথমবারের মতো শীর্ষ ১০০ তালিকায় প্রবেশ করেছে ইলন মাস্কের স্পেসএক্স। কোম্পানিটির সামরিক রাজস্ব এক বছরে দ্বিগুণেরও বেশি বেড়ে ১ দশমিক ৮ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে।

তবে সিপ্রি জানায়, এফ-৩৫ যুদ্ধবিমান, কলাম্বিয়া ও ভার্জিনিয়া-শ্রেণির সাবমেরিন এবং সেন্টিনেল আইসিবিএমের মতো গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পে দেরি ও বাজেট বাড়ার সমস্যা থেকেই গেছে।

রাশিয়া বাদে ইউরোপের ২৬টি কোম্পানি শীর্ষ ১০০-তে স্থান পেয়েছে; যার মধ্যে ২৩টির রাজস্ব বেড়েছে। ২০২৪ সালে ইউরোপের মোট অস্ত্র বিক্রি ১৩ শতাংশ বেড়ে ১৫১ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

ইউক্রেনের জন্য গোলাবারুদ উৎপাদন বাড়ানোর ফলে চেক রিপাবলিকের চেকোস্লোভাক গ্রুপের আয় ১৯৩ শতাংশ বেড়ে ৩ দশমিক ৬ বিলিয়ন ডলারে ওঠে, যা তালিকায় সর্বোচ্চ প্রবৃদ্ধি।

রাশিয়ার হামলার মুখে পড়া ইউক্রেনের জেএসসি ইউক্রেনিয়ান ডিফেন্স ইন্ডাস্ট্রি ৪১ শতাংশ আয় বৃদ্ধি করে ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে।

রাশিয়ার দুই কোম্পানি রোস্টেক ও ইউনাইটেড শিপবিল্ডিং করপোরেশন শীর্ষ তালিকায় রয়েছে। পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও তারা সম্মিলিতভাবে ২৩ শতাংশ আয় বাড়িয়ে ৩১ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায়।

এশিয়া ও ওশেনিয়া অঞ্চলে মোট রাজস্ব কিছুটা কমে ১৩০ বিলিয়ন ডলারে নেমে এলেও জাপান ও দক্ষিণ কোরিয়ার কোম্পানিগুলো বিপুল প্রবৃদ্ধি দেখিয়েছে।

চীনের আটটি কোম্পানির সম্মিলিত আয় ১০ শতাংশ কমে গেছে। বিশেষ করে স্থল প্রতিরক্ষা নির্মাতা নরিনকো’র আয় ৩১ শতাংশ কমে গেছে দুর্নীতি তদন্তের কারণে স্থগিত চুক্তির প্রভাব পড়ে।

জাপানের পাঁচটি কোম্পানি ৪০ শতাংশ রাজস্ব বৃদ্ধি করে ১৩ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছেছে। দক্ষিণ কোরিয়ার চারটি কোম্পানি ৩১ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ১৪ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলারে ওঠে। কোরিয়ার হানভা গ্রুপ একাই ৪২ শতাংশ আয় বেড়েছে।

সিপ্রি জানায়, প্রথমবারের মতো মধ্যপ্রাচ্যের ৯টি কোম্পানি শীর্ষ তালিকায় উঠে এসেছে। তাদের সম্মিলিত আয় ১৪ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়ে ৩১ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়ায়।

ইসরায়েলের তিনটি অস্ত্র কোম্পানি এলবিট সিস্টেমস, ইসরায়েল এয়ারোস্পেস ইন্ডাস্ট্রিজ এবং রাফায়েল ২০২৪ সালে সম্মিলিত ১৬ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার আয় করেছে, যা ১৬ শতাংশ বেশি। গাজায় চলমান গণহত্যা ও ব্যাপক বোমা হামলার কারণে ইসরায়েলি অস্ত্র, বিশেষ করে ড্রোন ও অ্যান্টি-ড্রোন প্রযুক্তির বৈশ্বিক চাহিদা বেড়েছে।

তুরস্কের পাঁচটি প্রতিষ্ঠান মোট ১০ দশমিক ১ বিলিয়ন ডলার আয় করে তালিকায় স্থান পেয়েছে। যা ১১ শতাংশ বৃদ্ধি। বায়কারের মোট আয়ের ৯৫ শতাংশই এসেছে রফতানি থেকে।

এ ছাড়া যুক্তরাজ্য, ফ্রান্স, জার্মানি, ইতালি, ভারত, তাইওয়ান, নরওয়ে, কানাডা, স্পেন, পোল্যান্ড ও ইন্দোনেশিয়ার কোম্পানিগুলোও শীর্ষ তালিকায় রয়েছে।

সারাবাংলা/এনজে
বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর