চট্টগ্রাম ব্যুরো: নভেম্বর মাসজুড়ে রেকর্ডসংখ্যক ডেঙ্গু রোগী শনাক্তের পর চট্টগ্রাম নগরীতে ‘আমেরিকান ওষুধ’ নিয়ে মশা মারার অভিযানে নেমেছে সিটি করপোরেশন।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে নগরীর দক্ষিণ হালিশহর ওয়ার্ড কার্যালয়ের সামনে প্রথমবারের মতো আমেরিকান প্রযুক্তির লার্ভিসাইড ‘বিটিআই’ ছিটানোর কার্যক্রম শুরু হয়। এর উদ্বোধন করেন চসিকের ভারপ্রাপ্ত প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ও সচিব মো. আশরাফুল আমিন।
চলতি বছরে চট্টগ্রামে সবচেয়ে বেশি ডেঙ্গু রোগী শনাক্ত হয়েছে নভেম্বর মাসে। জেলা সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্যানুযায়ী, নভেম্বরে আক্রান্তের সংখ্য ১ হাজার ৭ জন এবং মৃত্যু হয়েছে ৬ জনের। আর চলতি বছরের ১১ মাসে মোট আক্রান্ত হয়েছে ৪ হাজার ৫১২ জন, মৃত্যু হয়েছে ২৬ জনের। ডিসেম্বরে ডেঙ্গুর প্রভাব আরও বাড়তে পারে বলে এরই মধ্যে আশঙ্কার কথা জানিয়েছেন চিকিৎসকেরা।
এ অবস্থায় বিদেশে থাকা সিটি মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেনের নির্দেশে ওয়ার্ডে-ওয়ার্ডে বিটিআই লার্ভিসাইড ছিটানোর কার্যক্রম শুরু করেছে চসিক। এর আগে গত ২৬ মার্চ নগরীর বাকলিয়ায় এটি পরীক্ষামূলকভাবে ছিটানো হয়েছিল।
চসিকের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, বিটিআই একটি প্রাকৃতিকভাবে উৎপন্ন ব্যাকটেরিয়াভিত্তিক লার্ভিসাইড। এটি পানিতে প্রয়োগ করার পর লার্ভা খাদ্যের সঙ্গে বিটিআই গ্রহণ করে এবং ব্যাকটেরিয়ার উৎপাদিত ক্রিস্টাল প্রোটিন টক্সিন লার্ভার পরিপাকতন্ত্রে কার্যকর হয়ে তাদের দ্রুত নিধন ঘটায়। বিশ্বজুড়ে ডেঙ্গু, জিকা ও চিকুনগুনিয়ার মতো মশাবাহিত রোগ নিয়ন্ত্রণে এটি বৈজ্ঞানিকভাবে স্বীকৃত ওষুধ।
বিটিআই লার্ভিসাইড ব্যবহারে মানুষ এবং প্রাণী ও পরিবেশের কোনো ক্ষতি হয় না বলে চসিকের কর্মকর্তারা জানান।
উল্লেখ্য, গত বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতনের পর আদালতের রায়ে মেয়রের দায়িত্বে আসেন ডা. শাহাদাত হোসেন। তিনি দায়িত্ব নেওয়ার পর পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, জলাবদ্ধতাসহ বিভিন্ন কার্যক্রমে দৃশ্যমান অগ্রগতি হলেও মশা দমনে তেমন সাফল্য নেই। এ অবস্থায় আমেরিকান প্রযুক্তির বিটিআই ব্যবহারে মশার লার্ভা ধ্বংসে কার্যকর ফল পাওয়া যাবে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
এদিন সকালে বিটিআই ছিটানোর কর্মসূচিতে আরও উপস্থিত ছিলেন- চসিকের প্রধান পরিচ্ছন্ন কর্মকর্তা ক্যাপ্টেন ইখতিয়ার উদ্দিন আহমেদ চৌধুরী, ম্যালেরিয়া ও মশক নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা মো. শরফুল ইসলাম মাহি, কীটতত্ত্ববিদ রাশেদ চৌধুরী।