ঢাকা: আসন্ন জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে ফেব্রুয়ারির প্রথম দিকেই অবাধ, সুষ্ঠু, অংশগ্রহণমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে বলে দৃঢ় বার্তা দিয়েছেন প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম। সোমবার (১ ডিসেম্বর) সকালে নিজের ফেসবুক প্রোফাইলে একটি সংবাদলিংক শেয়ার করে তিনি এ মন্তব্য করেন।
প্রেস সচিব বলেন, রাজনৈতিক অঙ্গনের কিছু পর্যবেক্ষক—বিশেষ করে সাংবাদিক জিল্লুর রহমান—নির্বাচন ফেব্রুয়ারিতে নাও হতে পারে বলে দীর্ঘদিন ধরেই মত দিয়ে আসছেন। তবে সরকারের দৃষ্টিতে পরিস্থিতি ভিন্ন। খুব শিগগিরই নির্বাচন কমিশন তফসিল ঘোষণা করবে বলেও জানান তিনি।
তিনি উল্লেখ করেন, নির্বাচন প্রস্তুতিতে অন্তর্বর্তী সরকার সম্পূর্ণ স্বচ্ছতা বজায় রেখেছে। রেকর্ডসংখ্যক আইনশৃঙ্খলা বাহিনী মাঠে থাকবে, সঙ্গে অভূতপূর্ব মাত্রায় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্য মোতায়েন করা হবে। ইতোমধ্যে নতুন ডিসি ও এসপি নিয়োগ দেওয়া হয়েছে এবং এ নিয়োগ নিয়ে কোনো বড় বিতর্ক ওঠেনি।
শফিকুল আলম বলেন, নির্বাচনি প্রচারণা শুরু হয়ে গেছে, অধিকাংশ দল তাদের প্রার্থীর তালিকা প্রকাশ করেছে। কিছু অভ্যন্তরীণ বিরোধ ছাড়া সামগ্রিক নিরাপত্তা পরিস্থিতি স্থিতিশীল রয়েছে। পাশাপাশি জুলাই চার্টারের পর রাজনৈতিক নতুন বন্দোবস্তের কারণে দলগুলো গণভোটের প্রস্তুতিও নিচ্ছে।
একই সঙ্গে তিনি সমালোচনা করেন জিল্লুর রহমানের সাম্প্রতিক মন্তব্যকে। প্রশ্ন তোলেন-কেন তিনি ১৯৯৬, ২০১৪, ২০১৮ বা ২০২৪ সালের পুনরাবৃত্তির আশঙ্কা দেখাচ্ছেন। তার দাবি, কোনো মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযুক্ত রাজনৈতিক দলকে নির্বাচন থেকে বাদ দিলে ভোট ‘অংশগ্রহণহীন’ হবে-এ ধারণা ভিত্তিহীন এবং অধিকাংশ নাগরিকও এতে একমত নন। তার ভাষায়, আওয়ামী লীগকে আবার নির্বাচনি রাজনীতিতে ফেরানোর বিষয়ে জনসমর্থন নেই।
এ ছাড়া তিনি আন্তর্জাতিক উন্নয়ন সহযোগীদের অবস্থান তুলে ধরে বলেন, ক্ষমা ও বিচার ছাড়া দলটির রাজনৈতিক স্বাভাবিকতায় ফেরার সুযোগ নেই। সাম্প্রতিক ঘটনায় দলটির সহিংস কৌশলের প্রবণতাও স্পষ্ট বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
জিল্লুর রহমানের সাম্প্রতিক অনলাইন ভিডিও নিয়েও প্রশ্ন তোলেন শফিকুল আলম। তার দাবি, এসব ভিডিওতে গুজব, বিভ্রান্তি ছড়ানো হয় এবং বিতর্কিত ব্যক্তিদের বক্তব্য প্রচারের সুযোগ দেওয়া হয়।
সবশেষে প্রেস সচিব বলেন, ‘মানুষ নিজস্ব যুক্তি দিয়ে সিদ্ধান্ত নেবে। আর আমি দুইটি কথা পরিষ্কারভাবে বলতে পারি, আওয়ামী লীগ নির্বাচন করতে পারবে না, এবং অন্তর্বর্তী সরকার ফেব্রুয়ারির প্রথমার্ধেই একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচন আয়োজন করবে, ইনশাআল্লাহ।’