ঘূর্ণিঝড়, ভারী বৃষ্টি, বন্যা ও ভূমিধসের ঘটনায় এশিয়ার চারটি দেশে প্রাণহানির সংখ্যা ১ হাজার ১৪০-এর বেশি ছাড়িয়ে গেছে। যদিও কয়েকটি দেশে দুর্যোগের তীব্রতা কমতে শুরু করেছে, তবুও নিহতের সংখ্যা আরও বাড়ার আশঙ্কা করা হচ্ছে। আক্রান্ত এলাকায় উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রম জোরদার করা হচ্ছে।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) আল-জাজিরার আপডেট থেকে এসব তথ্য জানা গেছে। প্রতিবেদন অনুসারে, এই প্রাকৃতিক দুর্যোগে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে ইন্দোনেশিয়া ও শ্রীলঙ্কা।
ইন্দোনেশিয়া
সোমবার পর্যন্ত অন্তত ৬০৪ জন নিহতের খবর পাওয়া গেছে, এবং ৫০০ জনেরও বেশি মানুষ নিখোঁজ। ২০১৮ সালের সুলাওয়েসিতে ভূমিকম্প ও সুনামির পর চলমান দুর্যোগটি ইন্দোনেশিয়ার ইতিহাসে সবচেয়ে বড় প্রাকৃতিক বিপর্যয়। ওই দুর্যোগে ২ হাজারের বেশি মানুষ নিহত হয়েছিলেন।
ক্ষয়ক্ষতির ব্যাপকতা সত্ত্বেও ইন্দোনেশিয়া সরকার এখনো জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করেনি বা আন্তর্জাতিক সহায়তার ঘোষণা দেয়নি। তবে উদ্ধার ও ত্রাণ কার্যক্রমে সামরিক হেলিকপ্টার ও জাহাজ ব্যবহার করা হচ্ছে।
শ্রীলঙ্কা
দেশটিতে ‘ডিটওয়া’ ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে অন্তত ৩৬৬ জন নিহত হয়েছেন এবং অনেকে নিখোঁজ রয়েছেন। ক্ষতি ও ধ্বংসের মাত্রা ২০০৪ সালের সুনামির পর সবচেয়ে বেশি। রোববার দিবাগত রাতে রাজধানী কলম্বোতে বন্যার পানি সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছালেও সোমবার সকাল থেকে তা কমতে শুরু করেছে।
বন্যার পানিবন্দী মানুষকে উদ্ধারে সামরিক হেলিকপ্টার ব্যবহার করা হচ্ছে। তবে ধ্বংসযজ্ঞের কারণে মধ্যাঞ্চলের সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত এলাকার ক্ষয়ক্ষতি পুরোপুরি নিরূপণ করতে বেগ পেতে হচ্ছে।
থাইল্যান্ড
টানা বৃষ্টি থেকে সৃষ্ট বন্যায় দেশটির দক্ষিণাঞ্চলে অন্তত ১৭৬ জন নিহত হয়েছেন। এটি গত এক দশকের মধ্যে সবচেয়ে ভয়াবহ দুর্যোগ।
দুর্যোগ মোকাবিলায় সরকারের তৎপরতা নিয়ে থাইল্যান্ডের নাগরিকেরা ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। দায়িত্ব পালনে ব্যর্থতার কারণে ইতোমধ্যে দুজন স্থানীয় কর্মকর্তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে।
মালয়েশিয়া
মালয়েশিয়ার সীমান্ত পার্লিস রাজ্যে ভারী বৃষ্টির কারণে বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়েছে এবং সেখানে অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন।
বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, দক্ষিণ ও দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই চার দেশে টানা ভারী বর্ষণ শুরু হলেও আবহাওয়ার পৃথক কারণের জন্যই তা হয়েছে। এ সময়ে প্রায় পুরো শ্রীলঙ্কায় ভারী বৃষ্টি হলেও বাকি তিন দেশে তা হয়েছে নির্দিষ্ট অঞ্চলে (ইন্দোনেশিয়ার সুমাত্রার বড় অংশ, দক্ষিণ থাইল্যান্ড ও উত্তর মালয়েশিয়া)।