সিলেট: সিলেট মহানগর বিএনপিতে অভ্যন্তরীণ ক্ষমতার দ্বন্দ্বে খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় আয়োজিত একটি শান্তিপূর্ণ অনুষ্ঠানে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। একই পদের দাবিদার দুই নেতা সামনাসামনি অবস্থানে দাঁড়ালে এই উত্তেজনা দেখা দেয়।
সোমবার (১ ডিসেম্বর) দুপুরে সিলেট নগরীর কাজিটুলার একটি মক্তবে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় দোয়া ও এতিমদের খাবার বিতরণ আয়োজন করেন সিলেট মহানগর বিএনপির পদ স্থগিত থাকা সভাপতি নাসিম হোসাইন। কিন্তু সেখানে উপস্থিত হয়ে ব্যানার খুলে নাসিমকে অনুষ্ঠানস্থল ছাড়তে বাধ্য করেন ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করা রেজাউল হাসান কয়েস লোদী।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, নাসিম হোসাইনের পদ স্থগিত থাকার সময় ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব পান কয়েস লোদী। সম্প্রতি একটি বিজ্ঞপ্তিতে নাসিমের স্থগিতাদেশ প্রত্যাহারের কথা উল্লেখ হলেও পরে কেন্দ্রীয় দফতর সেই বিজ্ঞপ্তিকে ‘ভুলবশত প্রকাশিত’ বলে সংশোধিত বিজ্ঞপ্তি পাঠায়। ফলে ‘পদ স্থগিত ছিল কি ছিল না’—এই জটিলতা আরও বেড়ে যায়। এই অবস্থায় নাসিম নিজেকে বৈধ সভাপতি দাবি করছেন, আর কয়েস লোদী তা মানতে রাজি নন।
নাসিম হোসাইন বলেন, ‘আমি সভাপতি ছিলাম, আছি। আমার জায়গায় কাউকে দেওয়া হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে দোয়া ও খাবার বিতরণের আয়োজন করছিলাম। কিন্তু কয়েস লোদী এসে বিশৃঙ্খলা করেন। আমি বিশৃঙ্খলায় না জড়িয়ে শিরনি বিতরণ করে চলে আসি।’
এ বিষয়ে জানতে চাইলে রেজাউল হাসান কয়েস লোদী গণমাধ্যমকে এসব অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, তিনি অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন না, শুধু শেষ মুহূর্তে শিরনি বিতরণে অংশ নিতে যান। ব্যানার খুলে নেওয়ার মতো ঘটনার বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না।
নেতৃত্ব সংক্রান্ত প্রশ্নে তিনি জানান, দল তাকে যে দায়িত্ব দিয়েছে তিনি সেটিই পালন করছেন এবং দল থেকে নির্দেশনা এলে সে অনুযায়ী কাজ করবেন।
প্রসঙ্গত, ২০২৩ সালের ১০ মার্চ কাউন্সিলরদের ভোটে মহানগর বিএনপির সভাপতি পদে নাসিম হোসেইন, সাধারণ সম্পাদক পদে ইমদাদ হোসেন চৌধুরী ও সাংগঠনিক সম্পাদক পদে সৈয়দ সাফেক মাহবুব নির্বাচিত হন। ২০২৪ সালের জুলাইয়ে বিদেশে চলে যান নাসিম হোসেইন। ওই বছরের ১ আগস্ট কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মিফতাহ্ সিদ্দিকীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতির দায়িত্ব দেওয়া হয়।
পরবর্তী সময়ে কেন্দ্র থেকে ৪ নভেম্বর নাসিম হোসেইনকে বাদ দিয়ে সিটি করপোরেশনের সাবেক প্যানেল মেয়র রেজাউল হাসান কয়েস লোদীকে ভারপ্রাপ্ত সভাপতি করে ১৭০ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর থেকে কয়েস লোদী ভারপ্রাপ্ত সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছেন।