পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মৃত্যুর গুজব অব্যাহত থাকা এবং সম্ভাব্য অস্থিরতার আশঙ্কার মধ্যে সরকার রাওয়ালপিন্ডিতে ১৪৪ ধারা জারি করে জনসমাগম নিষিদ্ধ করেছে দেশটির সরকার।
মঙ্গলবার (২ ডিসেম্বর) ভারতীয় গণমাধ্যম এনডিটিভির প্রতিবেদনে এই তথ্য জানানো হয়েছে।
ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই) তাদের নেতার সঙ্গে সাক্ষাতের দাবিতে বিক্ষোভ করার পরিকল্পনা করার পরই এই পদক্ষেপ নেওয়া হলো।
ডেপুটি কমিশনার ড. হাসান ওয়াকার চিমা সই করা এক আদেশে বলা হয়েছে, ফৌজদারি কার্যবিধির (পাঞ্জাব সংশোধনী) আইন, ২০২৪-এর ১৪৪ ধারা ১ থেকে ৩ ডিসেম্বর পর্যন্ত তিন দিনের জন্য কার্যকর থাকবে।
- পাঁচ বা ততোধিক ব্যক্তির সব ধরনের সমাবেশ, জমায়েত, অবস্থান ধর্মঘট, মিছিল, শোভাযাত্রা, বিক্ষোভ, জলসা এবং সমবেত হওয়া।
- অস্ত্র, স্পাইক, লাঠি, গুলতি, বল বেয়ারিং, পেট্রোল বোমা, হাতে তৈরি বিস্ফোরক বা সহিংসতায় ব্যবহার হতে পারে এমন যেকোনো সরঞ্জাম বহন করা।
- অস্ত্র প্রদর্শন (আইন প্রয়োগকারী সংস্থা ব্যতিত) এবং আপত্তিকর বা বিদ্বেষমূলক বক্তব্য।
- ব্যক্তিদের সমাবেশ বা যান চলাচল নিয়ন্ত্রণে পুলিশের আরোপিত কোনো বিধিনিষেধ অপসারণের চেষ্টা।
- মোটর সাইকেলে দুইজন আরোহী (পিলিয়ন রাইডিং)।
- লাউডস্পিকারের ব্যবহার।
১ ডিসেম্বরের আদেশে বলা হয়েছে, রাওয়ালপিন্ডি জেলার সীমার মধ্যে ‘আসন্ন হুমকি’ বিদ্যমান এবং ‘জনগণের নিরাপত্তা, সুরক্ষা, শান্তি ও স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করতে’ এই বিধিনিষেধ আরোপ করা হচ্ছে। গোয়েন্দা কমিটি ইঙ্গিত দিয়েছে, নির্দিষ্ট গোষ্ঠীগুলো বড় জমায়েত ও বিক্ষোভের মাধ্যমে আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি ঘটানোর জন্য সক্রিয়ভাবে প্রস্তুত হচ্ছে।
বিশ্বকাপজয়ী সাবেক ক্রিকেটার ইমরান খান ২০২৩ সালের আগস্ট থেকে রাওয়ালপিন্ডির আদিয়ালা কারাগারে বন্দি আছেন। তিনি তার বিরুদ্ধে আনা একাধিক মামলার রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে দাবি করেছেন।
ইমরান খানের পরিবার অভিযোগ করেছে, গত এক মাসেরও বেশি সময় ধরে তাদের সঙ্গে তাকে দেখা করার অনুমতি দেওয়া হচ্ছে না এবং তারা তার জীবিত থাকার প্রমাণ দাবি করেছেন।
তার ছেলে কাসিম খান বার্তা সংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, সাপ্তাহিক সাক্ষাতের জন্য আদালতের আদেশ থাকা সত্ত্বেও পরিবারের সঙ্গে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রীর কোনো সরাসরি বা যাচাইযোগ্য যোগাযোগ নেই।
তিনি লিখিত মন্তব্যে বলেন, ‘আপনার বাবা নিরাপদ, আহত নাকি জীবিত, তা না জানা এক ধরনের মানসিক নির্যাতনের সামিল।’
তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের সবচেয়ে বড় ভয় হলো, অপূরণীয় কিছু আমাদের কাছ থেকে লুকানো হচ্ছে।’
এর আগে কাসিম খান অভিযোগ করেছিলেন, তার বাবাকে ‘সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন পরিবেশে মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তদের কুঠুরিতে (death cell) একা রাখা হয়েছে।’