চট্টগ্রাম ব্যুরো: বিভিন্ন স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে ইজারা দেওয়া নিয়ে শক্ত বিরোধিতার মুখে পড়েছে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষ। বিরোধিতাকারীদের পক্ষ থেকে নানা বক্তব্য এলেও চুক্তি নিয়ে গোপনীয়তা এবং জাতীয় নিরাপত্তা বিঘ্নিত হওয়ার আশঙ্কা- এ দু’টি ইস্যু তাদের কাছে মূলত প্রাধান্য পাচ্ছে। আবার এসব বক্তব্যের বিপরীতে বন্দরের পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো জোরালো অবস্থান না থাকায় বিরোধিতা ‘হালে পানি পাচ্ছে’ বলে মনে করছেন বন্দর সংশ্লিষ্টরা।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকর্তারা কেউ সরাসরি মুখ না খুলছেন না। তবে আলাপে কর্মকর্তাদের ভাষ্য এমন যে, বিদেশি প্রতিষ্ঠান এলে চাকরি হারানোর ধূয়া তুলে শ্রমিক-কর্মচারীদের আতঙ্কিত করে পরিস্থিতি ঘোলাটে করা হচ্ছে।
চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে বড় কনটেইনার পরিবহণকারী স্থাপনা নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি), লালদিয়ার চরে প্রস্তাবিত কনটেইনার টার্মিনালসহ আরও কয়েকটি স্থাপনা বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে ইজারা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করেছিল বিগত আওয়ামী লীগ সরকার। ২০২৪ সালের জুনে চট্টগ্রাম বন্দরের পতেঙ্গা কনটেইনার টার্মিনাল (পিসিটি) পরিচালনার ভার দেওয়া হয় সৌদি আরবের রেড সি গেটওয়ে টার্মিনাল ইন্টারন্যাশনাল (আরএসজিটিআই) নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে।
তবে অন্যান্য স্থাপনগুলো বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে দেওয়ার প্রক্রিয়া চলমান থাকা অবস্থায় ওই বছরের ৫ আগস্ট ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আওয়ামী লীগ সরকারের পতন হয়। অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় এসে সেই প্রক্রিয়া এগিয়ে নেয়।
গত ১৭ নভেম্বর চট্টগ্রামের বন্দরের প্রস্তাবিত লালদিয়া কনটেইনার টার্মিনালটি ৩০ বছর মেয়াদে পরিচালনার জন্য ডেনমার্কভিত্তিক শিপিং ও লজিস্টিকস প্রতিষ্ঠান এপি মোলার মায়ের্স্ক (এপিএম)- এর সঙ্গে চুক্তি করে বন্দর কর্তৃপক্ষ। একইদিন ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরে পানগাঁও অভ্যন্তরীণ কনটেইনার টার্মিনাল ২২ বছরের জন্য সুইজারল্যান্ডভিত্তিক প্রতিষ্ঠান মেডলগের দায়িত্বে দিতে চুক্তি সই করে সরকার।
দেশের কনটেইনারনির্ভর সমুদ্রবাণিজ্যের ৯৯ শতাংশ চট্টগ্রাম বন্দরের মাধ্যমে হয়। এর মধ্যে ৪৪ শতাংশ সামলায় এনসিটি। সেই টার্মিনালটির জাহাজ থেকে বার্ষিক ১০ লাখ একক কনটেইনার ওঠানো-নামানোর স্বাভাবিক সক্ষমতা আছে। গতবছর এই টার্মিনালে ১২ লাখ ৮১ হাজার কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে। অন্তর্বর্তী সরকার আসার পর বেসরকারি প্রতিষ্ঠান সাইফ পাওয়ারটেককে এনসিটি থেকে বিদায় দেওয়া হয়। সেটি এখন পরিচালনা করছে নৌবাহিনী নিয়ন্ত্রিত প্রতিষ্ঠান চিটাগং ড্রাইডক লিমিটেড।
জানা গেছে, এনসিটি পরিচালনার জন্য আওয়ামী লীগ সরকারেই সংযুক্ত আরব আমিরাতভিত্তিক ডিপি ওয়ার্ল্ড নামে একটি প্রতিষ্ঠানকে দায়িত্ব দেওয়ার প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছিল। অন্তর্বর্তী সরকারও সেই প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে আলোচনা এগিয়ে নিয়েছে। কিন্তু এর মধ্যে এনসিটি পরিচালনা করতে বন্দর কর্তৃপক্ষের সঙ্গে বিদেশি কোম্পানির চুক্তি-সম্পর্কিত প্রক্রিয়ার বৈধতা নিয়ে আইনি লড়াই গড়িয়েছে উচ্চ আদালতে। এ বিষয়ে ৪ ডিসেম্বর আদেশ হওয়ার কথা আছে।
চট্টগ্রাম বন্দরকে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের হাতে তুলে দেওয়ার অভিযোগ এনে শুরু থেকেই প্রতিবাদে সরব দেশের বামপন্থী দলগুলো। ১৯৯৮ সালে তৎকালীন আওয়ামী লীগ সরকার চট্টগ্রাম বন্দরের মোহনায় একটি বেসরকারি বন্দর করার জন্য আমেরিকাভিত্তিক এসএসএ পোর্ট নামে একটি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে প্রক্রিয়া এগিয়ে নিয়েছিল। কিন্তু সেসময় বাম রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিবাদের মুখে সেই প্রক্রিয়া স্তিমিত হয়ে যায়। তখন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) নেতা মোহাম্মদ শাহআলমসহ চারজন হাইকোর্টে রিট করলে সেই প্রক্রিয়া বাতিল করা হয়।
আওয়ামী লীগ ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার আগে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের কাছে বন্দরের স্থাপনা ইজারা দেওয়া নিয়ে বামদলগুলো আন্দোলন শুরু করেছিল। অন্তর্বর্তী সরকারের আমলে গত জুন মাসে ঢাকা-চট্টগ্রাম রোডমার্চ করে বন্দর নিয়ে নেওয়া সিদ্ধান্তের বিরোধিতা শুরু করে তারা। এরপর ট্রেড ইউনিয়ন কেন্দ্র (টিইউসি), জাতীয়তাবাদী শ্রমিকদল, বন্দর শ্রমিক সংঘসহ আরও বিভিন্ন সংগঠন তাদের মতো করে আন্দোলন সংগঠিত করতে শুরু করে। সর্বশেষ বিভিন্ন শ্রমিক সংগঠনের সম্মিলিত মোর্চা শ্রমিক-কর্মচারী ঐক্য পরিষদ (স্কপ) জোরালোভাবে এ আন্দোলনে মাঠে নামে। এরই মধ্যে স্কপের ডাকে বন্দর অবরোধ কর্মসূচিও হয়েছে। আগামী ৫ ডিসেম্বর তারা সারাদেশে বিক্ষোভ সমাবেশ ও মশাল মিছিলের ডাক দিয়েছে। এছাড়া জামায়াতে ইসলামী এবং হেফাজতে ইসলামও বিবৃতি দিয়ে প্রতিবাদে শামিল হয়েছে।
আন্দোলনকারী সংগঠনগুলোর নেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সভা-সমাবেশে তাদের নানা বক্তব্য এলেও ঘুরেফিরে তাদের বিরোধিতার জায়গা দুই-তিনটিতে। এর মধ্যে একটি হচ্ছে- এনসিটি পরিচালনার ভার ডিপি ওয়ার্ল্ডের মতো একটি প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হলে জাতীয় নিরাপত্তা ও ভূ-রাজনৈতিক ঝুঁকি তৈরি হতে পারে। ২০০৬ সালে যুক্তরাষ্ট্রও ডিপি ওয়ার্ল্ডকে এই বিবেচনায় টার্মিনাল পরিচালনা করতে দেয়নি—এমন ভাষ্য তাদের। লাভজনক এনসিটি বিদেশি সংস্থার কাছে কেন দিতে হবে, এ প্রশ্নও আছে তাদের।
এছাড়া আরেকটি আপত্তির বিষয় হচ্ছে, বিদেশি প্রতিষ্ঠানগুলো চট্টগ্রাম বন্দরের স্থাপনা পরিচালনা, বিনিয়োগ সিদ্ধান্ত এবং প্রবেশাধিকারের ক্ষেত্রে কর্তৃত্ববাদী আচরণ শুরু করতে পারে। তাদের মাধ্যমে জাতীয় সিদ্ধান্ত গ্রহণ প্রক্রিয়ায় বিদেশি কর্তৃত্বের অনুপ্রবেশ ঘটতে পারে। দুর্বল চুক্তির কারণে ভবিষ্যতে আন্তর্জাতিক আদালতে বিরোধ হলে বাংলাদেশকে বড় অঙ্কের ক্ষতিপূরণ দিতে হতে পারে।
আন্দোলনকারীদের নেতা সিপিবির প্রাক্তন সভাপতি মোহাম্মদ শাহআলম সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমাদের দেশ একটি সমুদ্রবন্দরের ওপর নির্ভরশীল-সেটি চট্টগ্রাম বন্দর। আমাদের পুরো আমদানি-রফতানি বাণিজ্য, দেশের অর্থনীতির চালিকাশক্তি এটা। এছাড়া, চট্টগ্রাম বন্দরের অবস্থান ভৌগলিক কারণে খুবই স্পর্শকাতর। এটা বঙ্গোপসাগর আর কর্ণফুলী নদীর মোহনায়। এমন একটা স্ট্যাটেজিক পয়েন্টকে বিদেশিদের হাতে ছেড়ে দেওয়া হবে, এটা কোনো দেশপ্রেমিক বিবেকবান মানুষ মানতে পারে না। কারণ, এটি আমাদের জাতীয় নিরাপত্তা, স্বাধীনতা, সার্বভৌমত্বের প্রশ্ন। আমাদের বিরোধিতার জায়গাটা খুব স্পষ্ট। আমরা কোনো বিদেশি শক্তির জন্য চট্টগ্রাম বন্দরকে গ্রাউন্ড হিসেবে ব্যবহৃত হতে দিতে পারি না।’
আরেক সংগঠক চট্টগ্রাম জেলা টিইউসির সভাপতি ও শ্রম সংস্কার কমিশনের সদস্য তপন দত্ত সারাবাংলাকে বলেন, ‘এনসিটি যদি লোকসানি কোনো প্রতিষ্ঠান হতো, আমাদের শ্রমিক-কর্মচারীদের যদি সক্ষমতা না থাকতো, সেখানে যদি যন্ত্রপাতি সংযোজনের সুযোগ থাকতো, তাহলে একটা আলোচনার বিষয় ছিল। একটি লাভজনক স্বয়ংসম্পূর্ণ টার্মিনাল কেন বিদেশি প্রতিষ্ঠানকে দিতে হবে ? বন্দরের শ্রমিক-কর্মচারীরা আপত্তি করছেন, চট্টগ্রামের মানুষ প্রতিবাদ করছে, তাহলে সরকার এত আগ্রহী কেন ? এটা তো তাদের কাজ নয়। নির্বাচিত সরকার এসে সংসদে আলাপ করে সিদ্ধান্ত যা নেওয়ার নেবে। আমাদের অবস্থান যথেষ্ঠ যৌক্তিক এবং এজন্যই মানুষ সাড়া দিচ্ছে।’
এসব বিষয়ে চট্টগ্রাম বন্দরের সচিব মো. ওমর ফারুকের কাছে বক্তব্য জানতে চাইলে তিনি কিছু বলতে অস্বীকৃতি জানান। তবে গত ২৪ নভেম্বর চট্টগ্রাম বন্দরের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ও সদস্য (প্রকৌশল) কমডোর কাওছার রশিদ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে একদফা বৈঠক করেন। আন্দোলনকারীরা পরবর্তী সময়ে জানান, বৈঠকের তাদের আপত্তির বিষয়গুলো নিয়ে সুনির্দিষ্টভাবে কিছু বলা হয়নি। তাদের শুধু চট্টগ্রাম বন্দরের কর্মকাণ্ডে যাতে কোনো ব্যাঘাত না ঘটে, সে বিষয়ে সহযোগিতা করতে বলা হয়েছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক চট্টগ্রাম বন্দরের একজন কর্মকর্তা সারাবাংলাকে বলেন, ‘নিরাপত্তার ইস্যুটি অহেতুক তোলা হচ্ছে। পৃথিবীতে শত, শত বন্দর বিদেশি অপারেটররা পরিচালনা করছে। তাদের নিরাপত্তা নিয়ে কোনো সমস্যা হয়েছে বলে তো শুনিনি। তাহলে শুধু চট্টগ্রাম বন্দর নিয়ে এ প্রশ্ন তোলা হচ্ছে কেন ? আসলে এখানে শ্রমিক-কর্মচারীদের মধ্যে একটা অপপ্রচার করা হয়েছে যে- বিদেশিরা এলে তাদের চাকরি চলে যাবে। বাস্তবে বিদেশিরা তাদের দেশ থেকে কোনো শ্রমিক আনবে না। এই অপপ্রচারের কারণে শ্রমিকরা বিদেশিদের বিষয়ে আপত্তি তুলছেন।’
এদিকে লালদিয়ার চরে প্রস্তাবিত কনটেইনার টার্মিনাল ও পানগাঁও টার্মিনাল নিয়ে বিদেশি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে করা চুক্তি নিয়ে আপত্তি থাকলেও এ বিষয়ে আন্দোলনকারীদের বিরোধিতা খুব বেশি জোরালো নয়। বিদেশি বিনিয়োগ বিবেচনায় এবং চুক্তি সই করা প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ে তেমন আপত্তি না থাকায় এ বিষয়ে জোরালো প্রতিবাদ করা হচ্ছে না বলে জানা গেছে। তবে তাদের সঙ্গে করা চুক্তিগুলো প্রকাশের দাবি আছে আন্দোলনকারীদের। তাদের অভিযোগ, চুক্তিগুলো সই করা হয়েছে অস্বাভাবিক দ্রুততায় এবং চুক্তির বিস্তারিত শর্তাবলী জনসমক্ষে প্রকাশ করা হয়নি।
জামায়াতে ইসলামীরও আপত্তি ‘অস্বচ্ছ ও গোপন’ চুক্তির জন্য। গত ১৯ নভেম্বর দলটির কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মুহাম্মদ শাহজাহান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘চট্টগ্রাম বন্দর দেশের অর্থনীতির প্রাণকেন্দ্র। আবার দেশের নিরাপত্তা ও স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্বের মতো স্পর্শকাতর ইস্যুও চট্টগ্রাম বন্দরের সঙ্গে সম্পৃক্ত। তাই চট্টগ্রাম বন্দরের বিষয়ে তাড়াহুড়ো করে অস্বচ্ছ ও গোপন কোনো পদক্ষেপ নেওয়ার সুযোগ নেই। কিন্তু দুর্ভাগ্যজনকভাবে ইন্টেরিম সরকার তাই করতে চাচ্ছে।’
‘কোনো দরপত্র ছাড়াই পতিত স্বৈরাচারের আত্মীয়স্বজনের সঙ্গে সম্পৃক্ত এক বিদেশি কোম্পানিকে নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল (এনসিটি) তুলে দেওয়ার যাবতীয় ষড়যন্ত্র এখন চলমান। আরও কয়েকটি টার্মিনালের বিষয়ে ইন্টেরিম সরকারের বর্তমান সিদ্ধান্তে জনগণের মাঝে ক্ষোভ ও বাপক অসন্তোষ তৈরি হয়েছে।’
অন্যদিকে নগর জামায়াতের আমির মুহাম্মদ নজরুল ইসলাম আরেক বিবৃতিতে অভিযোগ করেন, ‘পতিত স্বৈরাচারের দোসরদের বন্দরের মালিকানা তুলে দেওয়ার ব্যবস্থা পাকাপোক্ত করেছে অন্তর্বর্তী সরকার। লালদিয়ার চর যে প্রতিষ্ঠানকে দেওয়া হচ্ছে, সেই এপিএম টার্মিনালের সঙ্গে কনটেইনার ব্যবসায় জড়িত শেখ হাসিনার ঘনিষ্ঠ এক আত্মীয়। তিনি এপিএম টার্মিনালের স্থানীয় অংশীদার। ফলে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার আত্মীয় হতে যাচ্ছেন আগামী ৩০-৪০ বছরের জন্য চট্টগ্রাম বন্দরের সবচেয়ে আধুনিক টার্মিনালের অন্যতম মালিক। এরপর পানগাঁও টার্মিনালের দায়িত্ব যে সুইস কোম্পানিকে দেওয়ার জন্য সরকার চুক্তি করছে, তার স্থানীয় এজেন্ট আওয়ামী নেতা সাবের হোসেন চৌধুরী। নিউমুরিং কনটেইনার টার্মিনাল পরিচালনার দায়িত্ব পাচ্ছে ডিপি ওয়ার্ল্ড, যার স্থানীয় অংশীদারও সাবের হোসেন চৌধুরী।’
গত ১৭ নভেম্বর হেফাজতে ইসলামের আমির শাহ মুহিব্বুল্লাহ বাবুনগরী ও মহাসচিব সাজেদুর রহমান এক বিবৃতিতে বলেন, ‘বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, অর্থনৈতিক শক্তির প্রাণকেন্দ্র বন্দর। দেশের গুরুত্বপূর্ণ এই বন্দর বিদেশি প্রতিষ্ঠান বা শক্তির হাতে ব্যবস্থাপনাগতভাবে স্থানান্তর করার যেকোনো উদ্যোগ রাষ্ট্রের স্বার্থের বিরুদ্ধে স্পষ্ট হুমকি এবং জাতীয় নিরাপত্তাকে ঝুঁকির মুখে ফেলে দিতে পারে। এ ধরনের পদক্ষেপ দেশের ভবিষ্যৎ, অর্থনৈতিক স্বাধীনতা এবং আঞ্চলিক নিরাপত্তাকে দীর্ঘ মেয়াদে ক্ষতিগ্রস্ত করবে। কৌশলগত স্থাপনা পরিচালনার নামে কোনো বিদেশি আধিপত্য, বিশেষ সুবিধা বা গোপন চুক্তি জাতীয় স্বার্থের সঙ্গে সম্পূর্ণ অসংগত ও অগ্রহণযোগ্য।’
তীব্র সমালোচনার মুখে গত ১৬ নভেম্বর নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি পোস্ট করেন বাংলাদেশ বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান আশিক চৌধুরী। তিনি বলেন, ‘কোনো দেশের সরকারই পিপিপি (পাবলিক প্রাইভেট পার্টনারশিপ) চুক্তির দলিল জনসম্মুখে প্রকাশ করবে না আইনগত সীমাবদ্ধতার কারণে। সরকারি ক্রয়নীতি ও পিপিপি গাইডলাইন অনুযায়ী পূর্ণ প্রকাশ নিরাপদ নয়।’ সেইসঙ্গে বেসরকারি অংশীদারের গোপনীয়তা রক্ষার বিষয়টিও উল্লেখ করেন তিনি।