রাজবাড়ী: ‘প্রতিবন্ধিতা ও অন্তর্ভুক্তিমূলক সমাজ গড়ি, সামাজিক অগ্রগতি তরান্বিত করি’ এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে রাজবাড়ীতে ৩৪তম আন্তর্জাতিক প্রতিবন্ধী দিবস এবং ২৭তম জাতীয় প্রতিবন্ধী দিবস উদযাপন উপলক্ষে র্যালি ও আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (৩ ডিসেম্বর) সকালে অফিসার্স ক্লাবে জেলা প্রশাসন, জেলা সমাজসেবা কার্যালয় ও প্রতিবন্ধী সেবা সাহায্য কেন্দ্রের আয়োজনে এই দিবসটি পালন করা হয়।
অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. তারিফ-উল-হাসানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বক্তব্য নেন।
জেলা প্রবেশন অফিসার অজয় কুমার হালদারের সঞ্চালনায় বিশেষ অতিথি হিসেবে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস্) মো. শামসুল হক, সিভিল সার্জনের প্রতিনিধি ডা. মো. সোহেল শেখ, জেলা সমাজসেবা অধিদফতরের উপ-পরিচালক রুবাইয়াত মো. ফেরদৌস বক্তব্য দেন।
অন্যান্যের মধ্যে জেলা এনজিও ফেডারেশনের সভাপতি ও এনজিও রাসের নির্বাহী পরিচালক মো. লুৎফর রহমান লাবু, হাসপাতাল সমাজ সেবা অফিসার বোরহান উদ্দিন হাওলাদার বক্তব্য রাখেন।
এ ছাড়া আলোচনা সভায় স্বাগত বক্তব্য দেন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের প্রতিবন্ধী বিষয়ক কর্মকর্তা নাদিয়া সুলতানা। অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন প্রতিবন্ধী সেবা ও সাহায্য কেন্দ্রের চিকিৎসক ডা. মো. নাসির উদ্দীন।
আলোচনা সভায় বক্তারা বলেন, প্রতিবন্ধীরা সমাজের বোঝা নয়। তারা এখন কর্মজীবী হয়ে জীবিকা নির্বাহ করছে। তাদের বোঝা মনে না করে সম্পদ হিসেবে গ্রহণ করলে তারা দেশের সম্পদ হিসাবে গড়ে উঠবে। অবহেলিতদের অবশ্যই স্বাবলম্বী করতে হবে। সমগ্র অনুষ্ঠানটি পরিচালনা করেন, জেলা সমাজ সেবা কার্যালয়ের প্রবেশন অফিসার সুমনা শারমিন।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে জেলা প্রশাসক সুলতানা আক্তার বলেন, আজকের যে বিশেষ দিবসটি এটি আমাদের সমাজের যাদের আমরা প্রতিবন্ধী বলি তাদের জন্য আয়োজন করা হয়েছে। আমাদের জাতীয় প্রেক্ষিতে সরকার এই দিবসটি অতি গুরুত্বের সঙ্গে পালন করা হয়ে থাকে। প্রতিবন্ধীরা সমাজের বিচ্ছিন্ন অংশ নয়। জন্মগত বা জন্মের পরে কোনো দুর্ঘটনার কারণে তারা প্রতিবন্ধী হয়ে পরেছেন। সমাজের এই অংশের দায়িত্ব সরকার নিয়েছেন। সমাজসেবার মাধ্যমে সরকার তাদের সহযোগিতা করে যাচ্ছেন। প্রতিবন্ধীরা আমাদের বোঝা নয়।
তিনি আরও বলেন, প্রতিবন্ধীরাও অন্যান্য ব্যক্তির ন্যায় সৃষ্টিকর্তার সৃষ্টি। তারাও বাবা-মায়ের মাধ্যমে এই পৃথিবীতে আসে। এজন্য কোনো প্রতিবন্ধীকে শিশুকে অবহেলা না করে পরম স্নেহ ও ভালোবাসা দিয়ে বড় করতে হবে। অনকে পরিবার আছে লজ্জায় প্রতিবন্ধী শিশুকে বাড়ির বাহিরে আনে না। এটা ঠিক নয়। কারণ প্রতিবন্ধীরাও এখন দেশের হয়ে কাজ করছে। ক্রীড়াঙ্গনে ভাল অবদান রাখছে। বহিঃবিশ্বে যেয়ে দেশের সুনাম বয়ে আনছে।
এ ছাড়াও তারা বিভিন্ন কর্মক্ষেত্রে যোগদান করে স্বাবলম্বী হচ্ছে। সরকার প্রতিবন্ধীদের জন্য ভাতার ব্যবস্থা করেছে। এ জন্য সকল প্রতিবন্ধীকে ভাতার আওতায় আনার জন্য সবার সহযোগিতা কামনা করেন তিনি।
আলোচনা সভা শেষে বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন শিশু ও প্রতিবন্ধী শিশুদের মাঝে চকলেট ও পুতুল উপহার দেওয়া হয়। বিশেষ চাহিদাসম্পন্ন ও প্রতিবন্ধী ব্যক্তিদের মাঝে দুটি ট্রাই সাইকেল ও ১৫টি হুইল চেয়ার বিতরণ করা হয়।