Thursday 04 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বিজয়ের দিনলিপি
৪ ডিসেম্বর ১৯৭১—পাকিস্তানের পক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব

সারাবাংলা ডেস্ক
৪ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৫৭

বিজয়ের দিনলিপি, ৪ ডিসেম্বর ১৯৭১। ছবি কোলাজ: সারাবাংলা

১৯৭১ সালের ৪ ডিসেম্বর। এ দিন ভারতীয় সামরিক বাহিনী পাকিস্তান দখলদার বাহিনীর ওপর প্রচণ্ড আক্রমণ চালায়। চতুর্দিক থেকে চলে এ আক্রমণ। ঢাকা ও চট্টগ্রামে শত্রুদের ঘাঁটিতে চলে বোমাবর্ষণ। সেইসঙ্গে আকাশে চলে বিমান যুদ্ধ।

আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে এই দিনটি বাংলাদেশের জন্য ছিল অস্থিরতা আর উদ্বেগের। কারণ, এদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিনিধি সিনিয়র জর্জ বুশ জাতিসংঘের নিরাপত্তা পরিষদে পাকিস্তানের পক্ষে যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব উত্থাপন করেন। যুক্তরাষ্ট্র দাবি করে, ‘এই মুহূর্তে ভারত ও পাকিস্তান নিজ নিজ সীমান্তের ভেতর সৈন্য প্রত্যাহার করে নিতে হবে।’

যখন এ রকম উৎকণ্ঠা অবস্থা, তখন প্রবাসী বাংলাদেশ সরকারের অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ও প্রধানমন্ত্রী তাজউদ্দীন আহমদ লিখিতপত্রে ভারতের প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধির কাছে বাংলাদেশকে স্বীকৃতি দেওয়ার আহ্বান জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

যুদ্ধবিরতি প্রস্তাব পাস করানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র তখন বৈঠকের পর বৈঠক করছে। সবাই যখন চরম উদ্বেগ আর চিন্তায়, তখন এলো খুশির সংবাদ। সোভিয়েত ইউনিয়নের ভেটোর কারণে যুক্তরাষ্ট্রের যুদ্ধবিরতির প্রস্তাব নিরাপত্তা পরিষদে ভেস্তে যায়। পোল্যান্ডও এ প্রস্তাবের বিপক্ষে ভোট দেয়। তবে ফ্রান্স-ইংল্যান্ড এ যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে ভোটদানে বিরত থাকে। যুক্তরাষ্ট্র হেরে যাওয়ার পর পাকিস্তানের পরাজয় সময়ের ব্যাপার হয়ে দাঁড়ায়।

মুক্তিযোদ্ধা ও ভারতীয় বাহিনীর যৌথ আক্রমণের মুখে বাংলাদেশের প্রতিটি জায়গা থেকে পালানোর পথ খুঁজতে থাকে পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী। এদিন রাতে আখাউড়ায় পাকিস্তানি হানাদার বাহিনীর সঙ্গে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহনীর প্রচণ্ড গোলা বিনিময় হয়। সারারাত যুদ্ধের পর ৫ ডিসেম্বর ভোরে মুক্তিবাহিনী ও মিত্রবাহিনীর কাছে আত্মসমর্পণ করে পাকিস্তানি বাহিনী। সেদিন পাকিস্তানি সৈন্যদের একটি অংশ আত্মসমর্পণ করে, কিছু সৈন্য গুলি খেয়ে মারা যায়। আর কিছু সৈন্য আখাউড়া রেললাইন ধরে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার দিকে পালিয়ে যায়। কিছু তিতাস নদীতে ঝাঁপ দিয়ে মারা যায়।

পাকিস্তানি সেনারা এ সময় ছিল পলায়নপর। কারণ, ভারত বাংলাদেশের পক্ষে আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দিয়ে যুদ্ধ শুরু করে। বাংলাদেশের ভেতরে থাকা পাকিস্তানের বিমান ঘাঁটিতে মুক্তি ও মিত্রবাহিনী ভয়াবহ বোমাবর্ষণ শুরু করে। এর পর পাকিস্তানি বাহিনী বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সামনে সোজা করে দাঁড়াতে পারেনি।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর