ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তন ও বিভিন্ন পরিবেশগত কারণে বিশ্বজুড়ে বাড়ছে বায়ুদূষণ। এর নেতিবাচক প্রভাব থেকে রেহাই পাচ্ছে না বাংলাদেশও। দীর্ঘদিন ধরেই মেগাসিটি ঢাকার বাতাস দূষিত। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে বায়ুমান কিছুটা উন্নতি দেখা গেলেও বৃহস্পতিবার (৪ ডিসেম্বর) সকালে আবারও ঢাকার বায়ুর মান ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ পর্যায়ে পৌঁছেছে।
আন্তর্জাতিক বায়ুমান প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠান আইকিউএয়ার–এর বৃহস্পতিবার সকাল ৯টার সূচকে দেখা যায়, ঢাকার একিউআই স্কোর দাঁড়িয়েছে ৩০৪, যা ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ হিসেবে বিবেচিত হয়। এ স্কোর নিয়ে বিশ্বের দূষিত শহরের তালিকায় প্রথম স্থানে রয়েছে রাজধানী ঢাকা।
একই সময়ে ২৮৫ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে ভারতের রাজধানী দিল্লি। আর ২৩৬ স্কোর নিয়ে তৃতীয় স্থানে আছে দেশটির আরেক শহর কলকাতা—দুটোই ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’ বায়ুর তালিকায়।
বিশেষজ্ঞদের মতে, একিউআই সূচকে
- ০ থেকে ৫০ ভালো
- ৫১ থেকে ১০০ মাঝারি
- ১০১ থেকে ১৫০ সংবেদনশীল গোষ্ঠীর জন্য অস্বাস্থ্যকর
- ১৫১ থেকে ২০০ অস্বাস্থ্যকর
- ২০১ থেকে ৩০০ খুব অস্বাস্থ্যকর
- ৩০১ থেকে ৪০০ ঝুঁকিপূর্ণ
৩০১–৪০০ স্কোরকে ‘ঝুঁকিপূর্ণ’ ধরা হয়, যা নগরবাসীর জন্য গুরুতর স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি করতে পারে। বিশেষ করে শিশু, প্রবীণ, অসুস্থ ব্যক্তি ও গর্ভবতী নারীদের জন্য এ পর্যায়ের বায়ুদূষণ অত্যন্ত ক্ষতিকর। এ অবস্থায় বাসায় অবস্থান করা এবং বাইরের অপ্রয়োজনীয় কার্যক্রম সীমিত রাখার পরামর্শ দিয়েছে সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলো।
বিশ্বব্যাপী একিউআই নির্ধারণ করা হয় পাঁচ ধরনের দূষকের মাত্রা বিবেচনায়—পিএম১০, পিএম২ দশমিক ৫, নাইট্রোজেন ডাইঅক্সাইড (NO₂), কার্বন মনোক্সাইড (CO), সালফার ডাই–অক্সাইড (SO₂) এবং ওজোন (O₃)। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, বায়ুদূষণ দীর্ঘমেয়াদে শ্বাসকষ্ট, হৃদরোগ, ফুসফুসের জটিলতা–সহ নানা স্বাস্থ্যঝুঁকি বাড়ায়।
ঢাকার মতো জনবহুল শহরে দ্রুত বর্ধনশীল নির্মাণকাজ, যানবাহনের ধোঁয়া, শিল্পকারখানার নির্গমন এবং খোলা স্থানে আবর্জনা পোড়ানো বায়ুদূষণের অন্যতম বড় কারণ হিসেবে চিহ্নিত হয়ে আসছে।
পরিবেশ–বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কার্যকর নীতিমালা বাস্তবায়ন, কঠোর মনিটরিং এবং দূষণ নিয়ন্ত্রণে টেকসই উদ্যোগ ছাড়া বায়ুমান স্বাভাবিক অবস্থায় ফিরিয়ে আনা কঠিন হবে।