ব্রাহ্মণবাড়িয়ায়: জেলা জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) ৫ নেতার বিরুদ্ধে এক অন্তঃসত্ত্বা নারী সদস্যকে মারধর, অপমান ও সোনার চেইন ছিনিয়ে নেওয়ার অভিযোগে মামলা হয়েছে। মামলা করেছেন এনসিপি ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা শাখার সদস্য বিপাশা আক্তার, যিনি আড়াই মাসের অন্তঃসত্ত্বা। মঙ্গলবার তিনি সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট (দ্রুত বিচার) আদালতে অভিযোগ দায়ের করেন এবং আদালত তদন্তের জন্য সদর থানার ওসিকে নির্দেশ দেন।
মামলায় এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ, বিজয়নগরের প্রধান সমন্বয়কারী আমিনুল হক চৌধুরী, আখাউড়ার প্রধান সমন্বয়কারী ইয়াকুব আলী, সদস্য সাকিব মিয়া ও রতন মিয়াকে আসামি করা হয়েছে।
প্রায় এক মাস আগে বিপাশা তার স্বামীকে নিয়ে এনসিপির ঢাকা কার্যালয়ে গিয়ে মুখ্য সমন্বয়ক নাসীরুদ্দীন পাটোয়ারীর সঙ্গে ছবি তোলেন। ছবি দলীয় গ্রুপে পাঠানোর পর স্থানীয় কয়েকজন নেতা ক্ষুব্ধ হন এবং সাকিব মিয়া তাকে নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য প্রকাশ করেন। বিপাশা বিচার চাইলে নেতারা আরও ক্ষিপ্ত হন। অভিযোগে বলা হয়েছে, আতাউল্লাহ তাকে অনৈতিক প্রস্তাব দেন; তিনি রাজি না হওয়ায় অন্যদের দিয়ে তাকে অপদস্ত করার নির্দেশ দেন।
গত ২৯ নভেম্বর বিপাশা জেলা কার্যালয়ে অভিযোগ দিতে গেলে উপস্থিত কয়েকজন এনসিপি নেতা তাকে চড়-থাপ্পড় মারেন। অভিযোগ অনুযায়ী, ইয়াকুব আলী তার অন্তঃসত্ত্বা পেটে লাথি মারেন এবং তার গলা থেকে এক ভরি দুই আনা ওজনের সোনার চেইন ছিনিয়ে নেন। এ সময় বিপাশা ও তার স্বামীকে প্রাণনাশের হুমকিও দেওয়া হয়।
এদিকে ঘটনার একই দিনে দলীয় শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে এনসিপি জেলা কমিটি বিপাশাকে কারণ দর্শানোর নোটিশ পাঠায়। বিপাশার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন ধরেননি।
অভিযুক্ত ইয়াকুব আলী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘দলীয় কার্যালয়ে ভাড়া করা সন্ত্রাসী এনে আমাকে মারধর করা হয়েছে। পরে পুলিশ আমাকে উদ্ধার করেছে।’ তিনি আরও বলেন, ‘আমাকে মারধরের ঘটনায় বিপাশা ও তার স্বামীকে আসামি করে সদর থানায় মামলা করেছি।’
এনসিপির দক্ষিণাঞ্চলের যুগ্ম মুখ্য সংগঠক মোহাম্মদ আতাউল্লাহ বলেন, ‘আমাকে হেয় প্রতিপন্ন করতেই এই মামলা করা হয়েছে। অভিযোগ সত্য নয়।’
সদর থানার ওসি মোহাম্মদ আজহারুল ইসলাম বলেন, ‘বিষয়টি শুনেছি। তবে নথি এখনো থানায় আসেনি।’