যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিম কোর্ট জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব সীমিত করার ক্ষেত্রে প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্বাহী আদেশের বৈধতা পর্যালোচনায় রাজি হয়েছে।
শুক্রবার (৫ ডিসেম্বর) আদালত ঘোষণা দেয়, এ সংক্রান্ত একটি গুরুত্বপূর্ণ আপিল মামলার শুনানি আগামী বছরের জুনের দিকে হতে পারে। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
ট্রাম্প দ্বিতীয় মেয়াদে দায়িত্ব নেওয়ার পর জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব কঠোরভাবে সীমিত করার যে নির্বাহী আদেশ জারি করেন, তা সঙ্গে সঙ্গেই নিম্ন আদালতের আদেশে স্থগিত হয়ে যায়। এই আদেশ অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া কোনো শিশুর বাবা-মা যদি মার্কিন নাগরিক বা বৈধ স্থায়ী বাসিন্দা না হন, তবে সেই শিশুকে স্বয়ংক্রিয়ভাবে নাগরিকত্ব দেওয়া হবে না।
এই আদেশকে কেন্দ্র করে দেশজুড়ে একাধিক ফেডারেল আদালত স্থগিতাদেশ জারি করে জানায়, এটি সংবিধানের ১৪তম সংশোধনী, ফেডারেল আইন এবং সুপ্রিম কোর্টের পূর্ববর্তী রায় লঙ্ঘন করে। পরে ট্রাম্প এসব স্থগিতাদেশের বিরুদ্ধে সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন। গত জুনে সুপ্রিম কোর্ট নিম্ন আদালতগুলোর দেওয়া দেশব্যাপী স্থগিতাদেশ নিয়ে প্রশ্ন তুললেও জন্মসূত্রে নাগরিকত্ব নিষেধাজ্ঞার বৈধতা নিয়ে তখন কোনো চূড়ান্ত রায় দেয়নি।
এসিএলইউর জাতীয় আইনি পরিচালক সেসিলিয়া ওয়াং এক বিবৃতিতে বলেন, ‘কোনো প্রেসিডেন্টই সংবিধানের ১৪তম সংশোধনীর মৌলিক নাগরিকত্বের প্রতিশ্রুতি বদলাতে পারেন না। ১৫০ বছরের বেশি সময় ধরে এটি যুক্তরাষ্ট্রের আইন ও ঐতিহ্যের অংশ।’
১৪তম সংশোধনীতে বলা হয়েছে, ‘যুক্তরাষ্ট্রে জন্মগ্রহণকারী বা নাগরিকত্বপ্রাপ্ত এবং যুক্তরাষ্ট্রের বিচারাধীন সকল ব্যক্তি স্বয়ংক্রিয়ভাবে যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিক।’ ট্রাম্প প্রশাসন এই ব্যাখ্যার বিরোধিতা করে দাবি করছে, সংশোধনীর মূল উদ্দেশ্য ছিল মুক্তিপ্রাপ্ত দাসদের নাগরিকত্ব নিশ্চিত করা, অবৈধ অভিবাসী বা অস্থায়ী ভিসাধারীদের সন্তানদের নয়।
এই আদেশ কার্যকর হলে প্রতি বছর যুক্তরাষ্ট্রে জন্ম নেওয়া কয়েক হাজার শিশু স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব থেকে বঞ্চিত হবে। পাশাপাশি তারা খাদ্য সহায়তা, স্বাস্থ্য বিমা ও মেডিকেইডসহ বিভিন্ন সরকারি সামাজিক সেবা থেকেও বাদ পড়বে। এমনকি হাসপাতালের নিবিড় পরিচর্যায় (আইসিইউ) থাকা নবজাতকেরাও মেডিকেইড সুবিধা পাবে না।
উল্লেখ্য, যুক্তরাষ্ট্রসহ প্রায় ৩০টি দেশ নিজ ভূখণ্ডে জন্ম নেওয়া প্রায় সব শিশুকেই স্বয়ংক্রিয় নাগরিকত্ব দিয়ে থাকে।