সিলেট: ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের আমির ও চরমোনাই পীর সৈয়দ মো. রেজাউল করিম বলেছেন, ‘নির্বাচনের জন্য যারা পাগল হয়ে যাচ্ছিল, এখন ওরা নির্বাচনকে পেছানোর জন্য পাগল হয়ে গেছে। রাশি যখন বামে ঘোরে, তখন যত পরিকল্পনা সব বামেই যায়। আপনারা যত শয়তানি পরিকল্পনা করবেন, ততই বাংলাদেশের জনগণ থেকে আপনারা বিচ্ছিন্ন হবেন, কোনো সন্দেহ নেই।’
শনিবার (৬ ডিসেম্বর) বিকেলে সিলেটের আলিয়া মাদরাসা মাঠে ইসলামী ও সমমনা আট দলের বিভাগীয় সর্বশেষ সমাবেশে বিশেষ অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
রেজাউল করিম অভিযোগ করে বলেন, আজকে দুঃখের মধ্যে বলতে হয়, যে বাংলাদেশের মধ্যে ৫৩ বছর পর্যন্ত যারা আমাদেরকে জিম্মি করে রেখেছিল তাদেরও চরিত্র আজ আমরা দেখেছি। তারা তাদের নিজেদের কাছে নিজেরা নিরাপদ নয়। আজকে তারা নিজেরা নিজেদের খেয়ে ফেলছে।
তিনি আরও বলেন, আমার দুঃখ হয়, এত গুম হলো, যখন লাখ লাখ দলীয় নেতাকর্মীর জীবনকে বিপন্ন হলো, জেলের মধ্যে গেল। আমাদের দাবি ছিল জুলাই ৫ আগস্টের অভ্যুত্থান। দেশকে সুন্দর করার জন্য সংস্কার হবে। এ খুনীদের, গুমিদের, টাকা পাচারকারীদের দৃশ্যমান বিচার হবে। এরপরে লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড নির্বাচনের পরিবেশ তৈরি হবে। কিন্তু আমরা দেখে হতবাক। আজকে সংস্কারের ব্যাপারে বাধা, দৃশ্যমান বিচারের ব্যাপারে বাধা।
তিনি বলেন, আল্লাহ রাব্বুল আলামীন আমাদেরকে ৫ই আগস্ট স্বাধীনতা দান করেছেন। এই স্বাধীনতার ফসল যারা আমরা দেশপ্রেমিক রয়েছি, যারা আমরা জনতাপ্রেমী রয়েছি, যদি আমরা ভুল করে থাকি, যদি আমরা ব্যর্থ হই, যখন ইতিহাস আমাদের প্রজন্ম লিখবে, তখন কলঙ্কজনক ইতিহাস আমাদের জন্য লিখবে। এই জন্য আমি সকলকে আহবান জানাব, আসেন আমরা যারা দেশপ্রেমিক রয়েছি, ক্ষমতাপ্রেমিকদেরকে, চাঁদাবাজদেরকে আমাদের দেশের টাকা যারা বিদেশে পাঁচার করে, তাদেরকে আমরা না বলার মাধ্যমে আমরা বাংলার জমিন থেকে চিরতরে উৎখাত করে মাথা উঁচু করে দাঁড়াবার পরিবেশ তৈরি করতে হবে।
‘আজকে নির্বাচনের জন্য যারা পাগল হয়ে যাচ্ছিল। আজকে যখন তারা দেখেছে, আজকে বাংলাদেশের জনগণ বেসিকদের পক্ষে এবং জালেম চাঁদাবাজদের পক্ষে নয়, ওদের প্রত্যাবস্থান করেছে। এখন ওরা পাগল হয়ে গেছে, আজকে নির্বাচনকে আবার পিছাবার জন্য। কিন্তু আমরা পরিষ্কার বলব নির্বাচন পেছানো যাবে না।’
খেলাফত মজলিসের আমীর মাওলানা আব্দুল বাসিত আজাদের সভাপতিত্বে সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান।
ইসলামী ও সমমনা ৮ দল সিলেট জেলা ও মহানগর নেতৃবৃন্দের যৌথ সঞ্চালনায় অনুষ্ঠিত সমাবেশে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের আমির শায়খ মাওলানা মামনুল হক, খেলাফত মজলিসের কেন্দ্রীয় মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাদের, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল মাওলানা এটিএম মাছুম, ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের মহাসচিব অধ্যক্ষ প্রফেসর মাওলানা মুহাম্দ ইউনুছ, বাংলাদেশ খেলাফত মজলিসের সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা রেজাউল করিম জালালী, বাংলাদেশ খেলাফত আন্দোলনের আমির মাওলানা হাবীবুল্লাহ মিয়াজী, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির মাওলানা আব্দুল মজিদ আতাহারি, বাংলাদেশ ডেভোলাপমেন্ট পার্টি-বিডিপির সভাপতি অ্যাডভোকেট এ.কে.এম আনোয়ারুল হক চান, জামায়াতের কেন্দ্রীয় সহকারী সেক্রেটারী জেনারেল অ্যাডভোকেট এহসানুল মাহবুব জুবায়ের ও জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট-জাগপার সহ-সভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান।