ঢাকা: জামায়াতে ইসলামীর আমির ডা. শফিকুর রহমান বলেছেন, তাদের দল ব্যক্তিকেন্দ্রিক বা গোষ্ঠীকেন্দ্রিক রাজনীতি করে না; তারা জনগণের স্বার্থই সর্বাগ্রে গুরুত্ব দেয়। ধর্মের সঠিক চর্চা ও মূল্যবোধ ধারণ করাই জামায়াতের নীতি এবং ধর্মকে কখনোই রাজনৈতিক স্বার্থে ব্যবহার করা হয় না।
সোমবার (৮ ডিসেম্বর) ঢাকার ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) দূতাবাসে আট দেশের রাষ্ট্রদূতদের সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এসব কথা বলেন। বৈঠকে বাংলাদেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি, জাতীয় নির্বাচন, গণভোট আয়োজনের প্রক্রিয়া এবং রাজনৈতিক পরিবেশ নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা হয় বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে।
ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘ইইউ প্রতিনিধিরা জানতে চান, জাতীয় নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে হলে তা জনগণের জন্য কতটা চ্যালেঞ্জ তৈরি করতে পারে এবং নির্বাচনে অংশ নিতে জামায়াত কতটা প্রস্তুত। এ প্রসঙ্গে আমি বলেছি, একই দিনে দু’টি ভোট আয়োজন করা হলে সাধারণ মানুষ বিভ্রান্ত হতে পারে। ফলে বিশৃঙ্খলার সম্ভাবনা বাড়ে। তাই নির্বাচন ও গণভোট আলাদা দিনে করা হবে সবচেয়ে যুক্তিসঙ্গত পদক্ষেপ।’
জামায়াতের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা তুলে ধরে আমির বলেন, ক্ষমতায় গেলে তারা একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক বাংলাদেশ গড়তে চান, যেখানে কোনো রাজনৈতিক দলকে বাদ দেওয়া হবে না। দেশের স্থিতিশীলতা নিশ্চিতে সব দলের সঙ্গে সমন্বয় করার ওপর তিনি জোর দেন।
তার ভাষায়, ‘ক্ষমতায় যারা থাকবে তারা দুর্নীতি করবে না এবং দুর্নীতিকে প্রশ্রয়ও দেবে না- এটি প্রথম শর্ত। দ্বিতীয়ত, বিচারব্যবস্থায় কোনোরকম রাজনৈতিক হস্তক্ষেপ বরদাশতযোগ্য নয়।’ এই দুই নীতিতে যারা একমত হবেন, তাদের সঙ্গেই সরকার পরিচালনায় কাজ করতে আগ্রহী বলে জানান তিনি।
বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার অসুস্থতা কি রাজনৈতিক সংকট তৈরি করছে? এমন প্রশ্নের জবাবে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, ‘অসুস্থতা মানুষের নিয়ন্ত্রণে নয়। দেশবাসী তার সুস্থতার জন্য দোয়া করছেন।’ তবে কোনো ব্যক্তির স্বাস্থ্যগত অবস্থার কারণে রাষ্ট্রীয় গতিশীলতা থেমে থাকা উচিত নয় বলে তিনি মন্তব্য করেন।
ফেব্রুয়ারিতে নির্ধারিত জাতীয় নির্বাচন সময়মতো অনুষ্ঠিত হওয়া জরুরি উল্লেখ করে তিনি বলেন, ‘নির্বাচন সামান্য বিলম্বিত হলেও দেশ গভীর সংকটে পড়তে পারে।’ দেশের ভবিষ্যৎ নিরাপত্তা ও স্থিতিশীলতার স্বার্থে তিনি সব রাজনৈতিক পক্ষকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান।