বিশ্বে প্রথমবারের মতো অস্ট্রেলিয়া শিশুদের সুরক্ষার পদক্ষেপ হিসেবে ১৬ বছরের কম বয়সীদের জন্য সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করেছে। ফেসবুক, টিকটক, ইনস্টাগ্রামসহ বিশ্বের ১০টি বৃহত্তম প্ল্যাটফর্মে এখন আর অস্ট্রেলিয়ার ১৬ বছরের কম কোনো ব্যবহারকারী প্রবেশ করতে পারবে না।
মঙ্গলবার (৯ ডিসেম্বর) থেকে কার্যকর হওয়া নতুন আইনে বলা হয়েছে, এসব প্ল্যাটফর্ম ১৬ বছরের কম ব্যবহারকারী শনাক্ত ও মুছে ফেলতে ব্যর্থ হলে ৩৩ মিলিয়ন অস্ট্রেলিয়ান ডলার জরিমানা গুনতে হবে। সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার বরাতে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রধানমন্ত্রী অ্যান্থনি আলবানিজ বলেছেন, ‘অনেক সময় সামাজিক মাধ্যম মোটেও সামাজিক থাকে না। বরং বুলিং, মানসিক চাপ, প্রতারণা এবং অনলাইন শিকারিদের হাতিয়ার হয়ে ওঠে।’
আইন অনুযায়ী ফেসবুক, ইনস্টাগ্রাম, ইউটিউব, টিকটক, স্ন্যাপচ্যাট এবং রেডিট এই প্ল্যাটফর্মগুলো ১৬ বছরের কম বয়সী অস্ট্রেলিয়ানদের অ্যাকাউন্ট তৈরি বা বজায় রাখতে পারবে না। স্ট্রিমিং প্ল্যাটফর্ম কিক ও টুইচ, এবং বার্তা বোর্ড থ্রেডস ও এক্সকেও নিষিদ্ধ তালিকায় রাখা হয়েছে। তবে রোবলক্স, পিন্টারেস্ট ও হোয়াটসঅ্যাপকে আপাতত এই নিষেধাজ্ঞার বাইরে রাখা হয়েছে। সরকার জানিয়েছে, এই তালিকা ভবিষ্যতে পরিবর্তিত হতে পারে।
মেটা, ইউটিউবসহ বড় প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানগুলো এরই মধ্যে এই আইনকে অতিদ্রুত সিদ্ধান্ত বলে সমালোচনা করেছে। ইউটিউব দাবি করেছে, এই নিষেধাজ্ঞা শিশুদের আরও অন্ধকারাচ্ছন্ন ইন্টারনেটের দিকে ঠেলে দেবে।
তবে আইনি চ্যালেঞ্জও আসতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। রেডিট জানিয়েছে, তারা উচ্চ আদালতে নিষেধাজ্ঞা বাতিলের চেষ্টা চালাবে কি না, তা এখনো নিশ্চিত নয়। এরই মধ্যে সিডনিভিত্তিক ডিজিটাল ফ্রিডম প্রজেক্ট কিশোরদের সামাজিকমাধ্যমে ফিরিয়ে আনার দাবি জানিয়ে আইনি উদ্যোগ নিয়েছে।
উল্লেখ্য, মালয়েশিয়া আগামী বছর একই ধরনের নিষেধাজ্ঞা দেওয়ার পরিকল্পনা করছে। এছাড়া ইউরোপীয় কমিশন, ফ্রান্স, ডেনমার্ক, গ্রিস, রোমানিয়া ও নিউজিল্যান্ডও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারে ন্যূনতম বয়সসীমা নির্ধারণে আগ্রহ দেখিয়েছে।