ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পরে মেয়াদের মাঝামাঝি সময়ে পদত্যাগ করার পরিকল্পনা করছেন বলে জানিয়েছেন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন। তিনি বলেছেন, হাইকমিশনগুলোতে রাষ্ট্রপতির ছবি নামিয়ে ফেলায় আমি অপমানিত বোধ করেছি।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) আন্তর্জাতিক গণমাধ্যম রয়টার্সকে হোয়াটসঅ্যাপে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি এসব কথা বলেন।
রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি হিসেবে মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিন সশস্ত্র বাহিনীর সর্বাধিনায়ক হলেও তার ভূমিকা অনেকাংশে আনুষ্ঠানিক। মূলত নির্বাহী ক্ষমতা প্রধানমন্ত্রী এবং মন্ত্রিসভার হাতে ন্যস্ত থাকে।
তবে, ২০২৪ সালের আগস্ট মাসে যখন ছাত্রনেতৃত্বাধীন গণঅভ্যুত্থান দীর্ঘদিনের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে ভারতে (নয়াদিল্লি) পালিয়ে যেতে বাধ্য করে এবং সংসদ বিলুপ্ত হয়ে যায়, তখন রাষ্ট্রপতি মোহাম্মদ সাহাবুদ্দিনের পদটি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে। এই পরিস্থিতিতে তিনিই সর্বশেষ অবশিষ্ট সাংবিধানিক কর্তৃপক্ষ হিসেবে থেকে যান।
৭৫ বছর বয়সী সাহাবুদ্দিন ২০২৩ সালে হাসিনাপন্থী আওয়ামী লীগের মনোনয়নে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচিত হয়েছিলেন।
সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, ‘আমি চলে যেতে আগ্রহী। আমি বাইরে যেতে আগ্রহী।’ তিনি দাবি করেন, দায়িত্ব গ্রহণের পর এটিই গণমাধ্যমে তার প্রথম সাক্ষাৎকার।
রাষ্ট্রপতি সাহাবুদ্দিন বলেন, ‘যতক্ষণ না নির্বাচন অনুষ্ঠিত হচ্ছে, ততক্ষণ আমার চালিয়ে যাওয়া উচিত। সংবিধান-অনুযায়ী প্রাপ্ত রাষ্ট্রপতির পদের কারণেই আমি আমার অবস্থান বজায় রেখেছি।‘
রাষ্ট্রপতি জানান, ড. ইউনূস প্রায় সাত মাস ধরে তার সঙ্গে দেখা করেননি, তার প্রেস বিভাগকে তার কাছ থেকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে এবং গত সেপ্টেম্বরে সারা বিশ্বে বাংলাদেশের দূতাবাসগুলো থেকে তার প্রতিকৃতিগুলো সরিয়ে ফেলা হয়েছিল।
তিনি বলেন, ‘সব কনস্যুলেট, দূতাবাস এবং হাইকমিশনগুলোতে রাষ্ট্রপতির প্রতিকৃতি ছিল, রাষ্ট্রপতির ছবি ছিল। রাতারাতি হঠাৎ করে এটি বাতিল করা হয়েছে। ফলে মানুষের কাছে একটি ভুল বার্তা যায়, সম্ভবত রাষ্ট্রপতিকে সরিয়ে দেওয়া হচ্ছে। আমি এতে খুব অপমানিত বোধ করেছি।’
সাহাবুদ্দিন জানান, তিনি প্রতিকৃতি সরানোর বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টাকে চিঠি লিখেছিলেন, কিন্তু কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি। তিনি বলেন, ‘আমার কণ্ঠস্বর স্তব্ধ করে দেওয়া হয়েছে।’
ড. ইউনূসের প্রেস উপদেষ্টারা এ বিষয়ে মন্তব্যের জন্য তাৎক্ষণিকভাবে কোনো সাড়া দেননি।