ঢাকা: বিদেশি সুতার ডাম্পিং, দেশীয় সুতার উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি ও বৈশ্বিক প্রতিযোগিতার চাপে দেশের স্পিনিং শিল্প অস্তিত্ব সংকটে পড়েছে বলে দাবি করেছেন এ খাত সংশ্লিষ্টরা। সংকট মোকাবিলায় দেশীয় সুতায় তৈরি পোশাকে প্রণোদনা ১.৫ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ১০ শতাংশ করাসহ বেশ কিছু দাবি জানিয়েছেন তারা।
বৃহস্পতিবার (১১ ডিসেম্বর) জাতীয় প্রেস ক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানানো হয়। ‘স্পিনিং শিল্পে কর্মরত শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাবৃন্দ’ শীর্ষক ব্যানারে এ সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থাপিত অন্যান্য দাবির মধ্যে রয়েছে— বাতিল হওয়া রফতানি উন্নয়ন তহবিল (ইডিএফ) সুবিধা আগামী দুই বছরের জন্য পুনর্বহাল করা; শিল্পে স্থানীয় কাঁচামালের ব্যবহার বাধ্যতামূলকভাবে ৭০ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো; রিসাইকেল ও সাসটেইনেবল পণ্যের উৎপাদন উৎসাহিত করতে অতিরিক্ত ৫ শতাংশ প্রণোদনা প্রদান; আধুনিক যন্ত্রপাতি স্থাপনের জন্য ৫ শতাংশ সুদে ১০ বছর মেয়াদি বিশেষ ঋণ প্যাকেজ চালু; রপ্তানিকৃত পণ্যে গ্যাস ও বিদ্যুৎ বিলের ৩০ শতাংশ রিবেট; আমদানির ক্যাপাসিটি বাড়ানো ইত্যাদি। এছাড়া টাকার অবমূল্যায়নের কারণে কমে যাওয়া আমদানি সক্ষমতা পুনরুদ্ধারের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে সালমা গ্রুপের চিফ অপারেটিং অফিসার ইঞ্জিনিয়ার আজহার আলী বলেন, ’বৈদেশিক বাজারে অনেক দেশ সরকারি ভর্তুকির কারণে তুলনামূলক কম দামে সুতা রপ্তানি করায় বাংলাদেশে উৎপাদিত সুতা প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে। এর ফলে দেশে উৎপাদন খরচের চেয়ে কম দামে সুতা আমদানি হচ্ছে, যা কার্যত ডাম্পিংয়ের শামিল।’
তিনি বলেন, কোভিড-পরবর্তী মন্দা, ইউক্রেন যুদ্ধ, ডলার সংকট, জ্বালানি–বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি—এই সব মিলিয়ে গত কয়েক বছরে দেশের ৪০ শতাংশ স্পিনিং মিল উৎপাদন বন্ধ করে দিয়েছে। এতে প্রায় লক্ষাধিক শ্রমিক ও কর্মচারী বেকার হয়েছেন। যেসব কারখানা চলছে সেগুলোও ৫০–৬০ শতাংশ সক্ষমতায় উৎপাদনে রয়েছে। এমতাবস্থায় স্থানীয় শিল্পকে বাঁচাতে এবং বাজারে ন্যায্য প্রতিযোগিতা নিশ্চিত করতে সুতা আমদানিতে অ্যান্টি-ডাম্পিং ট্যাক্স বা সেইফগার্ড ডিউটি আরোপ এখন সময়ের দাবি।
উৎপাদন খরচ বাড়ার উল্লেখ করে আজহার আলী বলেন, ’পরপর তিন ধাপে গ্যাস–বিদ্যুতের দাম ৩৫০ শতাংশ বেড়ে গেলেও টেক্সটাইল ও ব্যাকওয়ার্ড ইন্ডাস্ট্রির পণ্যমূল্য সমন্বয় হয়নি। ফলে মিলগুলো ক্ষতির মুখে পড়েছে।’ এ অবস্থায় রফতানিমুখী কারখানার জন্য ৩০ শতাংশ বিল রিবেট দিয়ে দুই বছরের জন্য জরুরি প্রণোদনা দেওয়ার দাবি জানান তিনি।