ঢাকা: নানা নিত্যপণ্যের সরবরাহ বাড়ায় রাজধানীর বাজারে ধীরে ধীরে স্বস্তি ফিরছে ক্রেতাদের মধ্যে। নতুন আলু, পেঁয়াজ ও আমনের চাল বাজারে আসায় বেশ কিছু পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। ডিম ও মুরগির বাজারও রয়েছে স্থিতিশীল।
শীতের শুরুতে আগাম তোলা নতুন আলুর দাম সাধারণত কয়েক সপ্তাহ ১০০ টাকার ওপরে থাকে। কিন্তু এবার সেই চিত্র পালটেছে। মাত্র কয়েক দিনের মধ্যেই নতুন আলুর দাম ৫০ টাকার ঘরে নেমে এসেছে। চলতি সপ্তাহে ছোট আকারের নতুন আলু ৩৫ টাকা কেজিতেও পাওয়া যাচ্ছে। বিক্রেতারা বলছেন, বাজারে বেশি মজুত থাকায় পুরোনো আলুর দাম ২৫ টাকার মধ্যেই সীমাবদ্ধ, ফলে আগাম আলুর চাহিদা প্রত্যাশামতো হয়নি।
যদিও আলুর বাজার স্থিতিশীল, নতুন পেঁয়াজ ভালো দাম পাচ্ছে চাষিরা। বাজারে তিন ধরনের পেঁয়াজ পাওয়া যাচ্ছে- দেশি নতুন, দেশি পুরোনো ও আমদানি করা। নতুন দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ১১০–১৩০ টাকায়, আর পুরোনো দেশি পেঁয়াজ ১৩০–১৪০ টাকায়। ভারত থেকে আমদানি করা পেঁয়াজ মিলছে ১২০ টাকায়।
বিক্রেতাদের ধারণা, সরবরাহ বাড়লে আগামী সপ্তাহেই পেঁয়াজের দাম ১০০ টাকার নিচে নেমে আসবে। অন্যদিকে, আমদানির পরও পেঁয়াজের দাম কম না হওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন ক্রেতারা।
বাজারে এসেছে আমনের নতুন চাল। গুটি, স্বর্ণা, পাইজাম, ব্রি-২৮ ও ব্রি-২৯সহ কয়েকটি জাতের চালের সরবরাহ বাড়ায় দাম কেজিপ্রতি ১-২ টাকা কমেছে। খুচরা বাজারে নাজিরশাইল, মিনিকেট, জিরাশাইলসহ সরু চাল ৬৮-৭৮ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, যা গত সপ্তাহে ছিল ৭০-৮০ টাকা। নতুন গুটি স্বর্ণা বিক্রি হচ্ছে ৫০-৫৫ টাকায়।
মরিয়ম স্টোরের মালিক মো. ইউসুফ জানান, ধীরে ধীরে সরবরাহ বাড়ছে, ফলে চালের দাম আরও কমার সম্ভাবনা রয়েছে।
সবজির বাজারেও স্বস্তির হাওয়া। শিম ৬০-৮০ টাকা, বরবটি, করলা, বেগুন ৬০-৭০ টাকা, ঢ্যাঁড়স ও পটোল ৪০-৫০ টাকায় পাওয়া যাচ্ছে। ফুলকপি ও বাঁধাকপির দামও নেমে এসেছে ৩০-৪০ টাকায়।
ডিম ও মুরগির বাজার স্থিতিশীল রয়েছে। ফার্মের ডিম ডজন প্রতি ১১৫-১২০ টাকায়, ব্রয়লার মুরগি কেজিপ্রতি ১৫০-১৬০ টাকায় এবং সোনালি মুরগি ২৫০-২৭০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। পোলট্রি ব্যবসায়ীরা জানান, শীতে সবজির সরবরাহ বাড়লে ডিম-মুরগির চাহিদা কিছুটা কমে যায়, তাই দাম কমেছে।
তেল, চিনি, আটা ও মসুর ডালের দাম এ সপ্তাহে তেমন পরিবর্তন হয়নি। সয়াবিন তেলের দাম আগের সপ্তাহে লিটারপ্রতি ৬-৭ টাকা বেড়ে এখন ১৯৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
সামগ্রিকভাবে নিত্যপণ্যের বেশ কয়েকটি উপকরণের দাম কমায় বাজারে কিছুটা স্বস্তি ফিরে এসেছে বলে জানিয়েছেন ক্রেতা ও বিক্রেতারা।