পিরোজপুর: উচ্চ মুনাফার প্রলোভন দেখিয়ে দীর্ঘ ১৩ বছর ধরে প্রতারণার মাধ্যমে পিরোজপুরসহ দক্ষিণাঞ্চলের বিভিন্ন এলাকা থেকে শত কোটি টাকার বেশি অর্থ সংগ্রহ ও পাচারের অভিযোগের প্রাথমিক সত্যতা পেয়েছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। এ ঘটনায় সাতজন ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেছে সিআইডি।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান এ তথ্য নিশ্চিত করেন।
সিআইডির তদন্তে জানা যায়, ‘এহসান মাল্টিপারপাস কো-অপারেটিভ সোসাইটি লিমিটেড’ এবং ‘এহসান রিয়েল এস্টেট অ্যান্ড বিল্ডার্স লিমিটেড’ নামের দুটি প্রতিষ্ঠান ২০০৮ সাল থেকে নিজেদের বৈধ আর্থিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে পরিচয় দিয়ে পিরোজপুর, বরিশালসহ আশপাশের এলাকায় কার্যক্রম পরিচালনা করে আসছিল। প্রতিষ্ঠান দুটি উচ্চ মুনাফার আশ্বাস দিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে বিনিয়োগ সংগ্রহ করত।
দীর্ঘ অনুসন্ধানে সিআইডি মোট ১০১ কোটি ৪৫ লাখ ৯৪ হাজার ২৩৮ টাকা সংগ্রহের প্রমাণ পেয়েছে। তদন্তে আরও উঠে আসে, সংগৃহীত অর্থ প্রতিষ্ঠান মালিকরা ও তাদের ঘনিষ্ঠ সহযোগীরা স্থাবর ও অস্থাবর সম্পত্তি ক্রয়সহ ব্যক্তিগত বিভিন্ন প্রয়োজনে ব্যবহার করে আত্মসাৎ করেছেন।
সিআইডি জানায়, প্রতিষ্ঠান দুটির প্রধান পরিচালক ছিলেন রাগীব আহসান ও তার স্ত্রী সালমা আহসান। তাদের সঙ্গে সরাসরি যুক্ত ছিলেন আবুল বাশার খান, খায়রুল ইসলাম, শামীম হাসান, মাহমুদুল হাসান ও নাজমুল ইসলাম।
প্রতারণার শিকার বিনিয়োগকারীরা পিরোজপুর সদর থানাসহ বিভিন্ন থানায় প্রায় শতাধিক মামলা দায়ের করেন। এসব অভিযোগ যাচাই-বাছাই শেষে সিআইডি প্রাথমিক সত্যতা পেয়ে পিরোজপুর সদর থানায় একটি মামলা দায়ের করে। দীর্ঘ তদন্ত শেষে সাত ব্যক্তি ও দুটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। অভিযুক্তরা বর্তমানে বিচারাধীন অবস্থায় কারাগারে রয়েছেন।
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দিন খান বলেন, রাষ্ট্রের অর্থ পাচারে জড়িত ব্যক্তি ও চক্রগুলোর বিরুদ্ধে সিআইডির অভিযান ও অনুসন্ধান কার্যক্রম অব্যাহত থাকবে।