ঢাকা: দিল্লির পরিকল্পিত ষড়যন্ত্রের ভিত্তিতে ভারতীয়রা আমাদের বুদ্ধিজীবী তথা জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করে জাতিকে মেধাশূণ্য করার পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল ও সাবেক এমপি অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার।
রোববার (১৪ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় রাজধানীর ফার্মগেটের কৃষিবিদ ইনস্টিটিউট হলরুমে দলটির ঢাকা মহানগরী উত্তর শাখা আয়োজিত শহিদ বুদ্ধিজীবী দিবসের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, স্বাধীনতার ৫৪ বছর পরও বুদ্ধিজীবী হত্যার রহস্য এখনো রহস্যাবৃতই রয়ে গেছে। স্বাধীনতার পর কোনো সরকারই এ হত্যাকাণ্ডের বিচারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। রাজনৈতিক প্রতিপক্ষকে ঘায়েল করার জন্য সব দোষ জামায়াতের ঘাড়ে চাপিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা হাসিল করা হয়েছে। এ নির্মম হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে ভারত এবং তাদের এদেশীয় অ্যাজেন্ট জড়িত ছিল তা ভারতীয় বিশিষ্ট ব্যাক্তি ও লেখকদের লেখনি থেকে প্রমাণ পাওয়া যায়। মূলত, ১৪ ডিসেম্বর পাক বাহিনীর আত্মসমর্পনের কথা থাকলেও ভারতীয় পরিকল্পনায় তা ২ দিন বিলম্বিত হয়। আর এ দু’দিনে আমাদের শিক্ষক, কবি, সাহিত্যিক, প্রকৌশলী, আইনবিদসহ জাতির শ্রেষ্ঠ সন্তানদের হত্যা করা হয়েছিল।
তিনি বলেন, জুলাই বিপ্লবকে নস্যাৎ করার জন্যই জুলাই বিপ্লবের অন্যতম সিপাহসালার ওসমান হাদির ওপর বর্বর হামলা চালানো হয়েছে। অথচ তাকে বারবার প্রাণনাশের হুমকি দেওয়া হলেও সরকার তার নিরাপত্তার জন্য কোনো কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেনি। সরকারের পক্ষে জনগণের নিরাপত্তার বিদেশ থেকে সর্বাধুনিক প্রযুক্তি আমদানির কথা বলা হলেও এসব কখনোই জনগণের কল্যাণে আসেনি বরং আওয়ামী ফ্যাসিবাদী আমলে এসব প্রযুক্তি জনগণের বিরুদ্ধে ব্যবহার করে জুলুম-নির্যাতন ও গণহত্যা চালানো হয়েছে।
তিনি ভারতের সঙ্গে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক বিষয়ে বলেন, বৃহৎ প্রতিবেশি দেশ ভারতের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক হবে সমতা ও নায্যতার ভিত্তিতে। আমরা দেশটির সঙ্গে প্রভূ-ভৃতের সম্পর্ক চাই না। আমাদের দেশের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে ভারতের অনাকাঙ্ক্ষিত হস্তক্ষেপও কাম্য নয়। তিনি ওসমান হাদির উন্নত চিকিৎসা, জুলাই যোদ্ধা ও জাতীয় নেতাদের নিরাপত্তা জোরদারের জন্য সরকারের প্রতি দাবি জানান। অন্যথায় আগামী নির্বাচন ঝুঁকির মুখে পড়বে।
সভাপতির বক্তব্যে মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিন বলেন, জাতি হিসেবে যারা আমাদেরকে মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে দিতে চায়নি, তারাই এই নির্মম ও নিষ্ঠুর হত্যাকাণ্ডের নেপথ্যের অপশক্তি। কিন্তু অতীব পরিতাপের বিষয় যে, বিজয়ের ৫ দশক অতিক্রান্ত হলেও এ হত্যাকাণ্ডের কুশীলবরা আজও ধরা-ছোঁয়ার বাইরে রয়ে গেছে। স্বাধীন দেশে বিশিষ্ট বুদ্ধিজীবী, সাংবাদিক ও কথা সাহিত্যিক শহীদুল্লাহ কায়সারের ভাই জহির রায়হানের হত্যার রহস্যের জট এখনো খোলেনি।
কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের আমির মোহাম্মদ সেলিম উদ্দিনের সভাপতিত্বে এবং কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমানের সঞ্চালনায় সভায় বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সহকারি সেক্রেটারি জেনারের মাওলানা আব্দুল হালিম, ঢাকা-১২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য পদপ্রার্থী সাইফুল আলম খান মিলন, কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য মোবারক হোসাইন প্রমুখ।