ঢাকা: চব্বিশের জুলাই-আগস্ট আন্দোলন ঘিরে কুষ্টিয়ায় ছয়জনকে হত্যাসহ উসকানি ও ষড়যন্ত্রের অভিযোগে দায়ের করা মানবতাবিরোধী অপরাধের মামলায় জাসদ সভাপতি হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে পঞ্চম দিনের সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) সকাল সোয়া ১১টার পর আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনাল-২–এর চেয়ারম্যান বিচারপতি নজরুল ইসলাম চৌধুরীর নেতৃত্বে তিন সদস্যের বিচারিক প্যানেলে সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়।
প্যানেলের অপর দুই সদস্য হলেন— অবসরপ্রাপ্ত জেলা ও দায়রা জজ মো. মঞ্জুরুল বাছিদ এবং জেলা ও দায়রা জজ নূর মোহাম্মদ শাহরিয়ার কবীর।
আজ মামলার চতুর্থ সাক্ষী হিসেবে সিআইডির ডিজিটাল ফরেনসিক ল্যাবের উপপরিদর্শক শাহেদ জোবায়ের লরেন্স অবশিষ্ট জবানবন্দি দিচ্ছেন। তার সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে তাকে জেরা করবেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী।
এর আগে, গত ৮ ডিসেম্বর তিনি জবানবন্দি শুরু করলেও সময় শেষ হওয়ায় তা অসম্পূর্ণ থাকে।
রাষ্ট্রপক্ষের হয়ে শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন প্রসিকিউটর মিজানুল ইসলাম। তার সঙ্গে রয়েছেন প্রসিকিউটর ফারুক আহাম্মদ, আবদুস সাত্তার পালোয়ানসহ অন্যান্যরা। এদিন সকালে কারাগার থেকে পুলিশ প্রহরায় হাসানুল হক ইনুকে ট্রাইব্যুনালে হাজির করা হয়। তার উপস্থিতিতেই সাক্ষ্যগ্রহণ চলছে।
এর আগে, ৭ ডিসেম্বর মামলার তৃতীয় দিনের সাক্ষ্য ও জেরা শেষ হয়। ওইদিন জব্দ তালিকার সাক্ষী হিসেবে তদন্ত সংস্থার রেকর্ড সংরক্ষণকারী এসআই মো. কামরুল হোসেন জবানবন্দি দেন। দ্বিতীয় দিনের জেরা শেষ হয় গত ২ ডিসেম্বর। সেদিন বিশেষ তদন্ত কর্মকর্তা ও প্রসিকিউটর তানভীর হাসান জোহাকে জেরা করেন আসামিপক্ষের আইনজীবী মনসুরুল হক চৌধুরী। তিনি ১ ডিসেম্বর জবানবন্দি দেন।
মামলার প্রথম সাক্ষী মো. রাইসুল হক একই দিনে জবানবন্দি দেন। তিনি জানান, জুলাই-আগস্ট আন্দোলনের সময় কুষ্টিয়া শহরে ছাত্র-জনতার ওপর হামলায় হাসানুল হক ইনু প্রত্যক্ষভাবে উসকানি ও নির্দেশ দেন। ওই ঘটনায় তার কপালে গুলি লাগে। তিনি বেঁচে ফিরলেও ছয়জন নিহত হন। সাক্ষ্য শেষে তিনি ইনুর সর্বোচ্চ শাস্তি দাবি করেন।
এর আগে, গত ৩০ নভেম্বর মামলার সূচনা বক্তব্য উপস্থাপন করেন চিফ প্রসিকিউটর মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম। একই দিন আনুষ্ঠানিক অভিযোগ গঠনের বিরুদ্ধে ইনুর করা রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে তা খারিজ করেন ট্রাইব্যুনাল। গত ২ নভেম্বর তার বিরুদ্ধে আটটি অভিযোগ গঠনের মাধ্যমে বিচার শুরুর আদেশ দেওয়া হয়।
উল্লেখ্য, ২০২৪ সালের ৫ আগস্ট কুষ্টিয়া শহরের বিভিন্ন স্থানে ছাত্র-জনতার ওপর গুলি চালানোর ঘটনায় শ্রমিক আশরাফুল ইসলাম, সুরুজ আলী বাবু, শিক্ষার্থী আবদুল্লাহ আল মুস্তাকিন, উসামা, ব্যবসায়ী বাবলু ফরাজী ও চাকরিজীবী ইউসুফ শেখ নিহত হন। এ ঘটনায় আহত হন আরও অনেকে। পরবর্তীতে তদন্ত সংস্থার প্রতিবেদনের ভিত্তিতে হাসানুল হক ইনুর বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইব্যুনালে আট দফা অভিযোগ দাখিল করে প্রসিকিউশন।