চট্টগ্রাম ব্যুরো: ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে সামনে জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপারের নেতৃত্বে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ মহড়া অনুষ্ঠিত হয়েছে। মহড়া পরবর্তী সভায় জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা নির্বাচন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী সদস্যদের কোনো স্বার্থের কাছে মেরুদণ্ড ও বিবেক বিক্রি না করার আহ্বান জানান।
সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) বিকেলে নগরীর চট্টগ্রাম সার্কিট হাউজ প্রাঙ্গন থেকে গাড়িবহর নিয়ে রাউজান উপজেলায় যান আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা। এতে জেলা প্রশাসক, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারাও ছিলেন। এরপর রাউজান উপজেলা পরিষদ প্রাঙ্গনে আইনশৃঙ্খলাবিষয়ক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়।
সভায় জানানো হয়, জাতীয় সংসদ নির্বাচনে রাউজান উপজেলায় মোট ৯৫টি ভোটকেন্দ্রে প্রায় সাড়ে ৩ লাখ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করবেন। ভোটারদের নিরাপত্তা ও নির্বিঘ্ন ভোটগ্রহণ নিশ্চিত করতে সকল প্রস্তুতি দ্রুততম সময়ের মধ্যে শেষ করার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসক ও পুলিশ সুপার।
জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ জাহিদুল ইসলাম মিঞা বলেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকারের অন্যতম প্রধান লক্ষ্য হলো একটি সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন আয়োজন করা। কিন্তু এটা শুধু প্রশাসনের দায়িত্ব নয়, এটি বাংলাদেশের প্রতি আমাদের সম্মিলিত দায়বদ্ধতা। আসন্ন নির্বাচনকে কেবল ক্ষমতার পালাবদল হিসেবে দেখার সুযোগ নেই, এটি আগামী ১০০ বছরের বাংলাদেশের রূপরেখা নির্ধারণের একটি গুরুত্বপূর্ণ গণভোট। এই নির্বাচনের মাধ্যমে জনগণ নির্ধারণ করবে তারা কী ধরনের বাংলাদেশ চায়।’
১৯৫২, ১৯৭১, ১৯৯০ ও ২০২৪ সালে জনগণের আত্মত্যাগের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, ‘মানুষ আর রক্তপাত নয়, শান্তিতে বসবাস করতে চায়। আমরা এমন একটি রাষ্ট্র গড়তে চাই যেখানে ব্যক্তি নয়, শক্তিশালী ও নিরপেক্ষ ব্যবস্থা রাষ্ট্র পরিচালনা করবে। বিশ্বের সামনে বাংলাদেশকে একটি দায়িত্বশীল রাষ্ট্র হিসেবে উপস্থাপন করাই আমাদের লক্ষ্য।’
নির্বাচন সংশ্লিষ্টদের উদ্দেশে জেলা প্রশাসক বলেন, ‘কোনো স্বার্থের কাছে যেন কেউ নিজের মেরুদণ্ড ও বিবেক বিক্রি না করেন—ভোটসংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের প্রতি আমি এই আহ্বান জানাই। প্রশাসন কঠোর হতে চায় না, তবে পরিস্থিতি সৃষ্টি করলে কঠোর হতে বাধ্য হবে, আমি সতর্ক করে দিচ্ছি।’
নির্বাচনকালীন সময়ে পুলিশ সম্পূর্ণ নিরপেক্ষ ভূমিকা পালন করবে জানিয়ে চট্টগ্রামের পুলিশ সুপার মোহাম্মাদ নাজির আহমেদ খাঁন বলেন, ‘কোনো অবস্থায় রাউজানে ভোটগ্রহণের পরিবেশে কেউ বিঘ্ন সৃষ্টি করতে পারবে না। নির্বাচনকে সামনে রেখে যৌথবাহিনীর অভিযান চলমান রয়েছে। অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী, বালু সন্ত্রাসী ও অন্যান্য দুষ্কৃতিকারীদের বিরুদ্ধে নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করা হচ্ছে। গুজব ছড়িয়ে পরিস্থিতি অস্থিতিশীল করার অপচেষ্টার বিষয়ে সতর্ক থাকতে হবে।’
সভায় অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট সৈয়দ মাহবুবুল হক, জেলা নির্বাচন কর্মকর্তা বশির আহমেদ, রাউজান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও), এস এম রাহাতুল ইসলাম এবং রাউজান থানা থানার অফিসার ইনচার্জ উপস্থিত ছিলেন।