ইবি: ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র শরিফ ওসমান হাদিকে হত্যার প্রতিবাদে বিক্ষোভ করেছে ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) শিক্ষার্থীরা।
বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটক সংলগ্ন খুলনা-কুষ্টিয়া মহাসড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
এর আগে রাত ১১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের জিয়া মোড় থেকে বিক্ষোভ মিছিল বের করে শিক্ষার্থীরা। মিছিল নিয়ে পুরো ক্যাম্পাসের প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটক সংলগ্ন কুষ্টিয়া-খুলনা মহাসড়ক অবরোধ করে। এতে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, ছাত্র ইউনিয়ন, বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন ও ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের নেতৃবৃন্দসহ সহস্রাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেয়। এসময় তারা দ্রুত হাদির খুনিদের বিচার ও ব্যর্থতার দায় নিয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার পদত্যাগের দাবি করেন।
এদিকে, রাত সাড়ে ১২টার দিকে হত্যার প্রতিবাদে নারী শিক্ষার্থীরা আবাসিক হল থেকে মিছিল নিয়ে বের হয়। মিছিলটি ক্যাম্পাসের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে প্রধান ফটক প্রদক্ষিণ করে একই জায়গায় এসে শেষ হয়। এ সময় তারা হত্যার প্রতিবাদে নানা স্লোগান দেয়।
মিছিলে শিক্ষার্থীরা ‘নারায়ে তাকবীর, আল্লাহু আকবর’, ‘দিল্লি না ঢাকা, ঢাকা ঢাকা’, ‘গোলামী না আজাদী, আজাদী আজাদী’, ‘ভারতের আগ্রাসন, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘ইনকিলাব ইনকিলাব, জিন্দাবাদ জিন্দাবাদ’, ‘শহিদের রক্ত, বৃথা যেতে দেব না’, ‘তুমি কে আমি কে, হাদি হাদি’, ‘হাদি ভাইয়ের রক্ত, বৃথা যেতে দিবো না’, ‘লীগ পাবো যেখানে, ধোলাই হবে সেখানে’, ‘একশন একশন, ডাইরেক্ট একশান’, ‘আপোষ না সংগ্রাম, সংগ্রাম-সংগ্রাম’, ‘খুনীদের ফাঁসি চাই’ ও ‘খুন হয়েছে আমার ভাই, খুনিদের রক্ষা নাই’সহ বিভিন্ন স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
প্রতিবাদ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, গত বছরের ৫ আগস্টের পরে আমাদের অসংখ্য জুলাই যোদ্ধাকে হত্যা করেছে সন্ত্রাসীরা। সর্বশেষ আমাদের বিপ্লবী হাদিকে হত্যা করা হয়েছে। হাদি আমাদের সবসময় আধিপত্যবাদ বিরোধিতা ও ইনসাফ শিখিয়ে গেছেন। তিনি সাংস্কৃতিক আগ্রাসন ভাঙতে কাজ করেছেন। এইসবের বিরুদ্ধে আমাদের সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিকভাবে জেগে উঠতে হবে। হাদিকে আজ হত্যা করা হয়েছে।
শিক্ষার্থীরা বলেন, ‘আমরা আজ শুধু হাদি হত্যার বিচারের জন্য আসিনি, আমরা বাংলাদেশ থেকে আধিপত্যবাদের কবর দিতে রাজপথে এসেছি। হাদির খুনিদের অতিদ্রুত ভারত থেকে ফিরিয়ে এনে বিচার করতে হবে। পতিত আওয়ামী লীগের সন্ত্রাসীদের বিচার করতে হবে। যারা আওয়ামী লীগের জন্য কাজ করে যাচ্ছে আপনারা সাবধান হয়ে যান। ইন্টেরিম সরকার হাদিকে নিরাপত্তা দিতে ব্যর্থ হয়েছে। আপনারা নিরাপত্তা দিতে না পারলে ক্ষমতা ছেড়ে দিন।’
উল্লেখ্য, গত ১২ ডিসেম্বর জুমার নামাজের পর রাজধানীর বিজয়নগরে বক্স কালভার্ট রোডে শরিফ ওসমান বিন হাদিকে গুলি করা হয়। পরে গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেওয়া হয়। সেখানে অপারেশন শেষে এভারকেয়ার হাসপাতালে পাঠানো হয়। পরবর্তীতে উন্নত চিকিৎসার জন্য গত সোমবার (১৫ ডিসেম্বর) তাকে সিঙ্গাপুরে পাঠানো হয়। সেখানে সিঙ্গাপুর জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি বৃহস্পতিবার (১৮ ডিসেম্বর) রাত সাড়ে ৯টার দিকে মারা যান।