Sunday 21 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

অচল টগরা–চরখালী ফেরিঘাট
শীত এলেই জেগে ওঠে ডুবোচর, নাব্য সংকটে চরম দুর্ভোগ

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৮:০৪ | আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২৫ ১০:১৩

ডুবোচর জেগে ওঠায় পিরোজপুরের টগরা–চরখালী ফেরিঘাটে যাত্রীদের ভোগান্তি। ছবি: সারাবাংলা

পিরোজপুর: শীতের কুয়াশা ভেদ করে নদীর পাড়ে সারি সারি বাস, ট্রাক ও পণ্যবাহী গাড়ি দাঁড়িয়ে আছে। ইঞ্জিন বন্ধ করে উৎকণ্ঠা নিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে চালকরা। কিন্তু বলেশ্বর ও কঁচা নদীর মোহনায় জেগে ওঠা ডুবোচরের কারণে থমকে গেছে ফেরি চলাচল। পিরোজপুরের টগরা–চরখালী ফেরিঘাটে এমন দৃশ্য এখন নিত্যদিনের।

দক্ষিণাঞ্চলের নদীবহুল জেলা পিরোজপুরে সড়ক যোগাযোগের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ ভরসা এই ফেরিঘাট। বরগুনা, পাথরঘাটা, মঠবাড়িয়া, ভান্ডারিয়া, পিরোজপুর, বাগেরহাট ও খুলনা থেকে ঢাকাগামী অন্তত ৮ থেকে ১০টি গুরুত্বপূর্ণ রুটের হাজার হাজার যাত্রী ও শতাধিক যানবাহন প্রতিদিন এই ফেরির ওপর নির্ভরশীল। তবে শীত মৌসুম এলেই নদীর নাব্য সংকটে ভোগান্তি চরম আকার ধারণ করে।

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, ভাটার সময় ডুবোচরের কারণে ঘণ্টার পর ঘণ্টা নদীর দুই পাড়ে আটকে থাকতে হচ্ছে যাত্রী ও চালকদের। কেউ অফিসে পৌঁছাতে দেরি করছেন, কেউ আবার সময়মতো মালামাল পৌঁছাতে না পারায় পড়ছেন আর্থিক ক্ষতির মুখে। মাঝ নদীতে ফেরি আটকে পড়লে দুর্ভোগ আরও বাড়ে।

মঠবাড়িয়ার বাসিন্দা যাত্রী সাইফুল ইসলাম বলেন, ‘ভাটার সময় নদীতে চর জেগে ওঠে। কখন পার হতে পারব তার কোনো নিশ্চয়তা থাকে না। যাত্রীদের দুর্ভোগ দেখার যেন কেউ নেই।’

ট্রাকচালক মোস্তফা বলেন, ‘ডুবোচরে ফেরি আটকে গেলে মালামাল নিয়ে বিপাকে পড়তে হয়। সময়মতো গন্তব্যে পৌঁছাতে না পারলে বড় ধরনের আর্থিক ক্ষতি হয়। দ্রুত নদী খনন জরুরি।’

নদীতে ট্রলারে যাত্রী পারাপারকারী আউয়াল শেখ জানান, দিনে দুইবার ভাটার সময় পাঁচ থেকে ছয় ঘণ্টা কাজ বন্ধ রাখতে হয়। এতে আয় অর্ধেকে নেমে এসেছে। সংসার চালানো কষ্টকর হয়ে পড়েছে।

আরেক যাত্রী রিয়াদুল ইসলাম বলেন, ‘এই রুটে প্রতিদিন কয়েক হাজার গাড়ি চলাচল করে। ভাটার সময় গাড়ির দীর্ঘ সিরিয়াল পড়ে যায়। দ্রুত স্থায়ী সমাধান প্রয়োজন।’

স্থানীয় বাসিন্দাদের অভিযোগ, প্রতি বছর শীত মৌসুমে একই সমস্যার পুনরাবৃত্তি হলেও স্থায়ী কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। অথচ এই ফেরিঘাট ঢাকার সঙ্গে পিরোজপুরের একটি বড় অংশের যোগাযোগ রক্ষা করার পাশাপাশি মংলা বন্দরের সঙ্গে পণ্য পরিবহনের গুরুত্বপূর্ণ মাধ্যম।

এ বিষয়ে পিরোজপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপবিভাগীয় প্রকৌশলী আবু জাফর মো. রাশেদ খান বলেন, টগরা-চরখালী ফেরিঘাটের দুই পাশের নদী খননের জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডের মেকানিক্যাল ডিভিশনে চিঠি পাঠানো হয়েছে। পরবর্তী সময়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।

এদিকে যাত্রী ও স্থানীয়দের দাবি, নিয়মিত ড্রেজিংয়ের মাধ্যমে দ্রুত নাব্যতা সংকট নিরসন করা না হলে এই গুরুত্বপূর্ণ নৌপথে চলাচলকারী মানুষের দুর্ভোগ আরও বাড়বে।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর