নোয়াখালী: জেলার বিচ্ছিন্ন দ্বীপ হাতিয়া উপজেলায় চর দখলকে কেন্দ্র করে দুই গ্রুপের গোলাগুলিতে ৫ জন নিহত হয়েছেন। এ সময় গুলিবিদ্ধসহ উভয় পক্ষের অন্তত ১০ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (২৩ ডিসেম্বর) সকালে জাগলার চর এলাকায় সামছুদ্দিন ও আলা উদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
নিহতরা হলেন- সামছুদ্দিন ওরপে কোপা সামছু গ্রুপের সামছুদ্দিন, তার ছেলে আলাউদ্দিন ও আলাউদ্দিন গ্রুপের আলা উদ্দিন। বাকি নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। এর মধ্যে আলাউদ্দিনের মরদেহ ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, জাগলার চরে বর্তমানে কয়েক শত ভূমিহীন পরিবার বসবাস করছে। চরের অর্ধেক জমি খাস এবং অর্ধেক ব্যক্তি মালিকানা বা বয়ার সম্পত্তি। সরকার এখন পর্যন্ত কাউকে এ জমি বন্দোবস্ত দেয়নি। এ সুযোগে ৫ আগস্টের পর জাহাজমারা ইউনিয়নের কোপা সামছু বাহিনী জাগলার চরের বেশ কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর সুখচর ইউনিয়নের আলাউদ্দিন বাহিনী জাগলার চরের জমির দখল নিতে মরিয়া হয়ে উঠে। একপর্যায়ে আলাউদ্দিন বাহিনী আরও বেশি দামে কিছু জমি বিক্রি করে। এরপর দুটি গ্রুপ আলাদাভাবে চরের জমি বিক্রির চেষ্টা চালায়।
অভিযোগ রয়েছে, চর দখলে যুক্ত ডাকাত আলাউদ্দিন সুখচর ইউনিয়ন বিএনপির সাবেক সভাপতি বেলায়েত হোসেন সেলিম, আওয়ামী লীগ নেতা নিজাম মেম্বার, বিএনপি নেতা নবীর ঘনিষ্ঠ। তারা কোপা সামছু বানিহীকে চর থেকে বিতাড়িত করে চরের জমি দখলে নিতে ডাকাত আলাউদ্দিনের বাহিনীর সঙ্গে আঁতাত করে। এ নিয়ে দুটি গ্রুপ একাধিকবার বিরোধে জড়ায়।
মঙ্গলবার সকাল ১০টার দিকে চরের জমি দখলকে কেন্দ্র করে কোপা সামছু ও আলাউদ্দিন গ্রুপের মধ্যে এ সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। একপর্যায়ে উভয় পক্ষ মুখোমুখি অবস্থান নিয়ে বন্দুকযুদ্ধে লিপ্ত হয়। এতে আলা উদ্দিনসহ উভয় পক্ষের বেশ কয়েকজন গুলিবিদ্ধ হয়। গোলাগুলিতে টিকতে না পেরে সামছুদ্দিনের বেশিরভাগ লোক পালিয়ে যায়। এক পর্যায়ে সামছুদ্দিন ও তার ছেলে মোবারকসহ ৫ জনকে কুপিয়ে ও পিটিয়ে নিহত করে। বিকেলে আলা উদ্দিনকে ২৫০ শয্যা নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে নিয়ে এলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করে। ধারণা করা হচ্ছে, নিহতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক স্থানীয় জানান, এ ঘটনায় অন্তত ৫ জনের অধিক নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছে অন্তত ১০জন। ঘটনা সকালে হলেও পুলিশ ও কোস্টগার্ড ঘটনাস্থলে গিয়েছে বিকেল সাড়ে ৪টায়।
মঙ্গলবার বিকেল ৪ টার দিকে নিহতের বিষয়টি নিশ্চিত করে হাতিয়া থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. সাইফুল আলম জানান, এ ঘটনায় ৫ জন নিহত হয়েছে। ঘটনাস্থল অনেক দুর্গম হওয়ায় তারা বিকেলে ঘটনাস্থলে যান। ময়নাতদন্ত শেষে মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।