Tuesday 30 Dec 2025
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ডিসির পদত্যাগের দাবি
নীলফামারীর ফটোকপি মনোনয়ন জমা নিয়ে উত্তেজনা

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট
৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:০৯ | আপডেট: ৩০ ডিসেম্বর ২০২৫ ২৩:১০

জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান।

নীলফামারী: নীলফামারী-২ আসনের ধানের শীষের প্রার্থী শাহরিন ইসলাম তুহিন নির্ধারিত সময়ের মধ্যে মনোনয়নপত্রের মূল কাগজপত্র জমা দিতে ব্যর্থ হওয়ায় আইন অনুযায়ী তার মনোনয়ন বাতিলের দাবি উঠেছে। তবে এ দাবির পরও জেলা প্রশাসক, রিটার্নিং কর্মকর্তা ও নির্বাচন কর্মকর্তারা কার্যকর পদক্ষেপ না নেওয়ায় তারা নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন-এমন অভিযোগ করেছেন নীলফামারী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি ও নীলফামারী-২ আসনে জামায়াত মনোনীত সংসদ সদস্য প্রার্থী অ্যাডভোকেট আল ফারুখ আব্দুল লতিফ এবং হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাছিদুল ইসলাম।

এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে সোমবার রাত থেকে জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ নায়িরুজ্জামান এর পদত্যাগের দাবিতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। একই সঙ্গে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনেও উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়ে।

বিজ্ঞাপন

ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার (২৯ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় জেলা রিটার্নিং অফিসারের কার্যালয়ের সামনে জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেন ওই আসনের দাঁড়িপাল্লা ও হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থীরা।

সংবাদ সম্মেলনে দাঁড়িপাল্লা প্রতীকের প্রার্থী ও নীলফামারী জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট আল ফারুখ আব্দুল লতিফ বলেন, “বিষয়টি সম্পূর্ণ আইনবিরোধী। সন্ধ্যা ৬টা পার হয়ে গেলেও ধানের শীষের প্রার্থী মনোনয়নপত্রের মূল কপি জমা দিতে পারেননি। এরপরও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা ফটোকপি মনোনয়নপত্র গ্রহণ করেছেন।”

তিনি আরও অভিযোগ করেন, “ফটোকপি মনোনয়নপত্র গ্রহণের বিষয়ে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তা, নির্বাচন কর্মকর্তা, এডিসি (জেনারেল)সহ সংশ্লিষ্টদের কাছে জানতে চাইলে তাঁরা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। বরং নীরব থেকে ফটোকপি গ্রহণের কাজেই ব্যস্ত ছিলেন। প্রশাসনের এমন একপাক্ষিক আচরণে আমরা অনাস্থা প্রকাশ করে লিখিত অভিযোগ দিয়েছি। প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে আশঙ্কা প্রকাশ করে প্রতিবাদস্বরূপ দরখাস্ত জমা দিয়ে আমরা চলে আসি।”

সংবাদ সম্মেলনে হাতপাখা প্রতীকের প্রার্থী অ্যাডভোকেট হাছিদুল ইসলাম বলেন, “এখানে উপস্থিত আমরা দুজনই প্রার্থী এবং আইনজীবী। আমরা জানি, ফটোকপি মনোনয়নপত্র গ্রহণ করার এখতিয়ার রিটার্নিং কর্মকর্তার নেই। অনতিবিলম্বে আজকের মধ্যেই এই মনোনয়ন বাতিল করতে হবে। আজ যদি তা না করা হয়, তাহলে আমরা উচ্চ আদালতের দ্বারস্থ হব। প্রশাসনের বর্তমান অবস্থা দেখে সামনে নির্বাচন সুষ্ঠুভাবে পরিচালনা করা যাবে কি না—তা নিয়ে আমি গভীরভাবে শঙ্কিত।”

এদিকে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমেও এ ইস্যুতে উত্তেজনা ছড়িয়ে পড়েছে। নীলফামারী জেলা প্রশাসকের পদত্যাগ দাবি করে অনেকে পোস্ট দিচ্ছেন।

কবি ও গীতিকার জাকারিয়া আল হোসাইন তাঁর ব্যক্তিগত ফেসবুক আইডিতে লিখেছেন, “কোনো সুযোগ নেই আইন; আইন। হয় নীলফামারীর ডিসি পদত্যাগ করবেন, নয়তো প্রার্থিতা বাতিল করতে হবে। লাউড অ্যান্ড ক্লিয়ার!”

অন্যদিকে ইসলামিক বক্তা আরিফ আল মামুন পোস্ট করেছেন, “আওয়াজ তুলুন। অবিলম্বে নীলফামারীর দলকানা ডিসিকে অপসারণ করতে হবে এবং তুহিনের মনোনয়নপত্র বাতিল করতে হবে।”

বিভিন্ন ফেসবুক পেজ ও গ্রুপে অনেকে লিখেছেন, “নীলফামারী সদর ২ আসনে বিএনপি প্রার্থী জনাব শাহরিন ইসলাম তুহিনের নমিনেশন পেপার নির্ধারিত সময় পরে এবং মূল নমিনেশন পেপার না দিয়ে ফটোকপি জমা দিয়ে নির্বাচনী আইন অমান্য করলেও মাননীয় জেলা প্রশাসক সেটাকে সাদরে গ্রহণ করেন জামায়াত এবিষয়ে জানতে চাইলে কোনো কথাই তিনি না বলে তার নিরপেক্ষতা হারিয়েছেন। তাই আগামী ১২ ফেব্রুয়ারী ২০২৬ এর জাতীয় নির্বাচন সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করার জন্য সদর ২ আসনের অনেকেই জনাব নায়িরুজ্জামানের পদত্যাগ চাই।

‘অবৈধভাবে বিএনপির প্রার্থীর মনোনয়ন জমা নেওয়ায় নীলফামারীর জেলা প্রশাসকের পদত্যাগ ও বিএনপির প্রার্থীর নমিনেশন বাতিল করতে হবে। শেরপুরে একজন প্রার্থী ৫ মিনিট লেট করায় তার মনোনয়ন জমা নেয়া হয়নি। সেখানে এই ডিসি ২ ঘণ্টা পরে জমা নিয়েছে সেটাও ফটোকপি।’

এ বিষয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার পক্ষ থেকে কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর