ঢাকায় ডেঙ্গু রোগী ৬৮০ জন, সচেতনতা হতে বলছে আইইডিসিআর
১৮ জুলাই ২০১৮ ২২:৩৩
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ডেঙ্গু রোগে আক্রান্ত হয়ে এ বছর এখন পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন ৬৮০ জন রোগী। ডেঙ্গুর প্রকোপ কমাতে জনসাধারণকে সচেতন থাকার কথা বলছে রোগতত্ত্ব, রোগ নিয়ন্ত্রণ ও গবেষণা প্রতিষ্ঠান (আইইডিসিআর)। প্রতিষ্ঠানটি বলছে, এবারের মৌসুমে ভারি বর্ষণে এডিস মশাবাগিত রোগ ব্যাপক হারে দেওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। তাই সবাইকে সচেতন থাকতে হবে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে হবে।
বুধবার (১৮ জুলাই) গণমাধ্যমে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‘বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর তথ্য পাওয়া যাচ্ছে। জানুয়ারি থেকে এখন পর্যন্ত ঢাকার বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে ৬৮০ জন ডেঙ্গু আক্রান্ত রোগীর চিকিৎসা নেওয়ার তথ্য পাওয়া গেছে। তবে এখন পর্যন্ত কোনো হাসপাতালে চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগী ভর্তির তথ্য পাওয়া যায়নি। এডিস মশাবাহিত রোগের প্রতিরোধ ও বৃদ্ধি রোধকল্পে জরুরি ভিত্তিতে পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।’
আইইডিসিআর, স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা, স্বাস্থ্য শিক্ষা ব্যুরোসহ স্বাস্থ্য অধিদফতর ও স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট বিভাগসমূহ বর্তমান পরিস্থিতি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করছে এবং প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিচ্ছে।
এতে আরো বলা হয়, তাদের নেওয়া পদক্ষেপগুলো হচ্ছে, ঢাকা শহরের সব হাসপাতাল, সব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালগুলো, দেশের জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের সব হাসপাতালের বহির্বিভাগ ও অন্তঃবিভাগের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের দৈনিক প্রতিবেদন পাঠানোর জন্য নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের কারণ, লক্ষণসমূহ ও প্রতিরোধ সংক্রান্ত বিভিন্ন জনসচেতনতামূলক লিফলেট তৈরি ও বিতরণ করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত তথ্য ও শিক্ষামূলক উপকরণসমূহ আইইডিসিআর ওয়েবসাইটে হালনাগাদ করা হয়েছে।
ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া রোগের চিকিৎসা সংক্রান্ত জাতীয় নির্দেশিকা আইইডিসিআর-এর ওয়েবসাইটে পাওয়া যাবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনকে মশক নিধন কার্যক্রম আরো জোরদার করাতে অনুরোধ জানানো হয়েছে। সেই সঙ্গে ঢাকা সিটি করপোরেশনকে জনসচেতনতামূলক কার্যক্রম এবং জনগণের অংশগ্রহণে মশক উৎসস্থল ও বংশবৃদ্ধির স্থানসমূহ পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখার সমন্বিত কর্মসূচি নিতে অনুরোধ করা হয়েছে।
প্রতিষ্ঠানটি বলছে, ডেঙ্গু চিকিৎসার ন্যাশনাল গাইড লাইন আপডেট করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতাল/প্রতিষ্ঠানে (ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, মুগদা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতাল, ঢাকা শিশু হাসপাতাল ও পপুলার মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল) ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়ার ব্যবস্থাপনা বিষয়ে ডাক্তারদেরকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। ঢাকা উত্তর এবং দক্ষিণ সিটি করপোরেশন এলাকায় মৌসুম পূর্ব, মৌসুম ও মৌসুমোত্তর এডিস মশার তিনটি কীটতাত্ত্বিক জরিপ শেষ হয়েছে।ঢাকা শহরে একটি ডেঙ্গু প্রিভেলেন্স সার্ভে সম্পন্ন করা হয়েছে। স্বাস্থ্য অধিদফতরের রোগ নিয়ন্ত্রণ শাখা হযরত শাহজালাল আর্ন্তজাতিক বিমানবন্দরে এডিস মশা শনাক্তকরণে একটি জরিপ করেছে।
ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশনে এবং সিটি করপোরেশনের বিভিন্ন ওয়ার্ডের ডেঙ্গু ও চিকুনগুনিয়া বিষয়ে অবহিতকরণ সভা করা হয়েছে। জনসচেতনতা বাড়াতে প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক মিডিয়ায় সর্তকতামূলক বার্তা, জাতীয়/স্থানীয় দৈনিক পত্রিকায় প্রচার ইত্যাদি কার্যক্রম হাতে নেওয়া হয়েছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন এলাকায় এডিস মশা নিধনে সামাজিক সচেতনতা আন্দোলন পরিচালনা করা হচ্ছে। ঢাকা মহানগরীর বিভিন্ন সরকারি এবং বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে ডেঙ্গু রোগ শনাক্তকরণে ডেঙ্গু টেস্ট কিট বিতরণ করা হয়েছে।
এর আগে ২০১৭ সালে ঢাকা মহানগরীতে চিকুনগুনিয়া রোগের প্রকোপ দেখা দিয়েছিল। ঢাকায় অবস্থিত বিভিন্ন হাসপাতাল থেকে আইইডিসিআর’র পাওয়া তথ্য অনুযায়ী চিকিৎসা নেওয়া সম্ভাব্য চিকুনগুনিয়া ও চিকুনগুনিয়া পরবর্তী আর্থ্রালজিয়া রোগীর সংখ্যা ছিল (১২ মে থেকে ২৮ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত) ১৩ হাজার ৮১৪ জন এবং আইইডিসিআর-তে রক্ত পরীক্ষায় নিশ্চিত চিকুনগুনিয়া আক্রান্ত রোগীর সংখ্যা হিসাব করা হয় ১ হাজার ৩ জন। এছাড়া ২০১৭ সালে আনুমানিক ডেঙ্গু রোগীর সংখ্যা ছিল ২ হাজার ৭৬৯ জন।
সারাবাংলা/ইএইচটি/এটি
** দ্রুত খবর জানতে ও পেতে সারাবাংলার ফেসবুক পেজে লাইক দিয়ে রাখুন: Sarabangla/Facebook