ফেসবুকে মন্ত্রীর ‘মানহানি’, ৫৭ ধারায় ছাত্রলীগকর্মী কারাগারে
২৮ জুলাই ২০১৮ ২১:১১
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ফেসবুকে দেওয়া একটি স্ট্যাটাসের ভিত্তিতে তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ ধারায় দায়ের হওয়া মামলায় গ্রেফতারের পর কারাগারে পাঠানো হয়েছে মোহাইমিনুল ইসলাম রাহিম নামে এক ছাত্রলীগ কর্মীকে। স্ট্যাটাসটির মাধ্যমে প্রবাসী কল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি’র প্রতিষ্ঠিত হাজেরা তজু ডিগ্রি কলেজ এবং মন্ত্রীর ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ন করা হয়েছে অভিযোগ করে মামলাটি দায়ের হয়েছে।
শনিবার (২৮ জুলাই) সকালে চট্টগ্রাম নগরীর হামজারবাগ এলাকার বাসা থেকে রাহিমকে গ্রেফতার করেছে চান্দগাঁও থানা পুলিশ।
চান্দগাঁও থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আবুল বাশার সারাবাংলাকে বলেন, ‘মাননীয় মন্ত্রী নূরুল ইসলাম বিএসসি স্যারের সুনাম ক্ষুন্ন করে স্ট্যাটাস দেওয়ার অভিযোগে মামলা হওয়ার পর আমরা মোহাইমিনুল ইসলাম রাহিমকে গ্রেফতার করেছি। আইজিপি স্যারের অনুমতিক্রমে আমরা মামলাটি গ্রহণ করে তাকে গ্রেফতার করি। বিকেলে তাকে আদালতে হাজিরের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচদিনের রিমান্ড চেয়েছি। রোববার শুনানি হবে।’
হাজেরা তজু কলেজের কর্মকর্তা আব্দুল করিমের দায়ের করা মামলার আরজিতে বলা হয়েছে, গত ২৮ জুন দুপুর ১২টা ৫০ মিনিটে মোহাইমিনুলসহ ১০-১২ জন কলেজে অনধিকার প্রবেশ করেন। তারা অধ্যক্ষকে না পেয়ে উপাধ্যক্ষের কক্ষে গিয়ে একাদশ শ্রেণীর ভর্তি ফি নিয়ে কৈফিয়ত তলব করেন। এ সময় তারা কলেজের ভেতরে উত্তেজনামূলক স্লোগান দেন। ৩০ জুন বাদি মোহাইমিনুলের মন্ত্রীপুত্র মুজিবকে জড়িয়ে মোহাইমিনুলের স্ট্যাটাস দেখতে পান।
বাদি আরজিতে উল্লেখ করেন, ‘মোহাইমিনুল ইসলাম রাহিম মিথ্যা ও বানোয়াট স্ট্যাটাস দিয়ে কলেজের এবং মাননীয় মন্ত্রী মহোদয়ের ব্যক্তিগত, পারিবারিক, রাজনৈতিক ও সামাজিক ভাবমূর্তি ক্ষুন্ন করেছেন।’
বাদির আরজি তথ্যপ্রযুক্তি আইনের ৫৭ (১) ধারায় গ্রহণ করে চান্দগাঁও থানা।
মোহাইমিনুল চট্টগ্রাম সরকারি সিটি কলেজের ডিগ্রি পাশ কোর্সের শেষ বর্ষের ছাত্র। তিনি ছাত্রলীগের সক্রিয় কর্মী বলে সারাবাংলাকে জানিয়েছেন সিটি কলেজ ছাত্র সংসদের সহ-সভাপতি রাজীব হাসান রাজন।
রাজন সারাবাংলাকে বলেন, ‘রাহিম আমাদের খুবই সক্রিয় এবং সাংগঠনিকভাবে দক্ষ একজন কর্মী। সিটি কলেজ ছাত্রলীগের কমিটিতে তার বড় পদে আসার সম্ভাবনা ছিল। এইচএসসিতে ভর্তির ক্ষেত্রে অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে মহানগর ছাত্রলীগের একটি কর্মসূচিতে যোগ দিতে সে হাজেরা তজু কলেজে গিয়েছিল। সেখান থেকে ফিরে সে তার অভিমত ফেসবুকে লিখেছে। এতে মন্ত্রী মহোদয়ের সম্মানহানি হয়েছে উল্লেখ করে মামলা হয়েছে।’
তিনি বলেন, মাননীয় মন্ত্রী চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগের একজন সিনিয়র নেতা। সেই হিসেবে রাহিম মন্ত্রী মহোদয়েরও কর্মী। নিজের কর্মীকে জেলমুক্ত করার জন্য মন্ত্রী মহোদয় নিজেই ব্যবস্থা নেবেন বলে আমরা আশা করি।
এদিকে মোহাইমিনুলকে গ্রেফতারের প্রতিবাদে শনিবার দুপুরে সিটি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ হয়েছে।
সারাবাংলা/আরডি/একে