Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

বাসায় যেতে অটোরিকশায় উঠে তাসফিয়া চলে যায় পতেঙ্গায়


২৯ জুলাই ২০১৮ ২০:২৮

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।

চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীতে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনের রহস্যজনক মৃত্যুর ঘটনায় তার বন্ধু আদনান মির্জাকে দুইঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। এসময় আদনানের কাছ থেকে বেশকিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।

রোববার (২৯ জুলাই) চট্টগ্রাম আদালত ভবনে নগর পুলিশের সহকারী কমিশনার (প্রসিকিউশন) কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদের কক্ষে আদনানকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী এসময় সমাজসেবা অধিদফতরের একজন কর্মকর্তা ‍উপস্থিত ছিলেন।

সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, জিজ্ঞাসাবাদে আদনান জানিয়েছে- ঘটনার দিন (১ মে) দুপুরে আদনান ও তাসফিয়া ঘুরতে বের হয়। তারা প্রথমে নগরীর সার্সন রোডে ওয়ার সিমেট্রিতে যায়। সেখানে কিছুক্ষণ ঘোরাঘুরির পর যান ষোলশহর দুই নম্বর গেইট এলাকায় ওক অ্যান্ড রোল নামে একটি রেস্টুরেন্টে। সেটি বন্ধ ছিল। এরপর তারা যান একই এলাকায় ইরান্তে নামে আরেকটি রেস্টুরেন্টে। বসার জায়গা না পেয়ে সেখান থেকে চলে যান নগরীর গোলপাহাড় মোড়ে চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে।

চায়না গ্রিলে বসে থাকাবস্থায় আদনানের বন্ধু আসিফ মিজান তাকে ফোন দিয়ে জানান- তাসফিয়ার মা তাসফিয়াকে খুঁজছেন, তাকে দ্রুত বাসায় যেতে বলেছেন। এরপর আদনান তাসফিয়াকে রেস্টুরেন্টের নিচ থেকে বাসায় যাবার জন্য একটি অটোরিকশা ঠিক করে দেয়। নিজে আরেকটি অটোরিকশায় করে বাসায় চলে যায়। এরপর তাসফিয়া কেন এবং কিভাবে পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকত এলাকায় গেছে, সেটার বিষয়ে কিছুই জানে না বলে জিজ্ঞাসাবাদে দাবি করেছে আদনান।

বিজ্ঞাপন

জিজ্ঞাসাবাদকারী নগর গোয়েন্দা পুলিশের সহকারী কমিশনার (বন্দর) আসিফ মহিউদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমরা মূলত তাসফিয়াকে বহনকারী অটোরিকশা চালকের বিষয়ে আদনানের কাছে তথ্য চেয়েছিলাম। আদনান বলেছে-সে বাসায় যাবার জন্য তাসফিয়াকে অটোরিকশা ঠিক করে দিয়েছিল। পতেঙ্গায় যাবার বিষয়ে সে কিছুই জানে না। এছাড়া আরও কিছু গুরুত্বপূর্ণ তথ্য দিয়েছে। আমরা সেগুলো যাচাইবাছাই করছি।

সহকারী পুলিশ কমিশনার কাজী শাহাবুদ্দিন আহমেদ সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমার কক্ষে দুপুর ১টা থেকে ৩টা পর্যন্ত দুইঘণ্টা আদনান মির্জাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়েছে। এরপর তাকে আবারও গাজীপুরে কিশোর সংশোধনাগারে নেওয়া হয়েছে।’

গত ২ মে সকালে নগরীর পতেঙ্গায় নেভাল একাডেমির অদূরে ১৮ নম্বর ঘাট এলাকায় কর্ণফুলী নদীর তীরে তাসফিয়া আমিনের (১৬) মরদেহ পায় পুলিশ। প্রথমে পরিচয় নিশ্চিত না হলেও দুপুরে পরিবারের লোকজন থানায় গিয়ে মরদেহ শনাক্ত করেন।

তাসফিয়া কক্সবাজার জেলার টেকনাফ উপজেলার ডেইলপাড়া এলাকার মো. আমিনের মেয়ে। চট্টগ্রাম নগরীর ও আর নিজাম রোডে তাদের বাসা। সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্রী।

পরিবার ও পুলিশের ভাষ্য অনুযায়ী, ১ মে বিকেলে বন্ধু আদনান মির্জার সঙ্গে দেখা করতে যাওয়ার পর তাসফিয়া আর বাসায় ফেরেনি। মরদেহ উদ্ধারের পর ২ মে রাতেই পুলিশ তাসফিয়ার বন্ধু আদনান মির্জাকে আটক করে।

৩ মে তাসফিয়ার বাবা বাদী হয়ে পতেঙ্গা থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। ওই মামলার আসামিরা হলেন, গ্রেফতার হওয়া তাসফিয়ার বন্ধু ও এলিমেন্টারি স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র আদনান মির্জা (১৬), সানশাইন গ্রামার স্কুলের নবম শ্রেণির ছাত্র শওকত মিরাজ ও আসিফ মিজান, আশেকানে আউলিয়া ডিগ্রি কলেজের এইচএসসির ছাত্র ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম এবং কথিত যুবলীগ নেতা মো. ফিরোজ ও তার সহযোগী সোহায়েল ওরফে সোহেল।

বিজ্ঞাপন

আদনান, শওকত, আসিফ ও ইকরাম নগরীর মুরাদপুর এলাকার ‘রিচ কিডস’ নামে একটি কিশোর গ্যাংয়ের সদস্য। ফিরোজ তাদের কথিত বড় ভাই। এই ঘটনায় ফিরোজ, আদনান ও আসিফ মিজান বর্তমানে কারাগারে আছে।

সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ

আদনান তাসফিয়া হত্যা পতেঙ্গা স্কুলছাত্রী

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর