মহাসড়ক অবরোধ করে নর্থ সাউথের ছাত্র পায়েল ‘হত্যার’ প্রতিবাদ
৩ আগস্ট ২০১৮ ১৩:৫৬
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক অবরোধ করে নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সাইদুর রহমান পায়েল মৃত্যুর প্রতিবাদ জানিয়েছেন নিহতের স্বজন, সহপাঠী ও বিভিন্ন সামাজিক সংগঠনের প্রতিনিধিরা। এসময় তারা পায়েলের মৃত্যুর সাথে জড়িত পরিবহন শ্রমিকদের বিচার দাবি করেন। শুক্রবার (০৩ আগস্ট) সকাল ১১টায় নগরীর সিটি গেইট এলাকায় সন্দ্বীপ অ্যাসোসিয়েশন চট্টগ্রামের ডাকা এই কর্মসূচিতে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার কয়েক’শ মানুষ ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে অবরোধ তৈরি করেন।
চট্টগ্রাম নগর পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার(ট্রাফিক) কুসুম দেওয়ান সারাবাংলাকে বলেন, অবরোধের কারণে ২০ মিনিটের মতো মহাসড়কে যানবাহন চলাচল বন্ধ ছিল। আজ মহাসড়কে এমনিতেই গাড়ি কম। তারপরও অবরোধের কারণে পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়। পরে অবরোধকারীরা সরে যান। তবে অপ্রীতিকর কোন ঘটনা ঘটেনি।
অবরোধ চলাকালে বক্তব্য রাখেন চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মোস্তাক আহমেদ, দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম ব্যুরো প্রধান সারোয়ার সুমন, চট্টগ্রাম উত্তর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি রাজীবুল আহসান সুমন, মানবাধিকার কর্মী আমিনুল হক বাবু এবং পায়েলের স্বজনরা।
এসময় বক্তারা বলেন, পায়েলকে নৃশংসভাবে হত্যার বিচারের দাবিতে আমরা শান্তিপূর্ণভাবে আন্দোলন করে যাচ্ছি। আমরা কোথাও একটি ঢিলও ছুঁড়িনি। আমরা প্রশাসনের প্রতি আস্থাশীল। কিন্তু যারা এই হত্যাকাণ্ড ঘটিয়েছে, সেই হানিফ পরিবহন এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত ন্যূনতম সহানুভূতি পর্যন্ত দেখায়নি। সামান্যতম আন্তরিকতাও প্রদর্শন করেনি। আমরা হানিফ পরিবহনের বাস বর্জনের জন্য দেশের সাধারণ মানুষকে আহ্বান জানাচ্ছি।
স্থানীয় আকবর শাহ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো.জসিম উদ্দিন সারাবাংলাকে বলেন, অবরোধে মিছিল নিয়ে আসার সময় কে বা কারা হানিফ পরিবহনের কাপড়ের ব্যানার লক্ষ্য করে ঢিল ছুঁড়েছে। তবে বাস কাউন্টারের কোন ক্ষতি হয়নি। শান্তিপূর্ণভাবে কর্মসূচি শেষ করে তারা চলে গেছেন।
নর্থ সাউথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিবিএ পঞ্চম সেমিস্টারের ছাত্র পায়েল চট্টগ্রামের হালিশহরের গোলাম মাওলার ছেলে। ২১ জুলাই রাতে হানিফ পরিবহনের (নং ৯৬৮৭) বাসে চট্টগ্রাম থেকে ঢাকায় আসছিলেন। ভোর রাতে মুন্সীগঞ্জের গজারিয়া এলাকা থেকে তিনি নিখোঁজ হন। ২৩ জুলাই সকালে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গজারিয়া উপজেলার ভাটেরচর সেতুর নিচে খালে তার লাশ পাওয়া যায়। এ ঘটনায় তার মামা গোলাম সোরয়ার্দী বিপ্লব তিন জনকে আসামি করে গজারিয়া থানায় হত্যা মামলা করেন।
পরে পুলিশ হানিফ পরিবহনের বাসের সুপারভাইজার জনিকে মঙ্গলবার রাতে ঢাকার মতিঝিল এলাকা এবং বুধবার ঢাকার আরামবাগ থেকে চালক জামাল হোসেন এবং হেলপার মো. ফয়সালকে গ্রেপ্তার করে।
২৬ জুলাই চালক জামাল হোসেন মুন্সীগঞ্জের একটি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন। পুলিশের দেওয়া তথ্যমতে, চালক জবানবন্দিতে জানিয়েছেন- বাসের অটো দরজার সাথে ধাক্কা লেগে পায়েল রাস্তায় পড়ে যায়। এতে তার নাক মুখ দিয়ে রক্ত বের হতে থাকলে মারা গেছে ভেবে তাকে পাশের ভাটেরচর সেতু থেকে নিচের খালে ফেলে দিয়ে গাড়ি চালিয়ে তারা ঢাকায় চলে আসেন।
সারাবাংলা/আরডি/এনএইচ
আরও পড়ুন,
আমার ছেলেকে পরিকল্পিতভাবে হত্যা করা হয়েছে : পায়েলের বাবা
পায়েলের খুনিদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন