আজও রাজপথে শিক্ষার্থীরা
৪ আগস্ট ২০১৮ ১১:১৬
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা: নিরাপদ সড়কের দাবিতে আজও ঢাকার বিভিন্ন পয়েন্টে অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বাসচাপায় দুই শিক্ষার্থী মারা যাওয়ার ঘটনায় শিক্ষার্থীরা শনিবার (৪ আগস্ট) সকাল থেকে সপ্তমদিনের মতো কর্মসূচি পালন করছে।
শিক্ষার্থীরা উত্তরা হাউজ বিল্ডিং থেকে জসিম উদ্দীন রোডে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নিয়েছে। সকাল সাড়ে ১০টার পর থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা জড়ো হতে থাকে। তারা রাস্তায় অবস্থান নিয়ে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান দিচ্ছে। এছাড়া আজমপুর, হাউজ বিল্ডিং থেকে খণ্ড খণ্ড মিছিল এসে পৌঁছাচ্ছে।
মতিঝিলে অবস্থান নিয়েছে নটরডেম, মতিঝিল সেন্ট্রাল কলেজ, আরামবাগ স্কুল অ্যান্ড কলেজ, মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজ এবং মতিঝিল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। এদের হাতে রয়েছে ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ স্লোগান সংবলিত ব্যানার, ফেস্টুন, প্লেকার্ড। এরা মতিঝিল শাপলা চত্বর এলাকায় ট্রাফিক নিয়ন্ত্রণেও কাজ করছে। তারা প্রতিটি গাড়ির লাইসেন্স এবং ফিটনেস যাচাই করছে।
ফার্মগেট মোড়েও অবস্থান নিয়েছে শিক্ষার্থীরা। সকাল থেকে ফার্মগেট ও আশেপাশের বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা এখানে জড়ো হন। ফার্মগেটে অবস্থান নেওয়া শিক্ষার্থীরা কোনো লাইসেন্স যাচাই করছে না। তবে তারা যান চলাচলের সুবিধার্তে তিনটি লেন তৈরি করেছে। প্রথম লেন তৈরি করা হয়েছে বাইসাইকেল, মোটরসাইকেলের জন্য; দ্বিতীয় লেন তৈরি করা হয়েছে সাধারণ যান চলাচলের জন্য এবং তৃতীয় লেন জরুরি সেবায় নিয়োজিত যানবাহনের জন্য।
ধানমন্ডির সায়েন্সল্যাব মোড়েও বেলা ১১টার দিকে অবস্থান নেয় শিক্ষার্থীরা। এ সময় রাস্তা অবরোধ করে রেখেছে তারা। এতে বন্ধ হয়ে গেছে ওই এলাকায় যান চলাচল।
রাজারবাগ পুলিশ লাইনের সামনে বৃষ্টি উপেক্ষা করে নিরাপদ সড়কের দাবিতে মিছিল করছে রাজারবাগ পুলিশ লাইন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষার্থীরা। পাশাপশি তারা সড়কে শৃঙ্খলা আনতে স্বেচ্ছাসেবক হিসেবে কাজ করছে।
এছাড়া রাজধানীর মতিঝিল, শাহবাগ ও রামপুরাতে অবস্থান নিয়েছে ্ আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
ছাত্র-ছাত্রীদের অবস্থান নেওয়া পয়েন্টগুলোয় বিপুল সংখ্যক পুলিশ মোতায়েন রয়েছে।
গত ২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের অদূরে বিমানবন্দর সড়কে বাসচাপায় রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। ওইদিন জাবালে নূর পরিবহনের একটি বাস তাদের চাপা দেয়।
নিহতরা হলো দিয়া খানম মীম ও আব্দুল করিম। এ সময় বেশ কয়েকজন শিক্ষার্থী গুরুতর আহত হয়।
এ ঘটনায় রাজপথে নেমে ৯ দফা দাবি জানায় শিক্ষার্থীরা। এছাড়া শিক্ষার্থীরা রাস্তায় নেমে আন্দোলন শুরু করেছে।
বুধবার (১ আগস্ট) বিকেলে বাস মালিক ও শ্রমিকদের সঙ্গে বৈঠক করে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার কথা জানান স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে বৃহস্পতিবার (২ আগস্ট) সারাদেশের সকল শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ছুটি ঘোষণা করে। এরপরও বৃহস্পতিবার শিক্ষার্থীরা আন্দোলন করে।
নিহত দুই পরিবারকে ২০ লাখ টাকা করে সহায়তা দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা।
সরকারের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন ক্ষমতাসীন দলের নেতারাও।
দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাসের পরও শিক্ষার্থীরা সপ্তম দিনের মধ্যে রাস্তায় নেমেছে।
সারাবাংলা/এমএইচ/কেকে/একে
আরও পড়ুন-
উত্তাল উত্তরা, শিক্ষার্থীদের দখলে সড়ক
‘শিগগিরই আইন, তোমরা ক্লাসে ফিরে যাও’
ভেটিং শেষে নথি সড়ক পরিবহন মন্ত্রণালয়ে
আজও রাজপথে শিক্ষার্থীরা, গণপরিবহন সংকট
সড়ক পরিবহন আইন মন্ত্রিসভার বৈঠকে উপস্থাপন আগামী সপ্তাহেই