সড়ক পরিবহন আইন শুভঙ্করের ফাঁকি: রিজভী
৭ আগস্ট ২০১৮ ১৩:২৮
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: তড়িঘড়ি করে মন্ত্রিসভায় সড়ক পরিবহন আইন-২০১৮-এর খসড়া অনুমোদন দেওয়া হয়েছে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবীর রিজভী আহমেদ।
তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত সড়ক পরিবহন আইন একটি শুভঙ্করের ফাঁকি। এই আইনে গডফাদাররা ধরা-ছোঁয়ার বাইরে থাকবে। যদিও এ আইন আদৌ সংসদে পাস হবে কি না, তা নিয়েও সন্দেহ জানিয়েছেন নাগরিকরা।’
মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) সকালে বিএনপির নয়াপল্টন কার্যালয়ে নিয়মিত ব্রিফিংয়ে তিনি রিজভী এসব কথা বলেন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এ আইন নিরাপদ সড়কের জন্য পর্যাপ্ত নয়। এ আইন গণপরিবহনে নিরাপত্তা ও সুশৃঙ্খল পরিবেশ ফিরিয়ে আসবে কি না, তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে।’
রিজভী দাবি করেন, ‘কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর অবিরাম হামলা অব্যাহত রেখেছে পুলিশ-ছাত্রলীগ-যুবলীগ ও আওয়ামী সন্ত্রাসীরা। গত কয়েকদিন ধরে যেভাবে শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর পুলিশের পাশাপাশি ছাত্রলীগ-যুবলীগ সশস্ত্র অবস্থায় হামলা করেছে, তা দেখে দেশের মানুষ হতভম্ব। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের ওপর বর্বর ও নিষ্ঠুর হামলার ঘটনায় আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানসহ সারাবিশ্বে নিন্দার ঝড় বইছে।’
বিএনপির সিনিয়র এই নেতা আরও বলেন, ‘ওবায়দুল কাদের সাহেব গণমাধ্যমে বলেছেন, সাংবাদিকদের ওপর ছাত্রলীগ হামলা করেনি। সাংবাদিকদের রসিকতা করে বলেছেন, কারা হামলা করেছে তালিকা দেন। আমি বিচার করব। ওবায়দুল কাদের সাহেব সাংবাদিক ছিলেন বলেই আমি জানতাম। কিন্তু তিনি এখন গণমাধ্যমে চোখ রাখা ভুলে গেছেন বলেই এ ধরনের অন্ধ, অজ্ঞ ও অর্বাচীনের মতো কথা বলছেন। মানুষ তার বক্তব্যকে এন্টারটেইনমেন্ট হিসেবে ধরে। ওবায়দুল কাদের সাহেব ছাত্রলীগের রাম দা, পিস্তল, লোহার রড ও লাঠি দেখতে পান না। কিছু চতুষ্পদ প্রাণী আছে কালারব্লইন্ড। আর আওয়ামী সরকার হচ্ছে ক্ষমতা-ব্লইন্ড।’
রিজভী বলেন, ‘আর্ন্তজাতিক খ্যাতিসম্পন্ন আলোকচিত্রী ও দৃক গ্যালারির ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহিদুল আলমকে গতকাল রোববার রাতে তার ধানমন্ডির বাসা থেকে অপহরণ করে কয়েকঘণ্টা গুম রাখার পর গ্রেফতার দেখানো হয়। জিজ্ঞাসাবাদের নামে তাকে শারীরিক নির্যাতন করা হয়। তাকে সাত দিনের রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে।’ এ ঘটনায় নিন্দা জানান তিনি।
তিনি আরও বলেন, ‘এ ভোটারবিহীন অবৈধ সরকারের হাতে এখন আর কেউ নিরাপদ নয়। লেখক, সাংবাদিক, কলামিস্ট, ছাত্র, শিক্ষক, রাজনীতিবিদ, নারী কিংবা শিশু- কেউ নিরাপদ নয়। মতপ্রকাশের স্বাধীনতা বলতে কিছুই নেই। গত পরশু ইলেকট্রনিকস মাধ্যমকে কড়া ভাষায় হুঁশিয়ার করে দেওয়া হয়েছে। আপনারা দেখবেন, দলের মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী ও আমার নামে ইসলামী ব্যাংকে কোটি কোটি টাকা জমা আছে। এ অদ্ভূত এবং হাস্যকর তথ্যের জন্য ফেসবুকে পোস্ট প্রদানকারীকে আর্ন্তাজতিক পুরস্কার দেওয়া উচিত। আসলে ভীত ও নার্ভাস হয়ে সরকার নোংরা চাতুরির আশ্রয় নিয়ে সর্বগ্রাসী ক্ষমতা টিকিয়ে রাখতে চাচ্ছে।’
কোমলমতি শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের ওপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘সরকারকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, দুইশ বছরের ইতিহাসে ছাত্র আন্দোলন কখনই ব্যর্থ হয়নি। স্কুল-কলেজ পড়ুয়াদের এই আন্দোলনও ব্যর্থ হবে না।’
সংবাদ সম্মেলনে অন্যদের মধ্যে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট আহমেদ আযম খান, যুগ্ম মহাসচিব খায়রুল কবীর খোকন, প্রকাশনা সম্পাদক হাবিবুল ইসলাম হাবিব, সহসাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুস সালাম, সহদফতর সম্পাদক মো. মুনির হোসেনসহ অন্যরা উপস্থিত ছিলেন।
সারাবাংলা/এসও/টিআর