আইনজীবীকে সাজা : নিঃশর্ত ক্ষমা পেলেন সেই সহকারী কমিশনার
২৮ ডিসেম্বর ২০১৭ ১৩:৩৯
স্টাফ করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা: দিনাজপুরে ভ্রাম্যমাণ আদালত বসিয়ে জ্যেষ্ঠ এক আইনজীবীকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় কুড়িগ্রামের ভুরুঙ্গামারীর সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিরোদা রানী রায় নিঃশর্ত ক্ষমা পেয়েছেন।
বিচারপতি মো. হাবিবুল গণি ও বিচারপতি কেএম কামরুল কাদেরের অবকাশকালীন হাইকোর্ট বেঞ্চ সহকারী কমিশনারের লিখিত আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে তাকে ক্ষমা করে দেন। এ সময় আদালত তাকে কড়া ভাষায় সতর্ক করে দেন।
দিনাজপুরে কক্ষে বসা নিয়ে এক আইনজীবীকে সাজা দেওয়ার ঘটনায় সহকারী কমিশনার (ভূমি) বিরোদা রানী রায়কে তলব করে গত ১৭ ডিসেম্বর আদেশ দেন হাইকোর্ট।
নির্দেশ মোতাবেক বিরোদা রানী রায় আদালতে বুধবার হাজির হয়ে মৌখিকভাবে নিঃশর্ত ক্ষমা প্রার্থনা করেন। কিন্তু মৌখিকভাবে ক্ষমা চাওয়ায় আদালত উষ্মা প্রকাশ করে লিখিতভাবে ক্ষমার আবেদন করার নির্দেশ দিয়ে আদেশের জন্য রাখেন।
অাজ বৃহস্পতিবার আদালতে এসি ল্যান্ডের পক্ষে শুনানি করেন আইনজীবী সৈয়দ মামুন মাহবুব। ঘটনাটি আদালতের নজরে আনা আইনজীবী সৈয়দ মহিবুল কবির ও আইনজীবী কাজী হেলাল উদ্দিন আদালতে উপস্থিত ছিলেন।
এছাড়াও মামলাটির শুনানিকালে সুপ্রিম কোর্টের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী জেড আই খান পান্না ভ্রাম্যমাণ আদালতের অপব্যহার রোধে হাইকোর্টের নির্দেশনা চান।
দুপুরে লিখিত বক্তব্য নিয়ে তা আদালতে দাখিল করেন বিরোদা রানীর পক্ষের আইনজীবী মামুন মাহবুব। আবেদনটি তিনি পড়ে শোনান। আবেদনে বিরোদা রানী বলেছেন, ‘আমি ওই ঘটনার জন্য অনুততপ্ত। নিঃশর্ত ক্ষমা চাচ্ছি। ভবিষ্যতে আর এ ধরণের ঘটনার পুনরাবৃত্তি হবে না।’
এসময় আদালত বলেন, আপনি মোবাইল কোর্ট আইনের অপব্যবহার করেছেন। আপনি এ ঘটনার জন্য অনুততপ্ত? আপনি যে লিখেছেন তা কি বুঝে লিখেছেন?
তখন বিরোদা রানী রায় হ্যাঁ সূচক জবাব দেন।
অাদালত তখন বলেন, ‘পাবলিক অফিস সামাল দেওয়া কঠিন কাজ। সমস্যা হতেই পারে। আমরাও আইনি কোনো ব্যাখ্যার প্রয়োজন হলে সিনিয়রদের কাছ থেকে পরামর্শ নেই। অনেক সময় অ্যামিকাস কিউরি নিয়োগ দেই। আপনার উচিৎ ছিল সিনিয়রদের কাছ থেকে পরামর্শ নেওয়া। তাদের কাছ থেকে পরামর্শ নিয়ে ছোট হওয়ার কিছু নেই।’
আদালত বলেন, ‘বাইরের লোক এসে তো আপনার উপর হামলা করেনি। নিরোদ বাহারী রায় একজন আইনজীবী, তার বিরুদ্ধে কোনো অভিযোগ থাকলে বার কাউন্সিলে বলতে পারতেন। আপনার আরও সংযত হতে হবে। মনে রাখবেন এটা স্বাধীন দেশ।’
বিরোদা রানী রায়কে ক্ষমার বিষয়ে আদালত বলে, ‘আপনি ২০১৬ সালে চাকরিতে যোগ দিয়েছেন। আবেদনে আপনি নিঃশর্ত ক্ষমা চেয়েছেন। বয়স, চাকরি এবং এই ঘটনায় অনুতপ্ত হওয়ার বিষয়গুলো বিবেচনায় নিয়ে আপনার নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদনটি গ্রহণ করলাম।’
পরে বিরোদা রাণীর আইনজীবী মামুন মাহবুব বলেন, ‘আদালতের নির্দেশ মত ওই ঘটনার জন্য অনুততপ্ত ও নিজের ভুল স্বীকার করে লিখিতভাবে নিঃশর্ত ক্ষমার আবেদন করেছিলেন। আদালত তাকে সতর্ক করে দিয়ে ক্ষমা করে দিয়েছে।’
সারাবাংলা/এজেডকে/টিএম