‘জলাবদ্ধতা মেগাপ্রকল্প’ জনগণের সামনে উন্মুক্ত করার দাবি
৭ আগস্ট ২০১৮ ১৪:১৫
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট।।
চট্টগ্রাম ব্যুরো: চট্টগ্রাম নগরীর জলাবদ্ধতা নিরসনে নেওয়া মেগাপ্রকল্প জনগণের সামনে উন্মুক্ত করার দাবি জানিয়েছে পরিকল্পিত চট্টগ্রাম ফোরাম। এই প্রকল্পের আওতায় কি কি কাজ হবে, প্রতিটি কাজ শেষ করতে কত সময় লাগবে, প্রকল্পের বিভিন্ন খাতে ব্যয়ের পরিমাণ কত সবকিছু নাগরিকদের সামনে তুলে ধরার দাবি চট্টগ্রামের বিশিষ্টজনদের নিয়ে গঠিত এই সংগঠনের।
মঙ্গলবার (৭ আগস্ট) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে সংগঠনের লিখিত বক্তব্য তুলে ধরার পাশাপাশি সাংবাদিকদের প্রশ্নেরও জবাব দেন সংগঠকরা। এতে তারা তিন বছরে এই প্রকল্পের কাজ শেষ হবে কি না তা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেন।
সংগঠনের সভাপতি ও ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির উপাচার্য প্রফেসর মু. সিকান্দার খান বলেন, কাজের দায়িত্ব আর্মিকে (সেনাবাহিনী) দেওয়া হয়েছে। আর্মিকে দেওয়া হয়েছে বলে চুপ করে থাকলে হবে না। সব কাজে আর্মিকে জড়ানো কি ঠিক ?
সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক স্থপতি জেরিনা হোসাইন বলেন, ‘আমরা প্রকল্পের বিরোধিতা করছি না। সেটা করার প্রশ্নই আসে না। আমরা শুধু এই যে হাজার হাজার কোটি টাকার মেগাপ্রকল্প, সেটা বাস্তবায়নের প্রক্রিয়াটা জানতে চাই। প্রকল্পের কারিগরি, প্রাতিষ্ঠানিক সব বিষয়ে স্পষ্টভাবে জানতে চাই। টেকনিক্যাল যে প্রসেসটা আছে সেটা আমরা পুরোপুরি জানতে চাই।
‘কারণ না জানলে, ভুল কোথায় আছে কিংবা গ্যাপ কোথাও আছে কি না? সেটা না জানলে তো আমরা সহযোগিতা করতে পারব না। তিন বছরে এটার কাজ শেষ হবে কি না সেটা জানাতে হবে। তিন বছর পর এর ধারাবাহিকতা কে রক্ষা করবে ? কারণ ইতোমধ্যে সিডিএ ও সিটি করপোরেশন দুই মেরুতে অবস্থান নিয়েছে। সিডিএ কাজ শেষ করার পর সিটি করপোরেশন যদি রক্ষণাবেক্ষণের দায়িত্ব না নেয়, তাহলে কি হবে ? আমরা এই প্রশ্নগুলোর উত্তর জানতে চাই।’
জেরিনা হোসাইন বলেন, আমরা গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র বলে দাবি করি। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্রে উন্নয়নের একটা কর্মপরিকল্পনা থাকে, যেখানে জনগণকে জানানো ও নাগরিকের মতামত নেওয়া বাধ্যতামূলক। উন্নয়নের ক্ষেত্রে যেন গণতান্ত্রিক ধারা বজায় থাকে, সেটা আমরা নিশ্চিত করার দাবি করছি।
সংগঠনের সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট আকতার কবির চৌধুরী বলেন, মেগাপ্রজেক্ট মেগাচ্ছন্ন অবস্থায় আছে। আমরা এই প্রজেক্ট নিয়ে উদ্বিগ্ন। কোন কাজটা আগে হবে, সেটা আমাদের জানাতে হবে। আগে কি খাল-নালা পরিস্কার হবে নাকি অবৈধ দখলমুক্ত করার প্রক্রিয়া শুরু হবে সেটা তো আমাদের জানাতে হবে। এই প্রকল্পে শুভঙ্করের কোন ফাঁকি আছে কি না সেটাও জানাতে হবে। কোন খাতে কত ব্যয় করা হচ্ছে সেটা জনগণকে জানাতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সংগঠনের সহ-সভাপতি প্রকৌশলী সুভাষ বড়ুয়া। এতে তিন বছরের মধ্যে বিশাল এই প্রকল্প শেষ হবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ প্রকাশ করা হয়। এছাড়া এই প্রকল্প থেকে দীর্ঘমেয়াদি কোন সুফল পাওয়া যাবে কি না, তা নিয়েও সংশয় প্রকাশ করেছে সংগঠনটি।
লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, নতুন খাল খনন, পরিকল্পিত রক্ষণাবেক্ষণ, বর্জ ব্যবস্থাপনা, খাল-ড্রেন, পাহাড় ব্যবস্থাপনা, খাল দখল ও পাহাড় কাটা প্রতিরোধ এবং অপরিকল্পিত নগরায়ণ রোধ করা না গেলে এই প্রকল্পের সুফল পাওয়া নিয়ে সংশয় থেকে যাবে।
এতে আরও উপস্থিত ছিলেন সংগঠনের সহ-সভাপতি শামসুল হোছাইন, নির্বাহী সদস্য প্রকৌশলী দেলোয়ার মজুমদার ও শাহরিয়ার খালেদ।
দেলোয়ার মজুমদার বলেন, প্রকল্পটি বাস্তবায়নের কাজ করছে চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ। আমরা এর বিরোধিতা করছি না। আমরা শুধু বলছি, এত হাজার হাজার কোটি টাকার প্রকল্প, সেটা জনবান্ধব হতে হবে। জনগণকে এর সুফল পেতে হবে।
সারাবাংলা/আরডি/এমএইচ