রোহিঙ্গা ইস্যুতে রাতে মিয়ানমার যাচ্ছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী
৮ আগস্ট ২০১৮ ০৮:৩৭
।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা : নির্যাতিত রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে প্রত্যাবাসনের জন্য রাখাইনে উপযুক্ত পরিবেশ সৃষ্টি হয়েছে কি না তা নিজের চোখে দেখতে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী বুধবার দিবাগত রাত ১২ টায় (৮ আগস্ট) নেপিডোর উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন। রোহিঙ্গা সঙ্কট সমাধানে দুই দেশের মধ্যে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের তৃতীয় বৈঠকটি মিয়ানমারে অনুষ্ঠিত হবে।
একাধিক কূটনৈতিক সূত্রে জানা গেছে, বেইজিং সফরে গত ২৯ জুন চীনের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ওয়াই ই এর মধ্যস্থতায় মিয়ানমারের মন্ত্রী খ থিন শোয়ে’র সঙ্গে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলীর একটি অনানুষ্ঠানিক বৈঠক হয়। ওই বৈঠকে রোহিঙ্গা সঙ্কট নিরসন এবং প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া দ্বিপক্ষীয়ভাবে বাস্তবায়ন করার ওপর জোর দেয় চীন।
বৈঠকে মন্ত্রী খ থিন শোয়ে জানান, প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া বাস্তবায়ন করতে এরই মধ্যে প্রস্তুতি প্রায় শেষ করেছে মিয়ানমার। খ থিন শোয়ের দেয়া তথ্যের পরিপ্রেক্ষিতে আবুল হাসান মাহমুদ আলী প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমারের নেয়া প্রস্তুতি নিজ চোখে দেখার জন্য রাখাইন অঞ্চল সফরের প্রস্তাব দেন।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, পররাষ্ট্রমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মিয়ানমার সফরে দেশটির উচ্চ পর্যায়ের কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠক করবেন।
এদিকে, রাখাইনের বাস্তুচ্যুত জনগোষ্ঠীকে ফিরিয়ে নেয়ার জন্য গত বছরের ২৩ নভেম্বর মিয়ানমার ও বাংলাদেশ চুক্তি স্বাক্ষর করে। চুক্তি অনুযায়ী, দুই দেশের মধ্যে গত ১৯ ডিসেম্বর ঢাকায় অনুষ্ঠিত বৈঠকে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ গঠন করা হয়। যৌথ ওয়ার্কিং গ্রুপ এ পর্যন্ত দুইটি বৈঠক করেছে। সর্বশেষ বৈঠকটি গত ১৭ মে ঢাকায় অনুষ্ঠিত হয়।
দুই দেশের মধ্যে সম্পাদিত চুক্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে, ‘৯ অক্টোবর ২০১৬ এবং ২৫ আগস্ট ২০১৭ সালের পর যে সকল রোহিঙ্গা বাংলাদেশে আশ্রয় নিয়েছে তাদেরকে ফেরত নিবে মিয়ানমার। চুক্তি স্বাক্ষরের দুই মাসের মধ্যে প্রত্যাবাসন প্রক্রিয়া শুরু হবে।’
পররাষ্ট্র সচিব মো. শহীদুল হক সারাবাংলাকে বলেন, রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসন নিয়ে আমরা এখনো আশাবাদী। প্রত্যাবাসনের জন্য মিয়ানমার কী ধরনের পদক্ষেপ নিয়েছে তা সরেজমিন দেখার জন্য পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিয়ানমার সফরে যাচ্ছেন। রোহিঙ্গা ইস্যুতে দুই দেশের মধ্যে গঠিত জয়েন্ট ওয়ার্কিং গ্রুপের ৩য় বৈঠকটি এই সফরেই অনুষ্ঠিত হবে।
গত বছরের ২৫ আগস্ট রাখাইনে রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর ওপর নির্যাতন শুরু হলে প্রাণ বাঁচাতে বাংলাদেশে পালিয়ে আসে সাত লাখেরও বেশি মানুষ। সব মিলিয়ে মিয়ানমারের নাগরিক ১১ লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশের একাধিক শিবিরে আশ্রয় নিয়েছে।
সারাবাংলা/জেআইএল/এনএইচ