মাধ্যমিক শিক্ষায় বিশ্বব্যাংকের ৪ হাজার ১৬০ কোটি টাকা ঋণ
১৩ আগস্ট ২০১৮ ১৯:৩৫
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: দেশে মাধ্যমিক শিক্ষার মান উন্নয়নে ৫১ কোটি মার্কিন ডলার ঋণ দিচ্ছে বিশ্বব্যাংক। এছাড়াও গ্লোবাল ফাইনান্সিং ফ্যাসিলিটি (জিএফএফ) অনুদান হিসেবে আরও এক কোটি মার্কিন ডলার অনুদান সহায়তা দিচ্ছে ব্যাংকটি। বাংলাদেশের স্থানীয় মুদ্রায় এই অর্থের পরিমাণ চার হাজার ১৬০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার ৮০ টাকা হিসাবে)।
সোমবার (১৩ আগস্ট) বাংলাদেশ ও বিশ্বব্যাংকের মধ্যে এ বিষয়ক ঋণ ও অনুদান চুক্তি সই হয়েছে। এই চুক্তির আওতায় মাধ্যমিক শ্রেণির (ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ) এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থী উপকৃত হবে।
রাজধানীর শেরেবাংলা নগরের এনইসি সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের (ইআরডি) সচিব কাজী শফিকুল আযম। অন্যদিকে বিশ্বব্যাংকের পক্ষে চুক্তিতে সই করেন, বিশ্বব্যাংকের নেপাল, ভুটান ও বাংলাদেশ ভারপ্রাপ্ত কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার। এই চুক্তির বিশেষ দিক হলো— এই ঋণ সুদমুক্ত হবে। ঋণের পরিশোধের মেয়াদকাল হবে ৩৮ বছর। এই ঋণে কোন সুদ নেওয়া না হলেও দশমিক ৭৫ শতাংশ সার্ভিস চার্জ নেওয়া হবে। ২০২২ সালের মধ্যে প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করা হবে।
বিশ্বব্যাংক সূত্র জানা গেছে, এই চুক্তির আওতায় ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত এক কোটি ৩০ লাখ শিক্ষার্থীর শিক্ষার মান উন্নয়ন, বিশেষ করে দরিদ্র-অতিদরিদ্র পরিবারের ছেলেমেয়েদের শিক্ষায় বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হবে।
একইসঙ্গে এ প্রকল্পের মাধ্যমে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত মেয়েদের স্বাস্থ্য সেবার বিষয়েও শিক্ষা দেওয়া হবে। এছাড়াও মেয়েদের জন্য পৃথক টয়লেট নিমার্ণসহ বিভিন্ন প্রকল্প হাতে নেওয়া হবে। এই অর্থ দিয়ে সারাদেশের ৫ লাখ শিক্ষক ও অধ্যক্ষদের প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হবে। একইসঙ্গে দেশে ষষ্ঠ, অষ্টম ও দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ঝরে পড়ার কারণ এবং তার প্রতিকার বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
চুৃক্তি সই অনুষ্ঠানে ইআরডি সচিব কাজী শফিকুল আযম বলেন, এ প্রকল্পটি বাস্তবায়িত হলে মাধ্যমিক শিক্ষার গুণগত মান বাড়বে। মানবসম্পদ উন্নয়নে প্রকল্পটি বিশেষ ভূমিকা রাখবে। তিনি বলেন, মানবসম্পদ উন্নয়নে এরই মধ্যে বাংলাদেশে অনেক দূর এগিয়েছে। এমনকি ইউএনডিপির হিসাব অনুযায়ী ভারত ও পাকিস্তানকে পেছনে ফেলেছে।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর রাজশ্রী পারালকার বলেন, বাংলাদেশ এগিয়ে যাচ্ছে। আর্থসামাজিক উন্নয়নে বাংলাদেশের অংশীদার হতে পেরে আমরা গর্বিত। বাংলাদেশের টেকসই উন্নয়নে মানবসম্পদকে কাজে লাগাতে হবে। এ প্রকল্পের মাধ্যমে মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নে ব্যাপক ভূমিকা রাখবে।
উল্লেখ্য, শিক্ষা মন্ত্রণালয় একটি পাইলট সমন্বিত কর্মসূচি হিসেবে পাঁচ বছর মেয়াদি সেকেন্ডারি এডুকেশন ডেভেলপমেন্ট প্রোগ্রাম (এসইডিপি) প্রণয়ন করে। এসইডিপি বিষয়ে বিশ্বব্যাংক, এডিবি ও অন্যান্য দাতা সংস্থাও আগ্রহ প্রকাশ করে। মাধ্যমিক শিক্ষা উন্নয়নের জন্য শিক্ষার উন্নততর মান, শিক্ষার্থীর সংখ্যা বৃদ্ধি ও বর্ধিত দক্ষতার বিষয়ে গুরুত্ব আরোপ এসইডিপির মূল লক্ষ্য। এসইডিপির প্রাক্কলিত ব্যয় ধরা হয়েছে ১৭ দশমিক ২০ বিলিয়ন মার্কিন ডলার।
এ ধারাবাহিকতায় এসইপি বাস্তবায়নে ট্রান্সফরমিং সেকেন্ডারি এডুকেশন ফর রিসল্টস অপারেশনের মাধ্যমে সহায়তা করার জন্য বিশ্বব্যাংক এগিয়ে আসে। এসইডিপি বাস্তবায়নে টিএসইআরও’র আওতায় সুনির্দিষ্ট অর্থনৈতিক কোডের মাধ্যমে প্রোগ্রাম ও টেকনিক্যাল অ্যাসিসট্যান্স আকারে বিশ্বব্যাংক সহায়তা করবে। এ জন্য বিশ্বব্যাংকের ৩৬ কোটি ৬৬ লাখ এসডিআরের সমতুল্য ৫১ কোটি মার্কিন ডলার বিশ্বব্যাংকের ইন্টারন্যাশনাল ডেভলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশন (আইডিএ) ঋণ এবং জিএফএফ অনুদান বাবদ ১০ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দেবে।
আরও পড়ুন-
‘চলতি অর্থবছরে ৭ থেকে ৮ বিলিয়ন ডলার বৈদেশিক বিনিয়োগ হবে’
সারাবাংলা/জেজে/ জিএস/জেডএফ
বিশ্বব্যাংক বিশ্বব্যাংকের ৪ হাজার ১৬০ কোটি টাকা ঋণ বিশ্বব্যাংকের ঋণ মাধ্যমিক শিক্ষায় বিশ্বব্যাংকের ঋণ