ওদের শেষ সময়, আমাদেরও চূড়ান্ত সময়: নাসিম
১৮ আগস্ট ২০১৮ ২০:৩৯
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: কেন্দ্রীয় ১৪ দলের মুখপাত্র, আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য মোহাম্মদ নাসিম শরিক জোটের নেতা-কমীদের উদ্দেশে বলেছেন, ‘যদি বুঝতে পারেন চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে তাহলে খবর পাওয়ার সাথে সাথে মাঠে নামতে হবে। ঘরে বসে অপেক্ষা করলে হবে না। মনে রাখবেন, ওদেরও শেষ সময়, আমাদেরও চূড়ান্ত সময়।’
‘ওরা সক্রিয় হয়েছে। দুঃখ লাগে, হতাশ কিছু ব্যর্থ রাজনীতিবিদরা এদের সাথে জড়িত হয়েছে। এদের কোনো ইমেজ নাই। এদের কোনো লক্ষ্য নাই। একটাই লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে ঠেকাও।’
শনিবার (১৮ আগস্ট) বিকেলে রাজধানীর ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্সে অনুষ্ঠিত জাতীয় শোক দিবস ও জাতির জনকের ৪৩তম শাহাদাৎবার্ষিকী উপলক্ষ্যে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের শরিক জাতীয় পার্টি (জেপি) আয়োজিত এক স্মরণ সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নিরন্তর সংগ্রাম করে আজকে আমরা এখানে এসে দাঁড়িয়েছি উল্লেখ করে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, অশুভ শক্তি এখনো সক্রিয় আছে। তাদের কিন্তু কোনো অনুশোচনা নাই। তাদের মধ্যে কোনো গ্লানি নাই। এরা ওই বিএনপি নামধারী একটি দল এবং তার সঙ্গী একাত্তরের পরাজিত শক্তি জামায়াতে ইসলামী ।
আগামী নির্বাচনের খুবই গুরুত্বপুর্ণ। এই অর্জন আমাদেরকে ধরে রাখতে হবে। ওরা সক্রিয় হয়েছে। দুঃখ লাগে, হতাশ কিছু ব্যর্থ রাজনীতিবিদরা এদের সাথে জড়িত হয়েছে। এদের কোনো ইমেজ নাই। এদের কোনো লক্ষ্য নাই। লক্ষ্য একটাই লক্ষ্য শেখ হাসিনাকে ঠেকাও। উদ্দেশ্য একটাই শেখ হাসিনাকে ঠেকাও, আওয়ামী লীগ বা ১৪দলকে ঠেকাও। শেখ হাসিনাকে এখন থামাতে হবে। আর কোনো লক্ষ্য নাই। এদের নিজস্ব কোনো দর্শন নাই। এদের কোনো এজেন্ডা নাই।
এই সমস্ত কিছু ব্যক্তি আছেন, এরা এখন মাহাতির মোহাম্মদ হওয়ার চিন্তা করে। এই কারণে আজকে বিএনপির সঙ্গে প্রকাশ্যে-গোপনে হাত মিলিয়েছে। আর এরাও ওদের সঙ্গে হাত মিলিয়েছে।
২০০১ সালের নির্বাচনে ষড়যন্ত্রের কথা তুলে ধরে নাসিম বলেন, এরা একটা জিনিস জানে—ভোটের মাধ্যমে, সুষ্ঠ নির্বাচনের মাধ্যমে শেখ হাসিনাকে, আওয়ামী লীগকে, ১৪ দলকে হারানো যাবে না। কারণ বাংলাদেশে যত নিরপেক্ষ নির্বাচন হয়েছে, আমরাই বিজয়ী হয়েছি। চক্রান্তের নির্বাচন হলে আমরা পরাজিত হয়েছি। চক্রান্ত না করলে আওয়ামী লীগকে হারানো যাবে না, এ কথাটি কে বলেছিল, বদরুদ্দোজা চৌধুরী বলেছিল। ওই সমস্ত ব্যক্তিরা আবার সক্রিয় হয়েছে। আবার মাঠে নেমে গেছে।
নির্বাচন কীভাবে হবে সংবিধানেই স্পষ্টভাবে লেখা আছে। ড. কামাল হোসেন সংবিধানের কথা বলেন ওনিই তো সংবিধান করেছিলেন। সেখানেই তো লেখা আছে নির্বাচনকালীন সরকারের অধীনেই নির্বাচন হবে। আগামী জাতীয় নির্বাচনকে কেন্দ্র করে সামনের কয়েক কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতা-কর্মীদের অতন্দ্র প্রহরীর মতো সজাগ থাকার আহ্বান জানিয়ে বলেন, যদি বুঝতে পারেন চক্রান্ত শুরু হয়ে গেছে তাহলে সবাইকে মাঠে থাকতে হবে। খবর পাওয়ার সাথে সাথে মাঠে নামতে হবে। কেউ হুকুম দিল, কেই নির্দেশ দিলো সেই অপেক্ষা না করে মাঠে থাকতে হবে, মাঠে নামতে হবে। ঘরে বসে অপেক্ষা করলে হবে না। মনে রাখবেন, ওদেরও শেষ সময়, আমাদেরও চূড়ান্ত সময়।’
নির্বাচনকালীন সরকারের অর্ধীনেই নির্বাচন হবে। এর বাইরে আমরা যাব না। যাওয়ারও প্রশ্ন ওঠে না, দাবি করে বিএনপির উদ্দেশে নাসিম বলেন, ভয় করেন কেন? ২০১৪ সালে পালিয়ে গিয়েছিলেন, এবার আর দয়া করে পালাবেন না। যদি পালিয়ে যান তাহলে এবার আর বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যাবে না। খেলা হবে মাঠে। বিশ্বকাপে খেলা হয়েছে। দুই দল খেলেছে, মাঠে রেফারি ছিল। যে গোল দিয়েছে সেই জয়লাভ করেছে। আমরাও মাঠে খেলবো। খেলেই জিততে চাই। ইনশাল্লাহ, মেসি গোল মিস করতে পারে, নেইমার গোল মিস করতে পারে কিন্তু শেখ হাসিনা গোল মিস করবে না, এক গোল নয় তিন গোল দেবে।
১৫ আগস্ট বিএনপি নেত্রী খালেদা জিয়ার ভুয়া জন্মদিন পালনের সমালোচনা করে নাসিম বলেন, ভুয়া জন্মদিন করেই যাচ্ছে। এই ভুয়া জন্মদিন পালন করে আপনাদের দলই এখন ভুয়া হয়ে যাচ্ছে। এসব করে মানুষের ঘৃণা ছাড়া আর কিছুই পাবেন না।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জুর সভাপতিত্বে স্মরণ সভায় আরও বক্তব্য রাখেন সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক দিলীপ বড়ূয়া, জাসদ (ইনু) সাধারণ সম্পাদক শিরীন আক্তার, জেপির সাধারণ সম্পাদক শেখ শহিদুল ইসলাম, কমিউনিস্ট কেন্দ্রের যুগ্ম আহ্বায়ক অসিত বরণ রায়, ন্যাপের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন, গণআজাদী লীগের এস কে শিকদার ও বাসদের রেজাউর রশিদ খানসহ অনেকে।
সারাবাংলা/এনআর/এমআই