নিখোঁজের ৪ মাস পর বিএনপি নেতা সাদাত গ্রেফতার
৩০ ডিসেম্বর ২০১৭ ২২:৪৫ | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০১৮ ১৭:১৩
সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট
ঢাকা : চার মাস আগে ঢাকা থেকে নিখোঁজ হওয়া বিএনপি নেতা ব্যবসায়ী সৈয়দ সাদাত আহমেদকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। শনিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে রামপুরা এলাকা থেকে তাকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে সারাবাংলা ডটনেটকে জানিয়েছেন ডিবি পুলিশের (দক্ষিণ) উপ-কমিশনার শহীদুল্লাহ হক।
তিনি জানান, ২০১৫ সালে রমনা থানায় দায়ের হওয়া একটি নাশকতার মামলায় সৈয়দ সাদাত আহমেদকে গ্রেফতার করা হয়েছে। তিনি এখন তাদের হেফাজতে আছেন জানিয়ে শহীদুল্লাহ হক বলেন, নাশকতার মামলায় রোববার তাকে আদালতে তোলা হবে।
ব্যবসায়িক গ্রুপ এবিএন-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক সৈয়দ সাদাত আহমেদ চট্টগ্রাম দক্ষিণ বিএনপির সহ-সভাপতি। দলটির বিগত কমিটিতে নির্বাহী সদস্য ছিলেন তিনি। দলের চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার কয়েকটি বিদেশ সফরে প্রটোকলের দায়িত্বও পালন করেছেন তরুণ এই রাজনীতিক। কিছু দিনের জন্য বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির কোষাধ্যক্ষর দায়িত্বও পালন করেছেন তিনি।
সাদাতকে গত ২২ অাগস্ট দুপুর আড়াইটার দিকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় বলে এ প্রতিবেদককে জানিয়েছিলেন তার ছেলে মেহেদী জামান। ওইদিন বিকেলে ছেলে মেহেদি জামান ও বাসার কেয়ারটেকারকে গাড়িতে নিয়ে উত্তরার বাসা থেকে ধানমন্ডি নিজ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের উদ্দেশে বেরিয়েছিলেন সাদাত আহমেদ। বনানী ফ্লাইওভারের নিচে একটি মাইক্রোবাস তাদের পথরোধ করে এবং মাইক্রোবাস থেকে কয়েকজন এসে সাদাতকে জোর করে নামিয়ে তাদের গাড়িতে তুলে নেয়।
এরপর ওই মাইক্রোবাসের একজন এসে সাদাতের গাড়ির ড্রাইভিং সিটে বসেন। দুটি গাড়িই কুড়িল বিশ্বরোডের তিনশ ফুট রাস্তা দিয়ে পূর্বাচলে গিয়ে থামে। পূর্বাচলে সাদাতের গাড়ি থেকে ওই অপরিচিত ব্যক্তি নেমে যান। নামার সময় সাদাতের ছেলেকে ওই লোক বলে যান, তোমার বাবা ১৫ মিনিট পরে ফিরে আসবেন। কিন্তু ঘণ্টাখানেক পরও বাবা ফিরে না আসায় এক পথচারীর কাছ থেকে মোবাইল চেয়ে নিয়ে বাসায় ফোন দেন সাদাতের ছেলে মেহেদী জামান।
ওই সময় কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম এই প্রতিবেদককে বলেছিলেন, সাদাত আহমেদ নিখোঁজ হওয়ার পর পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় সাধারণ ডায়েরি করতে গেলে দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তারা জিডি নিতে গড়িমসি করেন। পরে সাদাতের বাবা অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা সৈয়দ শাহবুদ্দিন আহমেদ ওপরপর্যায়ে কথা বলে থানায় সাধারণ ডায়রি করতে সমর্থ হন।
দীর্ঘ চারমাস ৭ দিন নিখোঁজ থাকার পর শনিবার রাতে গ্রেফতার হন সৈয়দ সাদাত আহমেদ। এদিন রাত সোয়া ১২টায় সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম সারাবাংলাকে বলেন, ‘রামপুরা ব্রিজের কাছে উদ্ভ্রান্তের মতো ঘুরছিলেন সাদাত আহমেদ। পুলিশ তাকে গ্রেফতার করেছে— আপাতত এতটুকুই শুনেছি। বাকিটা শোনার অপেক্ষায় আছি।’
ধানমণ্ডি ২৭ নম্বরে ২৭৫/জি নম্বর ভবন কনকর্ড রয়েল কোর্টের চতুর্থ তলায় এবিএন গ্রুপের করপোরেট কার্যালয়। এই গ্রুপের অধীনে এশিয়ান বিজনেস নেটওয়ার্ক, এবিএন এভিয়েশন, এবিএন ট্রাভেলস, এবিএন কার্গো, এবিএন প্রোপার্টিজ লিমিটেড, এশিয়ান ইন্টারন্যাশনাল স্কুল ও কফি চেইন সুগার এন স্পাইস পরিচালিত হয়।
এছাড়া ‘বাংলাদেশ টুডে’ নামে একটি ডেইলি ইংলিশ পত্রিকা বের হয় এবিএন গ্রুপ থেকে।
সারাবাংলা/ইউজে/এজেড/একে