শরীয়তপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলা, আহত ২৫
১ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:৫২
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
শরীয়তপুর: শরীয়তপুরে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগ উঠেছে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে। যদিও যুবলীগের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, বিএনপির নেতাকর্মীরাও তাদের ওপর হামলা করেছে। এসময় দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষে ২৫ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন। তাদের চিকিৎসার জন্য শরীয়তপুর সদর হাসপাতালে নেওয়া হয়। পরে গুরুতর আহত কয়েকজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
শরীয়তপুরের পালং মডেল থানার পরিদর্শক উৎপল বিশ্বাস সারাবাংলাকে বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানকে ঘিরে বিএনপি ও একপক্ষের মধ্যে ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। পরে পুলিশ গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছে।
জানা গেছে, শনিবার দলের ৪০তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠান আয়োজন করে শরীয়তপুর জেলা বিএনপি। পৌর এলাকার ধানুকায় জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দিন কালুর বাসভবনে অনুষ্ঠান চলছিল। সকাল ১১টার দিকে স্থানীয় যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ওই অনুষ্ঠানে হামলা করে। তখন বিএনপির নেতাকর্মীদের সঙ্গে যুবলীগ-ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সংঘর্ষ হয়। দুপুর ২টা পর্যন্ত দফায় দফায় ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া হয়। এ সময় তারা লাঠিসোটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ালে দু‘পক্ষের অন্তত ২৫ নেতাকর্মী আহত হন।
আহতরা হলেন— জেলা যুবলীগের দফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর মাদবর, পৌর ছাত্রলীগের আহ্বায়ক প্রকাশ বন্ধুকছি, যুবলীগকর্মী জয় মোল্যা, সবুজ মাদবর, ফরহাদ ঢালী, রিয়াদ হাসান মাল, জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহাবুব মোর্শেদ টিপু, পৌর বিএনপির সহসভাপতি নয়ন সরকার, জেলা ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম আহবায়ক আবুল খায়ের, ভেদরগঞ্জ উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক হাসান হাওলাদার, জেলা মহিলা দলের যুগ্ম আহ্বায়ক রাশিদা গনি, জেলা জাসাসের সহসভাপতি নিপা আক্তার, বিএনপিকর্মী সাহাদাৎ হোসেন ও জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরনের গাড়িচালক নুর মোহাম্মদ।
এদিকে, দুপুর দেড়টার দিকে জেলা বিএনপির সভাপতি ওই অনুষ্ঠানস্থল থেকে বের হওয়ার চেষ্টা করলে যুবলীগ-ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা ফের তাকে ধাওয়া করে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। বিকেল ৪টা পর্যন্ত তিনি জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদকের বাসভবনে অবরুদ্ধ ছিলেন।
জেলা বিএনপির সভাপতি শফিকুর রহমান কিরন বলেন, দলের প্রতিষ্ঠাবাষির্কীর অনুষ্ঠান করার জন্য পুলিশের অনুমতি নেওয়া হয়েছে। স্থানীয় আওয়ামী লীগের নেতাদেরও বিষয়টি জানানো হয়েছে। তারপরও অনুষ্ঠানে হামলা করার ঘটনাটি অত্যন্ত দুঃখজনক। আওয়ামী লীগের কর্মীদের হামলায় আমাদের ১৫ ব্যক্তি আহত হয়েছে।
তবে বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে হামলার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা যুবলীগের দফতর সম্পাদক জাহাঙ্গীর মাদবর। তিনি বলেন, বিএনপির অনুষ্ঠানে কেউ হামলা করেনি। যুবলীগের কর্মী সভা করার জন্য জেলা স্টেডিয়ামের পাশে জড়ো হয়েছিলাম। তখন বিএনপির নেতাকর্মীরা আমাদের ওপর হামলা করে। তাদের হামলায় আমাদের ১০ নেতাকর্মী আহত হয়েছেন।
পালং মডেল থানার পরিদর্শক উৎপল বিশ্বাস বলেন, বিএনপির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর অনুষ্ঠানে সমস্যা হয়েছে— এমন খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়। এ সময় বিএনপির সঙ্গে একটি গ্রুপের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া চলছিল। কয়েকজন আহতও হয়েছেন। পুলিশ যাওয়ার পর পরিস্থিতি শান্ত হয়েছে।
সারাবাংলা/টিআর