জালে ধরা দিতে শুরু করেছে রুপালি ইলিশ
৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ০৯:১৬
।। জামাল হোসেন বাপ্পা, ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট ।।
বাগেরহাট: অবশেষে সুন্দরবন উপকূলে বাগেরহাট এলাকায় বঙ্গোপসাগরে জেলেদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে ঝাঁকে-ঝাঁকে রূপালী ইলিশ। তাতে ইলিশ আহরণ মৌসুমের শেষ প্রান্তে এসে হাসি ফুটেছে উপকূলের জেলে পল্লিগুলোতে। দেরিতে ইলিশের দেখা মিললেও গত বছরের চেয়ে বেশি ইলিশ পাওয়া যাবে বলে আশা করছেন জেলেরা।
হিসাব অনুযায়ী, ইলিশের মৌসুম শুরু হয় জুন-জুলাই মাসে। সেই হিসাবে এখন ইলিশের মৌসুম শেষের দিকে। তবু বঙ্গোপসাগর ও উপকূলের বিভিন্ন নদ-নদীতে মিলছিল না ইলিশের দেখা। ভরা মৌসুমে ইলিশ ধরা না পড়ায় জেলে-ব্যবসায়ীরা হতাশ হয়ে পড়ছিলেন। ধারকর্জ নিয়ে জাল ও ট্রলার তৈরি করে তারা ইলিশ ধরতে গিয়ে প্রতিনিয়ত শূন্য হাতে ফিরছিলেন। তবে শেষ পর্যন্ত ইলিশের দেখা মিলতে শুরু করায় সেই হতাশা কাটিয়ে উঠছেন জেলেরা। তবে মৌসুম শেষ প্রান্তে চলে আসায় পর্যাপ্ত ইলিশের দেখা মিলবে কিনা, সেই শঙ্কাও কাজ করছে তাদের মধ্যে।
জেলেরা বলছেন, সপ্তাহখানেক ধরে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগরে তাদের জালে ধরা পড়তে শুরু করেছে কাঙ্ক্ষিত রুপালি ইলিশ। তাতে জেলে, আড়তদার ও মাছ বিক্রেতাদের এখন ব্যস্ত সময় কাটাতে হচ্ছে। ফলে মৌসুমের শুরু থেকেই ফাঁকা থাকলেও এখন কর্মচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে বাগেরহাটের মাছের আড়তে। সুন্দরবন উপকূলসহ গভীর সমুদ্রে থাকা ইলিশ বোঝাই ট্রলারগুলো আসতে শুরু করেছে বাগেরহাটের প্রধান মৎস্য বন্দর কেবি বাজারে। বাজারে সরবরাহ বেড়ে যাওয়ায় ইলিশের দামও নেমে এসেছে সাধারণ মানুষের ক্রয়ক্ষমতার মধ্যে।
সরেজমিনে বাগেরহাটের কেবি বাজারে গিয়ে দেখা গেছে, গত তিন দিনে সুন্দরবন উপকূলে বঙ্গোপসাগর থেকে ইলিশ বোঝাই করে ফিরেছে প্রায় ৩০টি ফিশিং ট্রলার। ফিরে আসা ইলিশ ভর্তি এসব ট্রলার কেবি বাজারের সামনে দিয়ে বয়ে যাওয়া দাড়াটানা নদীর ঘাটে সারিবদ্ধভাবে নোঙর করে রাখা হয়েছে। বাজারে কেউ ইলিশ মাছের ঝুড়ি টানছেন, কেউ প্যাকেট করছেন, আবার কেউ কেউ সেই ইলিশ মাছের প্যাকেট দেশের বিভিন্ন স্থানে পাঠাতে তুলে দিচ্ছেন ট্রাকে।
দাড়াটানা নদীর ঘাটে নোঙর ট্রলারের জেলে ইলিয়াস, আল-আমিন ও লিটন মিয়া জানান, এবার মৌসুমের প্রথম দিকে ইলিশের দেখা মেলেনি। তাই ট্রলার মালিকসহ ইলিশ আহরণ পেশার সঙ্গে জড়িত সবাই হতাশ হয়ে পড়েছিলাম। তবে মৌসুমের শেষ ভাগে এসে সাগরে হঠাৎ করে ঝাঁকে ঝাঁকে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। এবার ধরা পড়া ইলিশের সাইজও অনেক ভালো। আমরা সাগর থেকে ট্রলার বোঝাই করে ইলিশ মাছ নিয়ে এসেছি।
উপকূলীয় মৎস্যজীবী সমবায় সমিতির সভাপতি শেখ ইদ্রিস আলী জানান, মৌসুমের শুরুতে ইলিশ না পাওয়া গেলেও প্রজনন মৌসুমের আগে এসে সুন্দবেন উপকূলে গভীর সমুদ্রে মাছের খনি হিসেবে খ্যাত সোয়াচ অব নো গ্রাউন্ডে জেলেদের জালে ইলিশ ধরা পড়তে শুরু করেছে। তিন দিনে ইলিশ বোঝাই বঙ্গোপসাগর থেকে প্রায় ৫০টি ট্রলার কেবি বাজারের ঘাটে নোঙর করেছে। এসব ট্রলারের প্রতিটিতেই প্রচুর ইলিশ ছিল এবং এগুলো আকারেও বেশ বড়।
সারাবাংলা/এমএইচ/টিআর