‘খালেদা জিয়ার আইনজীবীদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছি, তারা সবই জানেন’
৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৪:২৬
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: আদালত স্থানান্তরের কথা না জানার কারণে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে উপস্থিত হননি জানালেও জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলায় রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী বলছেন, তারা সবই জানেন। আদালত স্থানান্তরের কথা জেনেও আদালতে হাজির হননি খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা।
আজ বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫-এর আজকের কার্যক্রম শেষে কারাগারের সামনে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী মোশাররফ হোসেন কাজল। আদালতে খালেদা জিয়ার আইনজীবীরা উপস্থিত না হওয়ায় এই মামলার পরবর্তী শুনানির জন্য আদালত আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর দিন নির্ধারণ করে দিয়েছেন বলে জানান তিনি।
আরও পড়ুন- তালাবদ্ধ আদালতের সামনে খালেদার আইনজীবীরা, দেয়ালে প্রজ্ঞাপন
মোশাররফ হোসেন কাজল বলেন, ‘আমরা গতকাল (মঙ্গলবার) খালেদা জিয়া ও তার আইনজীবী যারা আছেন, তাদের সবার সঙ্গে যোগাযোগ করেছি এবং তাদের গেজেট পাঠিয়ে দিয়েছি। এছাড়া গতকাল দুপুর ২টার সময় আমরা সংবাদপত্র ও রেডিও-টেলিভিশনের মাধ্যমেও বিষয়টি সবাইকে জানিয়েছি। আজ (বুধবার) আমরা সকাল থেকেই অপেক্ষা করছিলাম। মাননীয় আদালতসহ আমরা উপস্থিত ছিলাম। কিন্তু খালেদা জিয়ার পক্ষের যারা আইনজীবীার এই আদালতে আজ আসেননি।’
মোশাররফ হোসেন কাজল আরও বলেন, ‘তাদের (খালেদা জিয়ার আইনজীবী) এই আদালতে আসার জন্য আমরা ব্যক্তিগতভাবে আমরা যোগাযোগ করেছি এবং বিচারিক কার্যক্রমে তাদের অংশগ্রহণ করার জন্য অনুরোধ করেছি। তারা বলেছেন, তারা পরবর্তী তারিখে আসবেন। তারা বলেছেন যে আজ তারা আসবেন না। কারণ তারা (আদালত স্থানান্তরের বিষয়টি) জানেন না। তাদের না জানার বিষয়টি উহ্য। সবই তারা জানেন। জানার পরও তারা আজ বিচারের কাজে সহযোগিতা করেননি।’
আদালতে আজকের কার্যক্রমে খালেদা জিয়া উপস্থিত হয়েছিলেন জানিয়ে রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, ‘আজ খালেদা জিয়াকে দীর্ঘদিন পর আদালতে উপস্থিত করা হয়েছিল। অন্য দু’জন আসামিও আজ উপস্থিত হয়েছেন। উপস্থিত হওয়ার পর আজ আমরা বলেছি, আসামিপক্ষ যেসব সহযোগিতা চায় আমরা দুদকের পক্ষ থেকে সেসব সহায্য-সহযোগিতা আমরা করব। আমরা চাই আইনজীবীরা উপস্থিত হোন। উপস্থিত হয়ে তারা বেগম খালেদা জিয়াসহ অন্যান্য আসামি যারা আছেন তাদের পক্ষে বিচারের কার্যক্রমে অংশগ্রহণ করেন। সে কারণে অন্য যে দু’জন আসামি এসেছেন তাদের আমরা হাজিরা দিতে এবং তাদের জামিন বহাল রাখার পক্ষে আমরা সাহায্য-সহযোগিতা করেছি। মাননীয় আদালত তিন জন আসামিকে জামিন বহাল রাখার জন্য খালেদা জিয়াসহ সবাইকে দরখাস্ত দিতে বলেছেন।’
আদালতে খালেদা জিয়া কী বলেছেন, জানতে চাইলে কাজল বলেন, ‘খালেদা জিয়া আদালতে হাজির হয়েছিলেন। তিনি বিচারকের সঙ্গে কথা বলেছেন, আমার সঙ্গে কথা বলেছেন, আদালতেও কথা বলেছেন। তার বিচার বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি তার আইনজীবীর অনুপস্থিতির কারণে বিচার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না, তিনি সে বিষয়ে কথা বলেছেন। তিনি তার শারীরিক সুস্থতা-অসুস্থতা নিয়েও কথা বলেছেন। আমরা তার কথা শুনেছি।’
রাষ্ট্রপক্ষের এই আইনজীবী বলেন, বিচারিক কার্যক্রম যেন সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হতে পারে, সেজন্য বিচারক আগামী ১২ ও ১৩ সেপ্টেম্বর শুনানির জন্য নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছেন। আমরা আশা করছি, ওই দুই দিন বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারব।
এর আগে, গতকাল আইন মন্ত্রণালয় থেকে ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ স্থানান্তরের গেজেট প্রকাশ করা হয়। গেজেটে বলা হয়, বকশী বাজারের আলিয়া মাদ্রাসা প্রাঙ্গণে স্থাপিত আদালতটি জনাকীর্ণ স্থানে হওয়া সেখানে বিচারিক কার্যক্রম পরিচালনা করতে সমস্যা হয়। এ কারণে পুরাতন কেন্দ্রীয় কারাগারে এই আদালত স্থানান্তর করা হলো।
তবে আদালত স্থানান্তরের এই গেজেট পাননি কিংবা এ বিষয়ে অবহিত হননি দাবি করে খালেদা জিয়ার আইনজীবী আলিয়া মাদ্রাসা মাঠেই আজকের শুনানির জন্য অপেক্ষা করেন। পরে ওই আদালতের সামনে সকাল সোয়া ১১টার দিকে মন্ত্রণালয়ের ওই গেজেট লাগানো হয়।
https://youtu.be/FULcfxHKJHM
সারাবাংলা/এজেডকে/টিআর