Thursday 05 September 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না: সাবেক সিইসি


৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৯:১০

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: জাতীয় নির্বাচনে জোর করে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া ঠিক হবে না বলে মন্তব্য করেছেন সাবেক দুই প্রধান নির্বাচন কমিশনার ড. এ টি এম শামসুল হুদা ও বিচারপতি আব্দুর রউফ।

তারা বলছেন, এ প্রযুক্তি সম্পর্কে প্রথমে মানুষভাবে ভালোভাবে অবহিত করতে হবে। এরপর স্থানীয় পর্যায়ের নির্বাচনে ব্যবহারের মাধ্যমে ইভিএম বিষয়ে আস্থা তৈরি করতে হবে। এরপরই কেবল বৃহত্তর পরিসরে জাতীয় নির্বাচনে এই যন্ত্র ব্যবহার করা যেতে পারে। এর আগে জোর করে ইভিএম চাপিয়ে দেওয়া যাবে না।

বুধবার (৫ সেপ্টেম্বর) রাজধানী হোটেল র‌্যাডিসন ব্লুতে’তে বাংলাদেশ নির্বাচন কমিশন আয়োজিত ফোরাম অব ইলেকশন ম্যানেজমেন্ট বডিস অব সাউথ এশিয়ার (ফেমবোসা) নবম সম্মেলনে উদ্বোধনী অনুষ্ঠান শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে সাবেক এই দুই সিইসি এসব কথা বলেন।

সাবেক সিইসি শামসুল হুদা বলেন, আমাদের আমলে প্রথমে ইভিএম চালু করেছিলাম। কিন্তু পরবর্তী সময়ে তার ধারাবাহিকতা রাখা হয়নি। মাঝখানে বন্ধ করে রাখা হয়। আবার এই কমিশন চালু করেছে। আমরা যখন শুরু করেছিলাম, তখন থেকে ইভিএমের ধারাবাহিকতা রাখা হলে এখন কোনো অসুবিধা হতো না, নতুন করে বির্তক তৈরি হতো না।

সাবেক এই সিইসি বলেন, বর্তমানে ইভিএম নিয়ে যে বির্তক হচ্ছে, এটা দেখে মনে হয় আমাদের সিদ্ধান্ত সঠিক ছিল। কারণ আমরা হুট করে ইভিএম ব্যবহার করার পক্ষে ছিলাম না। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, জাতীয় নির্বাচনে পরীক্ষামূলকভাবে কয়েকটি কেন্দ্রে ইভিএম ব্যবহার করা যেতে পারে।

আরেক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইভিএমের কিছু সুবিধা আছে, কিছু অসুবিধাও আছে। যে মেশিনটা উদ্ভাবন করা হয়েছে, তাতে কী কী সমস্যা রয়েছে, এতে আরও কী কী সংযুক্ত করা যায়, তা নিয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর সঙ্গে পরামর্শ করা যেতে পারে। রাজনৈতিক দলগুলো বিশ্বাস স্থাপন করলেই কেবল ইভিএম জাতীয় নির্বাচনে ব্যবহার করা যাবে।

শামসুল হুদা বলেন, অংশগ্রহনমূলক নির্বাচনের পরিবেশ তৈরির দায়িত্ব মূলত সরকারের। সরকারই এটা করবে। এখন  তারা না করতে পারলে এটা অবশ্যই অসুবিধার কথা। তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি সংবিধান থেকে উঠে গেছে, এখন সেটা নাই। সেই পরিস্থিতিতে কী করলে জনগণ আস্থা অর্জন করতে পারে, সরকারকেই সেই পদক্ষেপ নিতে হবে।

জাতীয় নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহারের জন্য হঠাৎ আরপিও সংশোধন প্রশ্নে সাবেক সিইসি বলেন, এটা নিয়ে এখন মন্তব্য করে লাভ কী? যেকোনো উদ্যোগ নেওয়ার আগে তা যথোপযুক্ত কি না, সেটা দেখা উচিত। যারা এটা করছেন এবং যারা ক্ষমতায় আছেন, বিষয়টি তাদেরই দেখা উচিত ছিল। নির্বাচন খুবই স্পর্শকাতর বিষয়। এটা প্রতিযোগিতার বিষয়। ক্ষমতা দখলের জন্য বিভিন্ন রাজনৈতিক দল নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে। রুলস অব দ্য গেম, লেভেল প্লেইং ফিল্ড— এগুলো নিশ্চিত না করলে তো খেলা সমান হবে না। এটা নিশ্চিত করতে হবে।

ফেমবোসা কতটা সফল হয়েছে— এমন প্রশ্নের জবাবে শামসুল হুদা বলেন, ফেমবোসার উদ্দেশ্য কতটা সার্থক হয়েছে, সেটা কিন্তু বড় প্রশ্ন। নির্বাচনের কাজটা নির্বাচন কমিশনের একার কাজ নয়। এখানে অনেক পক্ষ আছে— সরকার এক পক্ষ, ভোটাররা আরেক পক্ষ, রাজনৈতিক দল আরেক পক্ষ, মিডিয়া এক পক্ষ। সব পক্ষ তাদের রুলস অব গেম অনুযায়ী তাদের খেলাটা না খেললে শুধু নির্বাচন কমিশন একা ফ্রি ফেয়ার নির্বাচন করতে পারবে না।

অন্যদিকে, সাবেক প্রধান নির্বাচন কমিশনার বিচারপতি আব্দুর রউফ সাংবাদিকের এক প্রশ্নের জবাবে বলেন, ইভিএম সম্পর্কে ৯৮ ভাগ লোক ভালোভাবে জানেন না। তাদের এ প্রযুক্তি সম্পর্কে জানাতে হবে। তারপর পর্যায়ক্রমে স্থানীয় নির্বাচনে ব্যবহার করে জাতীয় নির্বাচনে নিয়ে যেতে হবে।

তিনি বলেন, পৃথিবীর অনেক দেশে ইভিএম চালু আছে, আবার কোনো কোনো দেশ এটা বন্ধও করে দিয়েছে। আমি প্রযুক্তি ব্যবহারের বিরুদ্ধে নই। তবে প্রযুক্তির ব্যবহার জানার পর ব্যবহার করতে আগ্রহী।

 সারাবাংলা/জিএস/টিআর

ইভিএম ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন সাবেক সিইসি


বিজ্ঞাপন
সর্বশেষ
সম্পর্কিত খবর