আমাদের লক্ষ্য প্রকৃত জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠা: বি. চৌধুরী

।। স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট ।।

ঢাকা: প্রকৃত জনগণের শাসন এখনও বাংলাদেশ দেখেনি বলে মন্তব্য করেছেন বিকল্পধারা বাংলাদেশের সভাপতি ও সাবেক রাষ্ট্রপতি অধ্যাপক এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী (বি. চৌধুরী)।

তিনি বলেন, আমরা একদলীয় শাসন দেখেছি, গণতন্ত্রের নামে দলীয় শাসন দেখেছি এবং স্বৈরশাসন দেখেছি ও দেখছি। কিন্তু প্রকৃত অর্থে জনগণের শাসন এখনও দেখিনি। এই স্বৈরশাসন থেকে মুক্ত হয়ে গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠাই আমাদের লক্ষ্য।

শনিবার (৮ সেপ্টেম্বর) রাতে রাজধানীর গুলশানে অল কমিউনিটি ক্লাবে অনুষ্ঠিত বিকল্পধারার সহযোগী সংগঠন প্রজন্ম বাংলাদেশের ‘প্ল্যান-বি পজিটিভ’ শীর্ষক আলোচনা শেষে সাংবাদিকদের এসব কথা বলেন তিনি। এসময় যুক্তফ্রন্ট নেতা ও জেএসডি সভাপতি আসম আবদুর রব এবং প্রজন্ম বাংলাদেশের প্রধান মাহী বি. চৌধুরীও কথা বলেন।

এ সময় নবগঠিত রাজনৈতিক জোট যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বি. চৌধুরী বলেন, আমাদের আন্দোলন স্বাধীনতাবিরোধী ও ক্ষমতাসীন সরকারের বিরুদ্ধে। যারা গণতন্ত্র, সুন্দর বাংলাদেশ ও স্বৈরশাসনমুক্ত বাংলাদেশ দেখতে চান, আমরা তাদের পক্ষে আছি, সঙ্গে আছি। এই লক্ষ্যকে সামনে রেখেই জাতীয় ঐক্য গঠনের প্রক্রিয়া চলছে এবং এই ঐক্যের মাধ্যমেই জনগণের বিজয় অর্জিত হবে।

সাবেক এই রাষ্ট্রপতি বলেন, আমরা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য আন্দোলন করছি। এই গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য দরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও অংশগ্রহণমূলক জাতীয় নির্বাচন। যারা দেশপ্রেমিক ও গণতন্ত্রে বিশ্বাসী, তাদের সঙ্গেই আমরা আছি। আপনারা জানেন, দেশের আজ কী অবস্থা চলছে। আইনের শাসন নেই, বিচার নেই। মানুষের মৌলিক অধিকার নেই। ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়াসহ সব গণমাধ্যম সরকার নিয়ন্ত্রিত। এসব থেকে মুক্ত হতে হলে আমাদের ভারসাম্যের রাজনীতির প্রয়োজন। যেমন রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীর ক্ষমতায় ভারসাম্য আনতে হবে। জাতীয় সংসদে ক্ষমতাসীন দল থেকে স্পিকার নির্বাচিত হলে ডেপুটি স্পিকার নির্বাচিত হতে হবে বিরোধী দল থেকে। এভাবেই রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও দেশের রাজনীতিতে ভারসাম্য আনতে হবে।

জাতীয় ঐক্যের সাফল্য নিয়ে আশাবাদ জানিয়ে যুক্তফ্রন্টের চেয়ারম্যান বলেন, জনগণ একত্রিত হলে অসম্ভব বলে কিছু নেই। আমরা আশা করি, খুব শিগগিরই সেই গণঐক্যের মাধ্যমে স্বৈরশাহী বিদায় নেবে।

বদরুদ্দোজা চৌধুরী আরও বলেন, আমরা সুন্দর বাংলাদেশের স্বপ্ন বাস্তবায়ন করতে চাই। যেখানে সন্ত্রাস শব্দটির জায়গায় শান্তি শব্দটি প্রতিস্থাপিত হবে। দুর্নীতি হবে ইতিহাসের অংশ। দারিদ্র্য প্রতিস্থাপিত হবে প্রাচুর্যে। ভোটাধিকার নৈমিত্তিক স্বাভাবিক অধিকারে পরিণত হবে। মানুষ হাসতে হাসতে ভোট দিতে যাবে।

এ সময় জেএসডি সভাপতি আ স ম আবদুর রব বলেন, যুক্তফ্রন্ট যে সাত দফা প্রস্তাব দিয়েছে, যারাই এসব প্রস্তাব মেনে নিয়ে এগিয়ে আসবেন তাদেরই আমরা স্বাগত জানাব। তিনি বলেন, দেশের এই অর্বাচীন সরকার মানুষের ভোটাধিকারসহ সব অধিকার কেড়ে নিয়েছে। ন্যায় বিচার নেই, মৌলিক অধিকার নেই। এসব অধিকারসহ দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্যই আমাদের আজকের আন্দোলন।

নাগরিক ঐক্যের আহ্বায়ক মাহমুদুর রহমান মান্না বলেন, বাংলাদেশের চরম সংকটের এই সময়েও তরুণদের দেখে আজ আমরা আশাবাদী। কিছুদিন আগেও আমরা এই তরুণদের অথর্ব ও স্বার্থপর ভেবেছি। কারণ দেশ ও দেশের রাজনীতি নিয়ে তাদের সক্রিয় দেখিনি। কিন্তু সেই তরুণ-যুবক ও শিশু-কিশোররা এবার কোটা ও নিরাপদ সড়ক আন্দোলনের মাধ্যমে যা দেখিয়েছে তা পৃথিবীর ইতিহাসে বিরল।

প্রজন্ম বাংলাদেশের আহ্বায়ক মাহী বি. চৌধুরীর সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বক্তৃতা করেন বিকল্প ধারার মহাসচিব মেজর (অব.) আবদুল মান্নান, জেএসডি সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মালেক রতনসহ অন্যরা। আলোচনা শেষে উপস্থিত সুধিজনদের কাছ থেকে প্রশ্ন গ্রহণ করেন মাহী বি. চৌধুরী। এসময় ব্যারিস্টার ওমর ফারুকসহ আরও কয়েকজন তিন নেতার কাছে প্রশ্ন রাখেন।

সারাবাংলা/এইচএ/এএইচএইচ/টিআর

জেএসডি নাগরিক ঐক্য বদরুদ্দোজা চৌধুরী বি চৌধুরী বিকল্পধারা যুক্তফ্রন্ট