ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা শুরু কাল, জালিয়াতিতে জিরো টলারেন্স
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:১৫
।। কবিরুল ইসলাম, ঢাবি করেসপন্ডেন্ট।।
ঢাকা বাণিজ্য অনুষদের গ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষা দিয়ে শুক্রবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০১৮-২০১৯ শিক্ষাবর্ষে ১ম বর্ষ সম্মান শ্রেণির ভর্তি পরীক্ষা শুরু হচ্ছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ ক্যাম্পাসের বাইরের মোট ৫৪টি কেন্দ্রে বেলা ১০টা থেকে ১১টা পর্যন্ত এই পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের বাইরের কেন্দ্রগুলো হলো বিশ্ববিদ্যালয়ের লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং এন্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউ এবং বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয় স্কুল ও কলেজ। গ-ইউনিটে ১২৫০টি আসনের বিপরীতে ভর্তিচ্ছু আবেদনকারীর সংখ্যা এবার ২৬ হাজার ৯ শ ৬০জন।
এবারও ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির আশঙ্কা করছে শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। এ আশঙ্কা থেকে বুধবার ( ১২ সেপ্টেম্বর) ছাত্র ইউনিয়নের নেতাকর্মীরা গতকাল সংবাদ সম্মেলন করে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতি রোধে টাস্কফোর্স গঠনের দাবি জানিয়েছেন।
গ ইউনিটের পরীক্ষায় জালিয়াতি প্রতিরোধসহ সার্বিক বিষয়ে ব্যবসায় শিক্ষা অনুষদের ডিন অধ্যাপক শিবলী রুবাইয়াতুল ইসলাম বলেন, আমরা সমস্ত কেন্দ্র প্রধানকে সঙ্গে নিয়ে একটি মিটিং করেছি। সেখানে এই ব্যাপারে সতর্ক থাকার জন্য বলা হয়েছে। আমরা অলরেডি বডি চেক করার জন্য চারটি মেটাল ডিটেক্টর কিনেছি। বিভিন্ন কেন্দ্রে এই মেটাল ডিটেক্টটরের ব্যবহার হবে।
সার্বিক ভর্তি জালিয়াতি প্রতিরোধে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ কি ব্যবস্থা নিয়েছে? এমন প্রশ্নের উত্তরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রাব্বানী সারাবাংলাকে বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় সর্বোচ্চ সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য পরীক্ষা নেওয়ার জন্য কাজ করে। বিগত সময়ে যারা এই ধরনের অপকর্ম করে তাদের চিহ্নিত করা হয়েছে, অনেককে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয়েছে। আশা করি, ছাত্র, অভিভাবকরা পরীক্ষায় অসৎ উপায় অবলম্বন করে তাদের জীবনের ঝুঁকি নিবে না, তারা তাদের ভবিষ্যতকে অনিশ্চিত করে তুলবে না। নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ সর্বোচ্চ সতর্ক আছে উল্লেখ করে ভর্তি জালিয়াতিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান জিরো টলারেন্স বলে তিনি জালিয়াত চক্রকে সতর্ক করেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. আখতারুজ্জামানও ভর্তি জালিয়াতির বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয়ের অবস্থান ‘জিরো টলারেন্স’বলে জানান।
পরীক্ষার হলে মোবাইল ফোনসহ টেলিযোগাযোগ করা যায় এরূপ কোন ইলেক্ট্রনিক ডিভাইস/যন্ত্র সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ভ্রাম্যমাণ আদালত পরীক্ষার সময় দায়িত্ব পালন করবে। ভর্তি পরীক্ষার সিট-প্ল্যান বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইট (admission.eis.du.ac.bd) থেকে জানা যাবে।
গত বছর ১৫ সেপ্টেম্বর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গ ইউনিটের মাধ্যমে ভর্তি পরীক্ষা শুরু হয়। প্রথম পরীক্ষায় কোনো ভর্তি জালিয়াতি ধরা না পড়লেও ২২ সেপ্টেম্বর খ ইউনিটের পরীক্ষায় প্রক্সিদাতা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের ছাত্র রেজা মাহমুদসহ মোট পাঁচজন জালিয়াতিকে আটক করা হয়। ১৫ অক্টোবর বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত ক ইউনিটের পরীক্ষায় জালিয়াতির অভিযোগে ১২ জনকে আটক করা হয় যাদের ভ্রাম্যমান আদালতের মাধ্যমে ১৫দিন করে কারাদন্ড দেয়া হয়। সর্বশেষ ২০ অক্টোবর সম্মিলিত অনুষদ ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল ডিভাইসসহ ১৩জনকে আটক করা হয়। ঘ ইউনিটের ভর্তি পরীক্ষায় প্রশ্ন ফাঁসের অভিযোগ উঠে। এটা নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে তোলপাড় শুরু হয় কিন্তু কর্তৃপক্ষ সেসব অস্বীকার করে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। সেই তদন্ত এখনও শেষ হয়নি।
সারাবাংলা/কেকে/জেএএম/জেডএফ