ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড এখনও ঢাবির হলেই!
১৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২০:৪১
।। ঢাবি করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে (ঢাবি) গত বছরের ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির অন্যতম মাস্টারমাইন্ড হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া মহিউদ্দিন রানা এখনও ঢাবির হলেই অবস্থান করছেন। ছাত্রলীগের সাবেক কেন্দ্রীয় কমিটির এই সহসম্পাদক নিজেই স্বীকার করেছেন, মাঝে মাঝে তিনি ঢাবি ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলে থাকছেন। হল ও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন বলছে, এ বিষয়ে তারা কিছু জানে না।
গত বছরের সম্মিলিত ‘ঘ’ ইউনিটের পরীক্ষার আগের দিন ২০ অক্টোবর রাতে পুলিশ ঢাবি পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মহিউদ্দিন রানাকে ভর্তি জালিয়াতির ডিভাইসসহ আটক করে। ওই সময় তার সঙ্গে ফলিত রসায়ন ও কেমিকৌশল বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের আবদুল্লাহ আল মামুনকেও আটক করা হয়। ওই সময়ের ঢাবি প্রক্টর অধ্যাপক আমজাদ হোসেন সাংবাদিকদের জানান, ডিভাইসসহ আটক শিক্ষার্থীরা ছিল ভর্তি পরীক্ষায় ডিজিটাল জালিয়াতির মাস্টারমাইন্ড।
মহিউদ্দিন রানাকে আটকের পর রিমান্ডে নেওয়া হয়। পরে আদালতে ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন তিনি। বিশ্ববিদ্যালয় থেকেও বহিষ্কার করা হয় শহীদুল্লাহ হলের এই শিক্ষার্থীকে। পরে জামিনে বের হয়ে এসে মহিউদ্দিন রানা আবারও ঢাবির হলে ওঠেন।
জানা গেছে, স্থায়ী বহিষ্কার হওয়া সেই মহিউদ্দিন রানা এখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদুল্লাহ হলের প্রধান ভবনের ২২৪ নম্বর রুমে অবস্থান করছেন। এ বিষয়ে সারাবাংলার পক্ষ থেকে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ‘মাঝে মাঝে থাকি।’ এর বেশি আর কিছু বলতে রাজি হননি তিনি।
সূত্র জানায়, শহীদুল্লাহ হলের যে ২২৪ নম্বর রুমে রানা অবস্থান করছেন, সেটি ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় প্রচার বিষয়ক উপসম্পাদক আব্দুল ফাত্তাহ তুহিনের রুম। এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি সারাবাংলাকে বলেন, ‘আমি হলে রাখছি— বিষয়টি এমন না। ও আমার সঙ্গে রজনীতি করত। তাই মাঝে মাঝে আমার সঙ্গে থাকে। কোনো সমস্যা?’
বিশ্ববিদ্যালয় থেকে স্থায়ী বহিষ্কৃত এবং জালিয়াত চক্রের সদস্য হিসেবে আদালতে স্বীকারোক্তি দেওয়া একজনকে কিভাবে হলে রাখছেন— এমন প্রশ্নের উত্তরে তুহিন বলেন, ‘আমার সঙ্গে তার রাজনৈতিক সম্পর্ক ছিল। সে কারণেই আমার কাছে এলে চলে যেতে বলতে পারি না। এর বাইরে কিছু নয়।’
আত্মস্বীকৃত একজন জালিয়াতকে হলে রাখা হচ্ছে— সে বিষয়ে জানতে চাইলে ছাত্রলীগ ঢাবি শাখার সভাপতি সনজিত চন্দ্র দাস সারাবাংলাকে বলেন, ‘তাকে (রানা) হল থেকে বের করে দেওয়া হয়েছিল। আবার কারা যেন তাকে হলে তুলেছে।’ তাকে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলে জানান তিনি।
এ বিষয়ে ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ হলের প্রাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সৈয়দ হুমায়ুন আখতার সারাবাংলাকে বলেন, ‘এ বিষয়ে আমার কাছে তথ্য নেই।’ বিষয়টি তিনি খতিয়ে দেখবেন বলে জানান।
জানতে চাইলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক গোলাম রব্বানী বলেন, ‘হল প্রশাসনের সঙ্গে কথা বলে আমরা তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।’
আরও পড়ুন-
ঢাবি ভর্তি পরীক্ষা শুরু কাল, জালিয়াতিতে জিরো টলারেন্স
সারাবাংলা/কেকে/টিআর