এ মাসেই শেষ হচ্ছে বীর প্রতীক গাজী সেতুর কাজ
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৩:৫১
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
নারায়ণগঞ্জ : বীর প্রতীক গাজী সেতুর নির্মাণ কাজ শেষ হচ্ছে চলতি মাসেই। এই সেতুটির কারণে বদলে যাবে পুরো রূপগঞ্জের চিত্র।
স্থানীয়রা মনে করছেন, সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হলে শীতলক্ষ্যার দুই পাড়ের মুড়াপাড়া ও কায়েতপাড়ার মানুষের মধ্যে ভ্রাতৃত্বের বন্ধন আরো দৃঢ় হবে। এছাড়া ব্যবসা, বাণিজ্য, শিল্প-কারখানার মালামাল পরিবহনে সময় ও ব্যয় দুটোই কমে আসবে।
আরও পড়ুন- ভুলতা ফ্লাইওভারের একাংশের উদ্বোধন অক্টোবরে
সেতুটি নির্মাণের উদ্যোক্তা নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী বীর প্রতীক। স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন (এলজিইডি) মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রায় ৭৪ কোটি টাকা ব্যয়ে সেতুটির নির্মাণ কাজ শুরু হয় ২০১২ সালের জুলাইতে। তখন নারায়ণগঞ্জ-১ আসনের সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজী শীতলক্ষ্যা নদীতে সেতুটির নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। নির্মাণ কাজ চলতি বছরের ৩১ ডিসেম্বর শেষ হওয়ার কথা থাকলেও এরই মধ্যে শেষ হয়েছে নির্মাণ কাজ। ফলে নির্ধারিত সময়ের তিন মাস আগেই জনসাধারণের চলাচলের জন্য খুলে দেওয়া হবে সেতুটি।
ঢাকা থেকে সিলেট এবং চট্টগ্রাম যাওয়ার জন্য কয়েকটি জেলার যাত্রীরা যাত্রীরা মুড়াপাড়া ও রূপগঞ্জ সদর এলাকার শীতলক্ষ্যা নদীর উপর দিয়ে চলাচল করা ফেরি ব্যবহার করেন। ফলে এই পথে যানজটের কবলে পড়তে হয় তাদের। বীর প্রতীক গাজী সেতু সেই সমস্যার সমাধান করবে। এছাড়া সেতুটি নির্মাণের ফলে সিলেট, ব্রাহ্মণবাড়িয়া, কিশোরগঞ্জ ও নরসিংদী জেলার দূরত্ব ঢাকার সঙ্গে ১০ কিলোমিটার কমবে। একইসঙ্গে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর ও পূর্বাচল উপশহরের সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগ স্থাপিত হবে। এতে করে ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের উপর চাপ কমবে এবং এলাকার আর্থ সামাজিক অবস্থার উন্নতি ঘটবে। এমনকি রাজধানীর সঙ্গে রূপগঞ্জের দূরত্ব কমে যাবার কারণে নতুন নতুন শিল্পকারখানা গড়ে উঠবে বলেও আশা করা হচ্ছে।
বীর প্রতীক গাজি সেতু প্রসঙ্গে স্থানীয় বাসিন্দা মহসিন হোসেন সারাবাংলাকে বলেন, ‘স্থানীয় সংসদ সদস্য গোলাম দস্তগীর গাজীর একান্ত প্রচেষ্টায় এই সেতুটি নির্মাণ হয়েছে। এই সেতুটি হওয়ায় আমাদের অনেক উপকার হবে। রাজধানীর সঙ্গে যাতায়াত আরও সহজ হবে। অনেক রাস্তাঘাট হয়েছে আমাদের এলাকায়। আমরা দোয়া করি গাজী এবারও এমপি হবেন এবং রূপগঞ্জের উন্নয়নে কাজ করে যাবেন।’
এ বিষয়ে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) রূপগঞ্জ উপজেলার নির্বাহী প্রকৌশলী এহসানুল হক সারাবাংলাকে জানান, গাজী সেতুটির নির্মাণ কাজ ৯৭ শতাংশ শেষ হয়েছে। এখন শুধু ভূমি মন্ত্রণালয় থেকে কিছু অনুমোদনের বিষয় রয়েছে সেগুলো আগামী সাত থেকে ১০ দিনের মধ্যে হয়ে যাবে। এরপর সেতুটি জনসাধারণের চলাচলের জন্য উন্মুক্ত করে দেওয়া হবে। তবে সেতুটির মূল কাজ আরও চারমাস আগেই শেষ হয়েছে বলে জানান তিনি। তবে ঢাকার পার্শ্ববর্তী এলাকার ভূমির অনুমোদন প্রক্রিয়া জটিল হওয়ায় কাজ শতভাগ শেষ করতে কিছুটা সময় লাগছে।
গোলাম দস্তগীর গাজীর প্রচেষ্টায় এই সেতুটি নির্মাণ হয়েছে জানিয়ে ইহসানুল হক বলেন, এছাড়া রূপগঞ্জের বিভিন্ন রাস্তা, কালভার্টও তিনি করেছেন। শীতলক্ষ্যা নদীর ওপরে আরও তিনটি ব্রিজ আছে, সেগুলো হচ্ছে কাঁচপুর ব্রিজ, কাঞ্চন ব্রিজ ও সুলতানা কামাল ব্রিজ। এই অঞ্চলে বেশ বড় একটি জনগোষ্ঠীর বাস। রয়েছে কলকারখানাও। এখন এই সেতুটি হওয়ায় অন্য ব্রিজগুলোর ওপর চাপ কম পড়বে। একইসঙ্গে রূপগঞ্জের মানুষের চলাচলের জন্য গাজী সেতু গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে এবং পণ্য দ্রুত ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহে সহজীকরণ হবে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।
গাজী সেতুটি নির্মাণের কারণে রূপগঞ্জের মানুষের ভোগান্তি হ্রাস পাবে জানিয়ে রূপগঞ্জ উপজেলার মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান ফেরদৌসী আলম নীলা সারাবাংলাকে বলেন,এই সেতুটি নির্মাণে পুরোটাই অবদান এমপি গাজীর। তিনি এই সেতুটি নির্মাণের জন্য অনেক কষ্ট করেছেন। দিনের পর দিন মন্ত্রণালয়ে গিয়েছেন। সেতুটি হওয়ায় এখন রূপগঞ্জের মানুষের রাজধানীর সঙ্গে যোগাযোগ আরও বাড়বে। এছাড়া সেতুটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলেও তিনি জানান। তবে উদ্বোধনের দিন এখনো ঠিক হয়নি।
সারাবাংলা/এসজে/এসএমএন