জলবায়ু ফান্ড পেতে জবাবদিহিতার সঙ্গে দক্ষতা জরুরি: টিআইবি
১৮ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ২২:৫৭
।। সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ‘জলবায়ু ফান্ডের টাকা পেতে স্বচ্ছতা ও জবাবদিহিতার সঙ্গে মানব সম্পদের দক্ষতা অর্জনও জরুরি। এ দক্ষতার অভাবে আমরা গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের খুব কম অংশ আনতে পারি।’ বলে জানিয়েছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
মঙ্গলবার (১৮ সেপ্টেম্বর) রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে অনুষ্ঠিত ‘ঢাকা ইন্টিগ্রিটি ডায়লগ-৩’ অনুষ্ঠানে টিআইবির নির্বাহী পরিচালক এসব কথা বলেন। জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশগুলোর ক্ষতিপূরণে গঠিত গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ডের সাম্যতা ও স্বচ্ছতা নিয়ে দিনব্যাপী এই সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
ইফতেখারুজ্জামান আরও বলেন, আমাদের স্বীকার করার কোনো উপায় নেই যে জলবায়ু ফান্ডের অর্থায়নে যেসব প্রকল্প হয়েছে তাতে স্বচ্ছতার ঘাটতি আছে। আজ দিনব্যাপী আলোচনায় যে বিষয়টা সামনে এসেছে তা হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশগুলোর ২০০৮ সালে কোপেনহেগেনে প্রতি বছর ১০০ বিলিয়ন ডলার ক্ষতিপূরণ দেওয়ার কথা ছিল। বাস্তবে ২০১৮ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ মাত্র ১০ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার পেয়েছে অথচ জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশ অন্যতম ক্ষতিগ্রস্ত দেশ।
এ সময় জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যার সঙ্গে খাপ খাওয়াতে বাংলাদেশের নিজস্ব অর্থায়নে তৈরি ফান্ডের প্রশংসা করে তিনি বলেন, আমাদের নিজেদের ফান্ড আছে যা খুব প্রশংসনীয়, তবে অন্যান্য ক্ষতিপূরণের অর্থ আনার বিষয়ে আমাদের সচেষ্ট থাকতে হবে।
জলবায়ু ফান্ডের টাকা দেওয়ার বিষয়ে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোর নীতিমালার সমালোচনা করে তিনি বলেন, এই অর্থ আমাদের অধিকার, এগুলো কোনো ঋণ, অনুদান বা অন্য কোনো শর্ত জুড়ে দেওয়া যাবে না। আমরা তাদের কাজে ক্ষতিগ্রস্থ, এখন আমাদের এই টাকা দিতে হবে।
অনুষ্ঠানে প্রথান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন পরিবেশ, বন ও জলুবায়ু পরিবর্তন বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম এমপি। তিনি বলেন, আমরা যখন জলবায়ু পরিবর্তন, বৈষ্ণিক উষ্ণতা, সমুদ্রপৃষ্ঠের উচ্চতা বাড়া নিয়ে কথা বলি তখন এটা কখনও আলোচনায় আসে না যে আমাদের দেশে তিনটি বড় নদী রয়েছে যারা হিমালয়ের থেকে এসেছে। হিমালয়ের বরফ গলে গেলে এই পানি আমাদের ওপর দিয়ে যাবে। পৃথিবীতে খুব কম দেশই এরকম দুই দেশ থেকে বিপদে আছে।
তবে এমন না আমরা এই সমস্যা মোকাবেলা করতে পারব না। এ সময় তিনি নেদারল্যান্ড-স এর উদাহরণ দিয়ে বলেন, সঠিক ব্যবস্থাপনা থাকলে প্রযুক্তি ব্যবহার করে এই সমস্যা সমাধান করা সম্ভব কিন্তু এর জন্য আমাদের অর্থ লাগবে।
গ্রিন ক্লাইমেট ফান্ড বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, আমাদের নিজস্ব অর্থায়নে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের সমস্যা অনেকটাই মোকাবেলা করছি। তবে তার মানে এই নয় আমরা আমাদের অধিকারের লড়াই থামিয়ে দেব।
জলবায়ু ফান্ডের টাকার সচ্ছতা অর্জনে মন্ত্রী সামাজিক ও রাজনোইরিক দক্ষতা বৃদ্ধিতে জোর দেন। তিনি বলেন, জনগণ, স্থানীয় নেতৃবৃন্দ ও প্রতিনিধিদের জানতে হবে এ প্রকল্পগুলোতে কী হচ্ছে তাহলে তারা এ ক্ষেত্রে দুর্নীতি নিরসনে ভালো ভূমিকা রাখতে পারবে।
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন টিআইবির নির্বাহী ব্যবস্থাপনা পরিষদের উপদেষ্টা সুমাইয়া খায়ের।
সারাবাংলা/এমএ/এমআই