Friday 22 Nov 2024
Sarabangla | Breaking News | Sports | Entertainment

মন্দিরে রং তুলির উৎসব


২৩ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১২:০৩

।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।

বাগেরহাট: বাগেরহাটের হাকিমপুরে শিকদার বাড়ির দুর্গা প্রতিমা তৈরির কাজ শেষের পথে। চলছে রং তুলি আর নানা রংয়ে সাজসজ্জার কাজ। এ মন্দিরে এবার প্রতিমা তৈরি হয়েছে ৭০১টি।

প্রতিবছরের ন্যায় এ মন্দিরে প্রতিমা আর সাজসজ্জায় এটি হবে উপ-মহাদেশের সর্ববৃহৎ এবং সর্বশ্রেষ্ঠ বলে দাবি আয়োজকদের।

সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর আর কলি যুগের বিভিন্ন অবতারের কাহিনি নিয়ে এবারও মন্দিরকে সাজানো হয়েছে। গত বৈশাখ থেকে খুলনার কয়রা উপজেলার হাতিয়াডাঙ্গা গ্রামের বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় এর নেতৃত্বে ১৫ জন ভাস্কর দিনরাত অক্লান্ত পরিশ্রম করে প্রতিমা তৈরির কাজ শুরু করেছেন।

অধিকাংশ প্রতিমায় রঙয়ের কাজ শেষ হলেও মূল প্রতিমা অর্থাৎ মা দুর্গার রংয়ের কাজ এখনও শুরু হয়নি। চোখ ধাঁধানো সব প্রতিমা আর রং-বেরঙের সুসজ্জিত করে মন্দিরকে মুখরিত করে তোলা হচ্ছে।

প্রতিমা তৈরির কাজে নিয়োজিত প্রধান ভাস্কর বিজয় কৃষ্ণ বাছাড় জানান, পবিত্র ধর্মগ্রন্থ রামায়ণ ও মহাভারতের চারযুগের দেবদেবীর নানা কাহিনি অবলম্বনে হিন্দু ধর্মের হাজার বছরের পুরাতন পৌরাণিক কাহিনীকে প্রাধান্য দিয়ে তা ফুটিয়ে তোলা হয়েছে মূর্তি দিয়ে। কলিকাতার সীতারাম এর গীতা প্রেস এর বই থেকে সংগৃহীত সত্য, ত্রেতা, দ্বাপর আর কলি যুগের বিভিন্ন অবতারের লীলা কাহিনী নিয়ে এবারও প্রতিমাগুলো তৈরি করা হয়েছে।

তিনি বলেন, ‘এখানে রয়েছে বিশ্বামিত্রের সঙ্গে শ্রীরাম-লন, তাড়কা-সংহার, বিশ্বামিত্রের যজ্ঞ-রা, অহলা উদ্ধার, পূষ্পে বটিকাতে শ্রীরাম-লন, রঙ্গভূমিতে দুই রাজ কুমার, স্বয়ংবর সভায় লণের রোধ, ধনুক ভঙ্গ, চার কুমারের বিবাহ, পিতার বাক্য পালন, সীতার উপদেশ-বন গমন, শ্রীকৃষ্ণের ক্রুক্ষেত্রের যুদ্ধ কাহিনী, মাঝির ভাগ্য ও চিত্রকুটের শোভা সহ নানান কাহিনী নিয়ে বিশাল মন্দিরটিকে সুসজ্জিত করা হচ্ছে।’

বিজ্ঞাপন

সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, মনু-শতরুপাকে বর দান, দেবতাদের প্রার্থনা, শ্রীরামাবতার, সচ্চিদানন্দের দ্যোতিষী, দশরথের ভাগ্য, ধনু বিদ্যার অভ্যাস, সখ্যদের সঙ্গে শিকার সহ সতেরোটি বাল্য লীলার কাহিনি রূপায়িত করা হয়েছে।

মন্দির কমিটির কয়েকজন সদস্য জানান, মন্দিরের ভেতর বিভিন্ন দেব-দেবীর ৭০০টি প্রতিমা তৈরি করা হলেও বাইরে অর্থাৎ পুকুর পাড়ে ৪০ হাত লম্বা বিশাল আকৃতির লক্ষী নারায়ণের প্রতিমা তৈরি করা হবে। যে গুলো শুধুমাত্র রং সোলা আর লাইটিং দিয়েই তৈরি করা হচ্ছে। এর সামনে থাকছে আকর্ষণীয় ঝরনা ধারা।

শিকদার বাড়ি পূজা মন্দির কমিটির সভাপতি ও প্রধান পৃষ্ঠপোষক ডা. দুলাল কৃষ্ণ শিকদার বলেন, ‘২০১০ সাল থেকে তারা এ মন্দিরে শারদীয় দুর্গা পূজা শুরু করেন। তারপর ধারাবাহিকভাবে ৮ম বার অন্যান্য বছরের তুলনায় জাঁকজমকপূর্ণভাবে দুর্গা পূজা অনুষ্ঠিত হবে। প্রতিবছরের ন্যায় এ বছরও ধর্মানুরাগীদের উপচেপড়া ভিড় পড়বে বলে আশা করছি।’

মন্দিরের অন্যতম পৃষ্ঠপোষক লিটন শিকদার বলেন, ‘ধর্মানুরাগীদের সন্তুষ্টির জন্য আমরা এ ধরনের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি অন্যান্য বছরের মতো এবার শান্তিপূর্ণভাবে দুর্গা উৎসব উদযাপন করা হবে।’

সারাবাংলা/একে

বাগেরহাট মন্দির শারদীয় দুর্গা পূজা

বিজ্ঞাপন

আরো

সম্পর্কিত খবর