শ্রীমঙ্গলে পৌরসভার ভাগাড় স্থানান্তরের দাবিতে বিক্ষোভ
৩০ সেপ্টেম্বর ২০১৮ ১৬:০১
।। ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট।।
মৌলভীবাজার: মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনে ময়লার ভাগাড় করেছে পৌরসভা। এ নিয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থী ও স্থানীয়রা দীর্ঘদিন ধরেই প্রতিবাদ জানিয়ে এলেও তাতে পদক্ষেপ নেয়নি কর্তৃপক্ষ। ১ অক্টোবর থেকে ময়লা ফেলা বন্ধ না করলে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান অনিদিষ্ট কালের জন্য ক্লাস বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা।
তবে বিকল্প স্থান না পাওয়ায় শিগগিরই এ ময়লার স্তূপ সরানো যাচ্ছে না বলে জানিয়েছেন পৌরসভার মেয়র মহসিন মিয়া মধু।
রোববার (৩০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজের সামনে থেকে বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা বিক্ষোভ নিয়ে শ্রীমঙ্গল চৌমুহনা চত্বরে অবস্থান নেয়। এসময় ঢাকা সিলেট আঞ্চলিক মহাসড়কের যানবাহনগুলো আটকা পড়ে।
বিক্ষোভ সমাবেশে বক্তব্য দেন, শ্রীমঙ্গল কলেজ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক উজ্জল কান্তি দাশ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাবিবুর রহমান, সরকারি কলেজের শিক্ষার্থী সাবিহা আক্তারসহ অন্যান্যরা। পরে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সামনে অবস্থান নিয়ে আবার সরকারি কলেজে ফিরে যায়।
চৌমুহনা চত্বরে বিক্ষোভ সমাবেশে শিক্ষার্থীরা বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সামনের এই ময়লা আর্বজনার প্রচণ্ড দুর্গন্ধে প্রতিদিন অসুস্থ্য হচ্ছে কোমলমতী শিক্ষার্থীসহ পথচারী ও এলাকাবাসী। আর এই দুর্গন্ধের কারণে শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাস করতে পারছে না। বিঘ্নিত হচ্ছে তাদের লেখাপড়া।
শিক্ষার্থীরা আরও বলেন, ‘গত ২৩ সেপ্টেম্বর শ্রীমঙ্গল পৌরসভার সামনে মানববন্ধন করে পৌর কর্তৃপক্ষের কাছে স্বারকলিপি দেওয়া হয়েছে। তখন ময়লার ভাগাড় সরানোর জন্য পৌরকর্তৃপক্ষকে ১ অক্টোবর পর্যন্ত সময় বেধে দেওয়া হয়েছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ এখনও এ বিষয়ে কোন পদক্ষেপ নেয়নি।
বিক্ষোভ সমাবেশে অভিভাবকরা বলেন, শিক্ষার্থীদের সাথে সাথে দুর্ভোগের শিকার হচ্ছেন অবিভাবকসহ পথচারীরাও। শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সামনে যাওয়া আসার সময় ময়লার গন্ধে নাক চেপে যেতে হয়। ময়লার গন্ধে ছোট ছোট বাচ্চারা প্রায়ই অসুস্থ্য হয়ে যায়। সামান্য বৃষ্টিপাত হলেই ময়লার দুর্গন্ধ চর্তুদিকে ছাড়িয়ে যায় বলে অভিযোগ করেন তারা।
সরেজমিনে দেখা যায়, শ্রীমঙ্গল কলেজ সড়কের পাশের ময়ালার ভাগারটির অবস্থান এর এক পাশে শ্রীমঙ্গল সরকারি কলেজ ও দি বাড্স রেসিডেন্সিয়াল মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ আরেক পাশে গাউছিয়া শফিকিয়া সুন্নিয়া মাদ্রাসা। ময়লার ভাগাড়ের সামনে থেকে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোর দূরত্ব ৫০ হাতের ভিতর হবে। পৌরসভার এক একর জায়গা নিয়ে এই ভাগাড়ে শহরের সব ময়লা-আর্বজনা পৌরসভার পরিছন্ন কর্মীরা পৌরসভার গাড়ি দিয়ে প্রতিনিয়ত ফেলছে। আর প্রতিদিন এখানে ময়লা-আর্বজনা ফেলার কারণে এই জায়গায় গড়ে উঠেছে বিশাল আর্বজনার স্তুপ।
এ বিষয়ে শ্রীমঙ্গল পৌরসভার মেয়র মহসিন মিয়া মধু জানান, ময়লার ভাগাড় স্থানান্তরের জন্য ভাড়াউড়া মৌজায় ১৫টি দাগে ২ দশমিক ৪৪ একর ভূমি অধিগ্রহণ করা হয়েছে। ভূমির মূল্য বাবত এক কোটি ৫৯ লাখ টাকা পৌরসভা পরিশোধ করেছে। ওখানে প্রসেসিংপ্লান্টসহ আধুনিক বর্জ্য ব্যবস্থাপনার কাজ শুরু করা হয়েছিল। কিন্তু এলাকার কিছু মানুষ হাইকোর্টে মামলা করে কাজটি বন্ধ করে দিয়েছে। এ জন্য ময়লার ভাগাড় অপসারণে জটিলতা দেখা দিয়েছে।
সারাবাংলা/এমএইচ