ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন: ৬ অক্টোবর সাংবাদিকদের বিক্ষোভ
১ অক্টোবর ২০১৮ ১৭:০২
।। স্টাফ করেসপন্ডেন্ট ।।
ঢাকা: ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে প্রতীকী অনশন ভেঙেছেন সাংবাদিকরা। এই আইন বাতিলের দাবিতে আগামী ৬ অক্টোবর জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বিক্ষোভ কর্মসূচির ঘোষণা দেন তারা। পাশাপাশি সারাদেশের সব সাংবাদিক সংগঠনকে তারা এই বিক্ষোভ কর্মসূচি পালনের আহ্বান জানান।
সোমবার (১ অক্টোবর) ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন বাতিলের দাবিতে জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে সকাল সাড়ে ১১টার দিকে প্রতীকী অনশন শুরু করেন বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়ন (বিএফইউজে) ও ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের (ডিইউজে) নেতাসহ বিভিন্ন গণমাধ্যমে কর্মরত সাংবাদিকরা। পরে দুপুর আড়াইটার দিকে অনুষ্ঠানের প্রধান অতিথি গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের প্রতিষ্ঠাতা ড. জাফর উল্যাহ চৌধুরী পানি পান করিয়ে সাংবাদিকদের প্রতিকী অনশন ভাঙেন।
অনশনে সভাপতি ও বিএফইউজের সাবেক সভাপতি রুহুল আমিন গাজী বলেন, ডিজিটাল আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলন চলছে, চলবে। ডিজিটাল আইনের অপব্যবহার সম্পর্কে সম্পাদক পরিষদ পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে পত্রিকায় তুলে ধরেছেন। এজন্য তাদের কৃতজ্ঞতা জানাই। কিন্তু এগুলোতে সরকার কোনো কর্ণপাত করেনি।
তিনি আরও বলেন, সেদিন তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু সবাইকে তথ্য মন্ত্রণালয়ে ডেকেছেন। যারা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের বিরুদ্ধে কর্মসূচি ঘোষণা দিয়েছেন তাদেরও ডেকেছেন, যেন কর্মসূচি পালিত না হয়। ইনু সাহেব, আপনি একদিন না হয় কর্মসূচি স্থগিত করেছেন। কিন্তু বাংলাদেশের ১৮ কোটি মানুষ এ আইন প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত যত সরকার আসুক, সবার বিরুদ্ধে আমরা এ আন্দোলন চালিয়ে যাব। এ আইন বাতিল না হওয়া পর্যন্ত আমাদের কর্মসূচি চলবে। কারণ সংবিধানের ১০২ অনুচ্ছেদে জনগণের যে অধিকারের কথা বলা হয়েছে, সেটি এ আইনে সম্পূর্ণ বিপরীত।
রুহুল আমিন বলেন, এ আইন মুক্তিযদ্ধের চেতনার সম্পূর্ণ পরিপন্থি। এ আইনের পক্ষে যারা কথা বলবে, আমি মনে করি তারাই রাষ্ট্রোদ্রোহী, তারাই রাজাকার, তারাই পাকিস্তানপন্থি। যারা এ আইনের বিরুদ্ধে থাকবে, তারাই এ দেশের স্বাধীনতার পক্ষের মানুষ।
ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন থাকলে সাংবাদিকতা করা যাবে না উল্লেখ করে বিএফইউজে’র সাবেক এই সভাপতি বলেন, সাংবাদিকতা মানেই অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা। সে অনুসন্ধানী সাংবাদিকতা যদি করতে না পারেন, তাহলে পত্রিকা, টিভি কিভাবে চলবে? আমরা কি শুধু পিআইবি’র হ্যান্ড আউট ছাপাব? না, এর জন্য আমরা সাংবাদিক হই না। তাই এ আইনে বাতিলের দাবিতে আগামী ৬ অক্টোবর প্রেস ক্লাবে আমরা বিক্ষোভ করব। একইসঙ্গে সারাদেশেও এ বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করবে সাংবাদিক সংগঠনগুলো।
সভায় প্রধান অতিথি জাফর উল্যাহ চৌধুরী বলেন, বিশ্বব্যাংক বলছে, তারা পদ্মা সেতু ৭ হাজার কোটি টাকা দিয়ে করবে। কিন্তু প্রধানমন্ত্রী তা করলেন ৩৮ হাজার কোটি টাকা দিয়ে। তাহলে এটার বিষয়ে সাংবাদিকরা কথা বলতে পারবে না? কথা যেন বলতে না পারে, সেজন্য তাদের মুখ বন্ধ করতে এ আইন। কিন্তু জনগণ এই আইন মেনে নেবে না।
সারাবাংলা/এসএইচ/টিআর